পর্দায় ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ সিরিয়ালে ‘বামাক্ষ্যাপা’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রতিটা বাঙালি পরিবারে পাকাপাকি স্থান করে নিয়েছেন সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Choudhury)। তবে অভিনয় ছাড়াও আরও একটি কারণে তাকে ছোট বড় সকলেই চেনে। আজ থেকে প্রায় একবছর আগে অভিনেতার প্রেমিকা তথা ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma) চলে গিয়েছেন চিরনিদ্রায়। ঠিক তারপরেই ওলটপালট গিয়েছিল অভিনেতার জীবন।
ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর কাহিনী শুরু হয়েছিল ‘ঝুমুর’ সিরিয়ালের হাত ধরে। একেঅপরের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। কাজের সূত্রেই হয় বন্ধুত্ব যা পরে আরও গভীর হয়। মাঝে ঐন্দ্রিলা একাধিকবার অসুস্থ হয়ে পড়েন, কিন্তু প্রতিবারেই ছায়াসঙ্গীর মত পাশে পেয়েছিলেন সাব্যসাচীকে। শেষ বারেও ছিলেন, কিন্তু সেই লড়াই আর জিতে ওঠা হয়নি ঐন্দ্রিলার।
২০২২ সালেও একসাথেই পুজো কেটেছিল ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর। কিন্তু ভাইফোঁটার পরেই আকাশ ভেঙে পরে মাথায়। ১লা নভেম্বর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অভিনেত্রী। এরপর চলে বেঁচে ফেরার দীর্ঘ লড়াই। যার শেষ পরিণতি হয় চোখের জলে ২০ই নভেম্বর। সেদিন ঐন্দ্রিলা চলে যাওয়ায় চোখে জল এসেছিল গোটা বাংলার মানুষেরই। তারপর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় থেকে নিজেকে একেবারেই দূরে সরিয়ে নেন সব্যসাচী।
আরও পড়ুনঃ আমি আমার বরের যেটা খেয়ে থাকি! দাদাগিরির মঞ্চে ত্বরিতা কথা শুনে ‘থ’ সৌরভ গাঙ্গুলিও
এই ঘটনার পর থেকেই অভিনেতাকে পর্দায় দেখার জন্য উৎসুক ছিলেন সকলেই। ইতিমধ্যেই সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। বর্তমানে ষ্টার জলসার পর্দায় ‘রামপ্রসাদ’ ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে তাকে। তবে ঐন্দ্রিলাকে আজও ভুলতে পারেননি তিনি।
এই প্রসঙ্গে সব্যসাচী জানান, কটা মানুষ চলে গেলেও সেই মানুষটা কোনও কোনও অংশে রয়ে যায়। এই বিষয়টা প্রত্যেকে নিজেদের মতো করে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন, শোক কাটিয়ে ওঠেন। আমিও আমার মতো করে পরিস্থিতি সামলাচ্ছি। আমি একই আছি। এ বছর যে খুব বেশি ফারাক হয়েছে তা নয়।”
এবছর পুজোর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই অভিনেতা জানান, ‘আমি বরাবরই অন্তর্মুখী। বেশি কথা বলি না। কিন্তু এটা ভাবতে শুরু করলে তো কিছুই করা যাবে না! এখনও তো স্টুডিয়োয় কাজ করতে আসি। এই স্টুডিয়োপাড়াতেই ওর সঙ্গে আমার দেখা। তা বলে কি আমি কখনও স্টুডিয়োপাড়াতে আসব না? কখনও কাজ করব না? সেটা তো আমি করছি।
তাছাড়া সব্যসাচী আরও বলেন, ‘যদি বলি স্টুডিয়োয় আসতে আমার সমস্যা হচ্ছে না অথচ সল্টলেকের ক্যাফেতে গেলে সমস্যা হচ্ছে, তাহলে তো সেটা ভণ্ডামি! এ রকম হয় না। কারণ ওর সঙ্গে আমি সল্টলেকের ক্যাফেতেও আগের বার পুজো কাটিয়েছি। আসলে পুজো একই থাকে, কিছু কিছু জিনিস বদলে যায়। সে সব মানিয়ে নিয়েই পুজো চলে। বাবার কাছে তার ছোটবেলার পুজোর গল্প শুনি। বাবাও তো স্মৃতিরোমন্থন করেন। সেই দিনগুলোও তো ছিল। এখন আর নেই। কিন্তু পুজো পুজোর মতো হয়ে চলেছে।”