বছর খানেক আগে প্রায় বাবার বয়সী দীপঙ্কর দে (Dipankar Dey) -কে বিয়ে করেছেন দোলন রায় (Dolon Roy)। তাঁদের সম্পর্কের বয়স আরও পুরনো। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে একসঙ্গে আছেন দু’জনে। এখন সুখে সংসার করলেও, যখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখন বিরাট ঝড় বয়ে গিয়েছিল দোলনের জীবন। সম্প্রতি এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের কাছে এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী।
দোলন বলেন, ‘যখন দীপঙ্করের সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানিয়েছিলাম, মা-বাবা দু’জনেই চিৎকার করে উঠেছিলেন। বাবা যদিও আগে থেকেই শিল্পী দীপঙ্কর দে-কে সমীহ করতেন। তবে মেয়ের স্বামী হিসেবে কখনও কল্পনা করেননি। তবে সময় যত এগিয়েছে, দীপঙ্কর প্রমাণ করেছেন তিনিই আমার আদর্শ স্বামী’।
দোলন জানান, দীপঙ্করের সঙ্গে তাঁর বাবা-মায়ের কখনও ঝগড়া হয়নি। কখনও তাঁদের অসম্মান করেননি অভিনেতা। উল্টে বলেছেন, ‘দ্যাখো, আমার মতো একজন বুড়ো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করলে বাড়ির লোকের থেকে তো এমন প্রতিক্রিয়াই পাবে’। অভিনেত্রী জানান, তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে দীপঙ্করের শুরু থেকেই ভীষণ ভালো সম্পর্ক। দু’জনেই দু’জনকে ভীষণ ভালোবাসেন।
আরও পড়ুনঃ জামাইবাবুর সাথেই প্রেম করছে অনুরাগের ছোঁয়া’র উর্মি! দিব্যজ্যোতির সাথে ছবি ফাঁস হতেই শুরু জল্পনা
দোলনকে বিয়ে করার আগে এক অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন দীপঙ্কর। দুই কন্যা সন্তানও আছে অভিনেতার। সেই দুই মেয়েই দোলনের থেকে বয়সে বড়। তাঁদের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক অভিনেত্রীর? উত্তরে বলেন, ‘ওঁদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালোই। আগে অবশ্য ততটা ভালো ছিল না। সময় সব ঠিক করে দিয়েছে। দীপঙ্করের বড় মেয়ে টিটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক কখনওই মধুর ছিল না। তবে ছোট মেয়ে রুমির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আমার। ও আমার চেয়ে এক বছরের বড়। তিনি আমায় মায়ের স্থান দিয়েছেন, আমরা বন্ধুর মতো। রুমি বলেছেন, তুমি সত্যিই ভালোবেসে আমার বাবার দেখাশোনা করো, আমার সেটা সত্যি ভালোলাগে’।
কথার সূত্রে দোলন জানান, দীপঙ্কর এবং তাঁর প্রথম স্ত্রীর যখন বিচ্ছেদ হয়, সেই সময় রুমিই তাঁর মাকে তাঁদের সম্পর্কের বিষয়ে বুঝিয়েছিলেন। অভিনেতার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে কেমন সম্পর্ক অভিনেত্রীর? জবাবে দোলন বলেন, ‘টিটির মৃত্যুর পর তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। এর আগে কথা-দেখা কিছুই হয়নি। আমাদের মধ্যে কোনও তিক্ততা নেই। কারণ আমি তাঁর সংসার ভাঙিনি। দীপঙ্করের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদের অনেকগুলো বছর পর আমি তাঁর জীবনে আসি। ফলে আমায় নিয়ে কোনও সমস্যা নেই’।
আরও পড়ুনঃ ‘একটা চড় দেব…’! কেন দীপঙ্কর দে’কে মারতে চেয়েছিলেন সত্যজিৎ-পত্নী? কারণ সত্যিই চমকে দেওয়ার মত
দোলনের সংযোজন, ‘টিটির মৃত্যুর পর এই দুই বয়স্ক বাবা-মাকে হাসপাতালে আমিই সামলেছিলাম। ডাক্তারকে ফোন করে দু’জনের জন্য ওষুধ আনিয়ে আমি আগেই খাইয়ে দিয়েছিলাম। কন্যা হারানোর শোক যাতে তাঁদের দু’জনের কোনও প্রকার শারীরিক ক্ষতি না করতে পারে’।
জীবনে এতকিছু সামলাতে গিয়ে নারী হিসেবে একটি সত্ত্বা আজও অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে দোলনের। মা হতে পারেননি অভিনেত্রী। একটা সময় সেই আক্ষেপ শোনা যেত তাঁর গলায়। তবে এখন ভাইপো আসার পর সেই কষ্ট অনেকটাই জুড়িয়েছে বলে জানান অভিনেত্রী। স্বামী দীপঙ্করকে ভালো রাখাই এখন তাঁর লক্ষ্য। অভিনেত্রী বলেন, ‘দিলীপ কুমার-সায়রা বানু আমার আদর্শ। ঠিক যেভাবে দিলীপ কুমারকে ৯৮ বছর পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলেন সায়রা, আমিও সেটাই চাই। দীপঙ্করের জীবনে আমি সায়রা বানু হয়ে থাকতে চাই’।