এখনকার দিনে দাঁড়িয়েও মেয়েদের মাসিকের (Menstruation) মতো বিষয়টিকে নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে রীতিমতো লজ্জা পান সকলে। পুরনো কিছু বদ্ধমূল চিন্তাভাবনা থেকেই সকলের মনের মধ্যে এই ধারণা গেঁথে গিয়েছে। তাই মেয়েদের মাসিকের সাথেই বহুদিন ধরে জড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুচি-অসুচির নিয়ম। তাই রজঃস্বলা অবস্থায় মেয়েরা কোন পুজো অর্চনার কাজ করতে পারে না, এমনকি এই অবস্থায় মেয়েদের মন্দিরে প্রবেশ করার অনুমতিও নেই।
তাই এখনকার দিনেও স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে গেলে হয় খবরের কাগজে মুড়ে নয়, কালো প্যাকেটের মধ্যে ঢুকিয়েই তা হাতে ধরানো হয় মেয়েদের। তাই মাসিক নিয়ে ফিসফিসিয়ে কথা বলাই বহুদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বাড়ির পুরুষ মানুষদের সামনে তো এই কথা বলা লজ্জার বিষয়। এমন ধারণাই ছোট থেকে গেঁথে দেওয়া হয় বাড়ির মেয়েদের মনে।

তবে এবার এই বদ্ধমূল ধারণাতেই সজোরে আঘাত হানলো স্টার জলসার (Star Jalsha) জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়াল (Bengali Serial) ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’ (Horogouri Pice Hotel)। সিরিয়ালটির নিয়মিত দর্শকরা জানেন এই ধারাবাহিকে এখন দেখা যাচ্ছে শংকরের দাদা প্রভাকর এখন পাগল থেকে ভালো হয়ে উঠেছে। আর নিজের রূপে ফিরতেই সে এখন বাড়ির সকলের কাছে খরচের হিসাব চাইছে। জানতে চায় মেয়েদের কেন হাত খরচ দেওয়া হয়েছে?
আরও পড়ুনঃ অজান্তেই কেড়েছিল বোনের ভালোবাসা, এতদিনে সামনে এল সত্যি, টিভির আগেই ফাঁস মহাধামাকা পর্ব
তখন উত্তর দেওয়ার ভয়ে বাড়ির সব মেয়েরাই বলে যে তাদের হাত খরচ চাই না। কিন্তু ঐসময় একমাত্র প্রতিবাদ করে ওঠে ঐশানি (Oishnai)। একেবারে মুখের ওপর স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় মেয়েরা বা প্রতি মাসে রজঃস্বলা হয় তাই তার জন্য স্যানিটারী প্যাড প্রয়োজন হয়। সেটার জন্য খরচ দিতে হবে। এটা শুনে ঐশানির ভাসুর -শ্বশুর তো বটেই মেয়েরাও কানে হাত দিয়ে জিভ কাটে।

ভাবখানা এমন যেন ঐশানি কোনো খারাপ কথা বলেছে। তখন সবার ভুল ভাঙতে ঐশানি বলে ওঠে ‘এটাতো লজ্জার কোন বিষয় নয়। মেয়েরা রজঃস্বলা হয় বলেই নতুন প্রাণের জন্ম হয়।’ সেইসাথে এদিন ঐশানি সবাইকে বোঝায় যে এটা কোন নোংরা বা খারাপ কথা নয় বরং এই নিয়ে আমাদের সমাজে আরো বেশি করে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত। যীশু সেনগুপ্ত নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তের প্রোডাকশন হাউসের তৈরি সিরিয়ালের এই পর্ব দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন দর্শকরাও।
এমনই একজন দর্শক প্রশংসা করে লিখেছেন ‘হ্যাটস অফ, হরগৌরী পাইস হোটেল! ঐশানীর মত মেয়ের প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে থাকা দরকার , একমাত্র ঐশানিরই এইরকম গাটস আছে যে কোনো কিছুকে পরোয়া করেনা! এইভাবে সুশীলভাবে সেনসিটিভ একটা বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা ও এই বিষয় নিয়ে গোড়ামি আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিল!’














