Weekend Trip Plan near Kolkata : সপ্তাহান্ত (Weekend) এলেই মন ঘুরু ঘুরু করতে শুরু করে দেয়। আর সত্যি বলতে, এই টিপ টিপ বৃষ্টির মরসুমে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু এক বা দু’দিনের ছুটিতে কোথায় আর যাওয়া যায়? সেই জন্য বেশিদূর না গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন রাজ্যেরই কোনও একটি শহর থেকে। আপনার যদি ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে চলে যেতে পারেন বর্ধমান (Bardhaman)। যাতায়াত, ঘোরা মিলিয়ে হাতে দেড়-দু’দিন থাকলেই হবে।
বর্ধমান এমন একটি শহর, যার গুরুত্ব বাংলার (West Bengal) ইতিহাসে অনেকখানি। সেই ইতিহাসকে ভরসা করেই করে ফেলুন একটি ছোট্ট ট্রিপ। কারণ আজও বাংলার অনেক অজানা ইতিহাসের নিদর্শন নিয়ে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই শহর। ‘বাংলার ধানের গোলা’ নামে খ্যাত বর্ধমানে কী কী দেখার মতো স্থান আছে, তা তুলে ধরা হল আজকের প্রতিবেদনে।
কার্জন গেট (Curzon Gate) : বর্ধমান শহরের প্রবেশদ্বার বলা হয় এই কার্জন গেটকে। ১৯০৩ সালে রাজা বিজয় চাঁদ মহাতাবের রাজ্যাভিষেক উপলক্ষ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ভাইসরয় লর্ড কার্জনের নামানুসারে এই গেটের নাম রাখা হয় কার্জন গেট। শোনা যায়, মুম্বইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার অনুকরণে তৈরি এই কার্জন গেট তৈরির জন্য সুদূর ইতালি থেকে স্থপতিরা এসেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ আর নয় দীঘা-পুরী! রইল বর্ষায় নামমাত্র খরচে ঘোরার মত ৫ অসাধারণ জায়গার হদিশ
সর্বমঙ্গলা মন্দির (Sarbamangala Mandir) : বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন। ১৭০২ সালে মহারাজ কীর্তিচাঁদ এই মন্দির তৈরি করেছিলেন। ডিএ সরকার রোডে অবস্থিত এই মন্দিরের দেবী মূর্তি প্রায় ১০০০ বছর পুরনো। অনেকে হয়তো জানেন না, বর্ধমানের এই সর্বমঙ্গলা মন্দির অবিভক্ত বাংলার প্রথম নবরত্ন মন্দির।
কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির (Kankaleshwari Kali Mandir) : বর্ধমানের কাঞ্চন নগরে অবস্থিত কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির। শোনা যায়, ১৭০০ সালে দামোদর নদের পাশে এই মন্দিরের কালী মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল। এই মন্দিরে ৯টি শৃঙ্গ রয়েছে। সেই জন্য নবরত্ন মন্দির নামেই খ্যাত কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির।
আরও পড়ুনঃ সকালে বেরিয়ে রাতে বাড়ি, রইল রবিবারে ঘোরার মত তিলোত্তমা কলকাতার সেরা ৫ জায়গার হদিশ
পীর বাহারামের মাজার (Pir Baharam Mazar) : তুর্কি বংশোদ্ভূত জনপ্রিয় ফকির এবং কবি বাহারাম মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের শাসনকালে ভারতে এসেছিলেন। সেই সময় তিনি আগ্রা থেকে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিলেন। তাঁর শেষ জীবন কেটেছে বাংলার বর্ধমানে। শোনা যায়, তৃষ্ণার্তদের জল দান করে পুণ্য অর্জন করতেন তিনি। সেই বাহারামের মৃত্যুর পর বর্ধমান শহরেই তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল। সেই সমাধিস্থলই এখন পীর বাহারামের মাজার নামে খ্যাত।
গোলাপবাগ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস (Golapbag) : বর্ধমানের গোলাপবাগের কথাও অনেকেই শুনেছেন। ১৮৮৩ সালে রাজা বিজয় চাঁদ মাহাতাবের প্রতিষ্ঠিত প্রাণীবিদ্যা এবং বোটানিক্যাল সম্পর্কিত বাগান এটি। এখন এই গোলাপবাগ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অন্তর্গত।
তবে শুধু উপরিউক্ত এই পাঁচটি স্থানই নয়। বর্ধমান শহরে দেখার মতো আরও অনেক জায়গা রয়েছে। এখানে গেলে ১০৮ শিব মন্দির (নবাবহাট) এবং শের আফগানের সমাধি থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। বাংলার ইতিহাসের অনেক অজানা কাহিনী জানার পাশাপাশি আপনার মনও দেখবেন ভালো হয়ে গিয়েছে।