• Srabanti Chatterjee Viral Video শ্রাবন্তী
  • অনুরাগের ছোঁয়াঅনুরাগের ছোঁয়া
  • নুসরত জাহান নুসরত
  • ফুলকিফুলকি
  • শুভশ্রীশুভশ্রী
  • ইচ্ছে পুতুলইচ্ছে পুতুল
  • নিম ফুলের মধুনিম ফুলের মধু
  • কার কাছে কইকার কাছে কই

ইঁট বালিতে নয়! প্রকৃতি ও মানুষ মিলে তৈরি করেছে মেঘালয়ের এই জীবন্ত গাছের সেতু

প্রকৃতির ব্যাপারস্যাপার বোঝা সে ভারী কঠিন এক কাজ। কখনও ঝড়, ভূমিকম্প,খড়া, বৃষ্টির তান্ডবে ছারখার হয়ে যায় বসুন্ধরা, কখনওবা তার অপরূপ সৃষ্টিকে নির্ভর করে বেঁচে থাকে কোটি কোটি জীবন। আর এই প্রকৃতির কারুকার্যেই আমাদের দেশও যেন রূপে, গুণে হয়ে উঠেছে আরও লাবণ্যময়ী। কবি তাই যথার্থই বলেছেন, “এত স্নিগ্ধ নদী কাহার, কোথায় এমন ধুম্র পাহাড় কোথায় এমন হরিৎ ক্ষেত্র আকাশ তলে মেশে, এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস কাহার দেশে। এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।” প্রকৃতির রূপ, রস, গন্ধে কার্যতই যেন সে সকল দেশের সেরা।

পাহাড়ের গাম্ভীর্যের সঙ্গে সবুজের ছোঁয়া, এমনই এক অপূর্ব মিশেল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত মেঘালয় রাজ্য। খোদ ব্রিটিশরাও মেঘালয়ের রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে এর নাম দিয়েছেন ‘স্কটল্যান্ড অফ ইস্ট’। পাহাড়, ঝর্ণা, জঙ্গল আর চারিদিকে সবুজের সমারোহে ভরপুর এই রাজ্য। এই রাজ্যেরই অপূর্ব একটি গ্রাম হল মাওলিনং। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে এক প্রবল খরস্রোতা পাহাড়ি নদী থাইলাং। ঠিক এই নদীর উপরেই রয়েছে প্রকৃতি ও মানুষের যৌথ প্রয়াসে তৈরি এক বিস্ময়কর জীবন্ত সেতু।

   

living root bridge,Meghalaya,north East,জীবন্ত গাছের সেতু,মেঘালয়া,সেতু,ব্রীজ,উত্তর পূর্ব ভারত

সাধারণত ‘ফাইকাস ইলাস্টিকা’ নামের গাছগুলো এখানে নদীর ধারে প্রচুর পরিমাণে জন্মাতে দেখা যায়। এটি এক ধরনের রবার গাছ। এই গাছের শিকড় মাটির অনেক গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে ভূমিক্ষয় কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও এই গাছ অবলীলায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। এই গাছের শিকড়ের ন্যায় বের হতে থাকা এই ঝুড়িমূলগুলো একসঙ্গে বেঁধে রাখা হয় যাতে ঝুড়িমূলগুলো শক্তিশালী হতে পারে।

living root bridge,Meghalaya,north East,জীবন্ত গাছের সেতু,মেঘালয়া,সেতু,ব্রীজ,উত্তর পূর্ব ভারত

তারপর সুপারি গাছের কান্ড মাঝ বরাবর ছিদ্র করে খোলের ন্যায় নল তৈরি করে ঝুড়িমূলগুলো নলের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। নলের মধ্যে বাড়তে থাকা ঝুড়িমূলগুলো একসময় নদীর অন্য পাড়ের পাথরের মাটিতে পৌঁছে যায়। এরপর ঝুড়িমূলগুলোকে মাটির গভীরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। এভাবে ঝুড়িমূলগুলো মাটির ভেতরে পৌঁছে গেলে সময়ের সাথে শিকড়গুলো আরো শক্ত ও মজবুত হয়ে গড়ে ওঠে। হাঁটার সুবিধার্থে এর উপর কাঠের পাটাতন রেখে দেওয়া হয়, এভাবেই প্রায় ১৫ বছর ধরে মানুষ ও প্রকৃতির মেলবন্ধনে পূর্ণতা পেয়েছে এমন জীবন্ত সেতু।

living root bridge,Meghalaya,north East,জীবন্ত গাছের সেতু,মেঘালয়া,সেতু,ব্রীজ,উত্তর পূর্ব ভারত

স্থানীয়দের মতে, সারা মেঘালয় জুড়ে এই ধরনের জীবন্ত শিকড়ের সেতু অনেক রয়েছে। এর মধ্যে একটি সেতু কিন্তু অন্য সেতুগুলোর থেকে বেশ ভিন্ন। মনে করা হয় এ ধরনের সেতু বিশ্বে একটিই আছে। এই সেতুর রয়েছে দুটো স্তর। একই গাছের শেকড় থেকে একটি সেতুর ওপর দিয়ে নির্মিত হয়েছে অন্যটি। দুটি সেতুর মিলনস্থল একস্থানে হওয়ার কারণে একে দ্বিতল সেতু বা ডাবল ডেকার ব্রিজও বলা হয়ে থাকে। স্থানীয়রা এ সেতুকে চেনে ‘উমসিয়াং ডাবল-ডেকার রুট ব্রিজ’ নামে। এতদিন অগোচরেই ছিল এই সেতু, কিন্তু বর্তমানে চেরাপুঞ্জির সৌন্দর্য দেখতে আসা পর্যটকদেরকে স্থানীয় গাইডরা সেতুর তথ্য দিতেই এখন তারা ভিড় জমান।