আজ মহালয়া (Mahalaya), পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষের সূচনার দিন। আজও এইদিনে প্রতিটা বাঙালি বাড়িতেই ভোর বেলায় শুনতে পাওয়া যায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের (Birendra Krishna Bhadra) কণ্ঠে স্তোত্রপাঠ। এককথায় রেডিওতে ভোরের এই মহালয়া শুনেই শুরু হয় বাঙালির দুর্গাপুজোর (Durgapuja)। এবারে এই প্রথার অন্যথা হয়নি। হ্যাঁ আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে টিভিতে নানা অনুষ্ঠান হয়েছে ঠিকই, তবে ভোরের আলো ফুটতেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে শুনেছেন আপামর বাঙালি।
জানলে অবাক হবেন বীরেন্দ্রেকৃষ্ণ ভদ্রের কাছে মাথা নত করেছিলেন স্বয়ং উত্তম কুমারও। চরম জনপ্রিয়তায় ‘মহানায়ক’ হলেও বাঙালির মন জিততে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। অতীতের এই কাহিনী অনেকের কাছেই অজানা! ঠিকই কি হয়েছিল? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
সালটা ছিল ১৯৭৬, সেই সময় বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে চারিদিকে একটাই নাম উত্তম কুমার। খ্যাতি যখন মধ্যগগনে তখন বিশিষ্ট রেডিও চ্যানেল আকাশবাণীর তরফ থেকে প্রস্তাব আসে মহালয়ার দিনে চন্ডীপাঠের। যেটা গ্রহণ করতেই, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের বদলে মহালয়ার সকালে গোটা ভারতবর্ষে শোনা গিয়েছিল উত্তম কুমারের কন্ঠে চন্ডীপাঠ ‘দেবীং দুর্গতিহারিণীম’।
‘মহিষাসুরমর্দিনী’ এর বদলে নতুন এই সম্প্রচারকে মোটেই ভালোভাবে গ্রহণ করেনি বাঙালিরা। শুরু হয় বিক্ষোভ, আকাশবাণী ভবনের সামনে জড়ো নাম হাজারো মানুষ, অজস্র ফোন আসতে থাকে অফিসে। সকলের একটাই দাবি, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার করা হোক।
আরও পড়ুনঃ মহালয়ায় নতুন চমক, দাদাগিরিতে ব়্যাম্প ওয়াক করছেন সৌরভ গাঙ্গুলি, ফাঁস হতেই ভাইরাল ভিডিও
এরপর বিক্ষোভের মুখে বাধ্য হয়ে আবারও সম্প্রচারিত হয় মহালয়া, যেখানে চন্ডীপাঠ করেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। কিন্তু কাহিনী এখানেই শেষ নয়। জনতার থেকে এমন প্রতিক্রিয়ার পর জানা যায় শুরুতেই রাজি হননি উত্তম কুমার মহালয়ার দিন চন্ডিপাঠের জন্য।
আকাশবাণীর তরফ থেকেই বারেবারে প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রথমদিকে ভয় পেলেও শেষে জোরাজুরিতে রাজি হন। সেবছর সংগীত পরিচালনা করেছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু বাঙালির আবেগ যে জড়িয়েছিল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের সাথে। সেই থেকে আজও মহালয়ার দিনে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শুনেই সূচনা হয়ে চলেছে দেবীপক্ষের।