Bhanu bandhopadhyay Untold Facts : বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) সেরা কমেডিয়ান (Comedian) বলতে যে অভিনেতার নাম প্রথমেই অনেকের মাথায় আসে তিনি হলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় (Bhanu Bandyopadhyay)। নিজের তুখোড় অভিনয়ের মাধ্যমে অগণিত দর্শকের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। প্রায় তিনশোরও বেশি ছবিতে অভিনয় করার পাশাপাশি যাত্রা, নাটকও করেছেন ভানু। অসম্ভব প্রতিভাবান এই অভিনেতা নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছেন টলিউডকে। অথচ তাঁরই শেষ বয়সে অত্যন্ত করুণ পরিণতি হয়েছিল।
১৯২০ সালের ২৬ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে জন্ম হয় ভানুর। ১৯৪১ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে চাকরির সূত্রে প্রথম কলকাতায় আসেন তিনি। অভিনেতা হিসেবে তাঁর পথচলা শুরু হয় আরও ৫ বছর পর। ১৯৪৬ সালে চন্দ্রগুপ্ত নাটকে চাণক্যের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সেই বছরই বেতারশিল্পী নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেতা।
বিয়ের পর পরই ভানুর কাছে প্রথম সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ আসে। ‘মন্ত্রমুগ্ধ’, ‘বরযাত্রী’, ‘পাশের বাড়ি’ সহ একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। তবে ১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে অভিনয় করে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা লাভ করেন ভানু। এই ছবিতে তাঁর ‘মাসিমা মালপো খামু’ সংলাপটি আজও অনেকের মুখে শোনা যায়। এরপর ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’, ‘ভানু পেল লটারি’তে অভিনয় করার পর আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে।
আরও পড়ুনঃ‘মিলি’র প্রোমোয় দেখেই ক্রাশ খাচ্ছে মেয়েরা! রইল ‘ফড়িং’র হ্যান্ডসাম নায়কের নাম সহ আসল পরিচয়
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ছবির নাম হল ‘মিস প্রিয়ংবদা’, ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’, ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘মহারাজা নন্দকুমার’ ইত্যাদি। অভিনেতার শেষ ছবি ছিল ‘শোরগোল’। শোনা যায়, সেই সময় জনপ্রিয়তার নিরিখে ‘মহানায়ক’ উত্তম কুমার এবং ‘মহানায়িকা’ সুচিত্রা সেনকে জোর টক্কর দিতেন ভানু। তাকে দেখার জন্য সিনেমাহল ভরিয়ে দিতেন দর্শকরা। তবে ষাটের দশকের শেষের দিক থেকে আস্তে আস্তে অভিনেতার শরীর খারাপ হতে শুরু করে। মানসিক আঘাত তাঁকে ভেতর ভেতর শেষ করে দেয়।
আরও পড়ুনঃ সাউথকে টেক্কা দিতে তৈরী! ‘ফেলুদা’ ইন্দ্রনীলের বিপরীতে ভিলেন হচ্ছেন ‘বাহুবলী’ অভিনেতা
আসলে সেই সময় বাংলার শিল্পী সমিতিতে ফাটল ধরেছিল। উত্তম কুমার, অনিল চট্টোপাধ্যায়রা শিল্পী সমিতি ভেঙে বেরিয়ে যান। এটা সহ্য করতে পারেননি ভানু। এরপর অভিনেতার প্রথম হার্ট অ্যাটাক হয়। কিন্তু তিনি সেবার সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু এরপর টলিউড তাঁকে ব্ল্যাকলিস্ট করে দেয়।
এরপর অর্থ উপার্জনের জন্য থিয়েটার-যাত্রা করতে শুরু করেন এই অভিনেতা। দূর-দূরান্তে কাজ করতে যেতে হতো তাঁকে। এত ধকলের জন্য আস্তে আস্তে ভাঙতে থাকে অভিনেতার শরীর। শেষে ১৯৮৩ সালের ৪ মার্চ পরলোক গমন করেন অভিনেতা। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর টলিউডে যে অসীম শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল তা আজও ভরাট করা সম্ভব হয়নি।