উত্তম কুমার পরবর্তী সময়ে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে (Tollywood) লাভের মুখ দেখিয়েছিলেন যে অভিনেতারা তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (Chiranjeet Chakraborty)। সেই সময় ‘টলিউডের তিন স্তম্ভ’ বলা হতো প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee), তাপস পাল এবং চিরঞ্জিতকে। সম্প্রতি সেই অভিনেতাই ৭৩ বছরে পা দিলেন। জন্মদিনে এক নামী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসেছিলেন তিনি।
কেরিয়ারের শুরু, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দ্বন্দ্বের খবর থেকে শুরু করে রাজনীতি- সব বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন চিরঞ্জিত। সাংবাদিকতা থেকে অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে রিলিজ করেছিলেন অভিনেতার প্রথম ছবি ‘সোনায় সোহাগা’। কবে বুঝতে পারলেন ‘সুপারস্টার’ হয়ে গিয়েছেন তিনি?
উত্তরে চিরঞ্জিত বলেন, ‘আমি যখন খবর পড়তাম, তখনই স্টার হয়ে গিয়েছিলাম…। ‘শত্রু’ ছবিত অভিনয় করার পর প্রচুর জনপ্রিয়তা পেলাম। ‘নাগপাশ’ যখন মুক্তি পেল তখন আমি সুপারস্টার। এই সিনেমা করতে করতেই ‘প্রতিকার’র অফার এল। ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখোমুখি চরিত্র। উনি তখন আন্তর্জাতিক ছবি করে ফেলেছেন। এরপর ‘প্রতীক’র পর বুঝে গেলাম আমি সুপারস্টার হয়ে গিয়েছি’।
আরও পড়ুনঃ আবারও ভাঙছে সুখের সংসার, স্বামী-সন্তান ছেড়ে মিশকাকে আপন করল দীপা! ফাঁস আজকের তুলকালাম পর্ব
এরপর অনেকটা সময় ইন্ডাস্ট্রির পয়লা নম্বর সুপারস্টার ছিলেন চিরঞ্জিত। অনুভূতি কেমন ছিল? জবাবে অভিনেতা বলেন, ‘ভালোই লাগত। তখন তো সেলফি ছিল না। হাজার হাজার অটোগ্রাফ দিতাম। পাশাপাশি অভিনেতা হিসেবেও আমার দায়িত্ব বেড়ে গেল’।
আরও পড়ুনঃ টেলিভিশনের পর্দার লক্ষী! দুর্দান্ত অভিনয়ে TRP তালিকায় ঝড় তুলেছে এই ৫ লক্ষীমন্ত বৌমারা
একটা সময় জনপ্রিয়তার নিরিখে রীতিমতো একে অপরকে টেক্কা দিতেন চিরঞ্জিত, প্রসেনজিৎ এবং তাপস। তিনজনের মধ্যেকার পারস্পরিক রেষারেষি নিয়ে একাধিক খবর শোনা যেত। এখনও বুম্বাদার সঙ্গে তাঁর পেশাগত সম্পর্ক নিয়ে বহু কথা হয়।
এই প্রসঙ্গে চিরঞ্জিত একটি বই দেখিয়ে বলেন, ‘এখানে অনেকের মতো বুম্বাও আমাকে নিয়ে লিখেছে। প্রশংসাই তো করেছে। আমাদের দু’জনের সম্পর্ক খুব মধুর। ও ভীষণ ভালো ছেলে’। এরপর নিজের দীর্ঘ কেরিয়ারের কথা স্মরণ করে চিরঞ্জিত বলেন, এত বছরে কখনও কারোর কাছে কাজের জন্য তিনি হাত পাতেননি। তরুণ মজুমদার, তপন সিংহ থেকে শুরু করে প্রভাত রাত, গৌতম ঘোষ- কাউকে কোনোদিন কাজ চেয়ে ফোন করেননি তিনি।
মাঝে চিরঞ্জিত চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার আর বলিউডের বাদশাহ শাহরুখ খানের জন্মদিন যে একই দিনে, বাদশা কি জানেন? উত্তরে হেসে অভিনেতা বলেন, ‘শাহরুখের ভাগ্য ভাল যে, ওর জন্মদিন এবং আমার জন্মদিন একই দিনে। তবে মনে হয় জানালে জানতেও পারে। হয়তো কেউ বলেছে, আমি ঠিক বলতে পারবো না’।
সবশেষে নিজের অফুরন্ত এনার্জির রহস্য ফাঁস করেন চিরঞ্জিত। ‘পর্ণশবরীর নাগপাশ’ সিরিজে অভিনেতার এনার্জি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এর রহস্য কী জানতে চাওয়ায় চিরঞ্জিত হেসে বলেন, ‘আমি নিয়ন্ত্রিত খাবার খাই। রোজ শরীরচর্চা করি। আর একটা বিষয়, আমি জীবনে উচ্চাকাঙ্ক্ষায় বিশ্বাস করি না। কপালে যা লেখা আছে সেটাই হবে। তাই এখনও আমি সুস্থ আছি’।