টলিউডের অন্দরে ‘টিটোদা’ নামেই অধিক পরিচিত বর্ষীয়ান অভিনেতা দীপঙ্কর দে (Dipankar Dey)। একটা সময় মানুষের হাত গণনা করতেন তিনি। তাঁর কাছে হাত দেখানোর জন্য নাকি লম্বা লাইন পড়ে যেত। অভিনয়ের পাশাপাশি জ্যোতিষশাস্ত্র নিয়েও পড়াশোনা করতেন দীপঙ্কর। সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) থেকে শুরু করে মিঠুন চক্রবর্তী- টলিপাড়ার তাবড় তাবড় তারকারা হাত দেখাতেন তাঁর কাছে।
শোনা যায়, দীপঙ্করের এই হাত দেখার প্রতিভার কথা বহু মানুষ জানতেন। অভিনেতা নাকি ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারতেন। তবে একদিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল এই সবকিছু। কিন্তু কেন? আজকের প্রতিবেদনে সেই অজানা কাহিনীই আপনার সামনে তুলে ধরবো আমরা।
কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে বেশ কয়েকটি সিনেমায় কাজ করেছিলেন দীপঙ্কর। ‘গণশত্রু’, ‘জন অরণ্য’, ‘সীমাবদ্ধ’, ‘আগন্তুক, ‘শাখা প্রশাখা’র মতো ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। একবার পরিচালকের বাড়িতে গিয়েছিলেন দীপঙ্কর। সেই সময় সত্যজিৎ রায়ের পুত্রবধূ তথা সন্দীপ রায়ের স্ত্রী ললিতাদেবী গর্ভবতী।
আরও পড়ুনঃ ‘পরকীয়া সুস্থতার লক্ষণ’, সাক্ষাৎকারে অপরাজিতা আঢ্যর মন্তব্য শুনেই নিন্দার ঝড় নেটপাড়ায়
দীপঙ্করের হাত দেখার প্রতিভার কথা সত্যজিৎ-পত্নী বিজয়া রায়ও (Bijoya Ray) জানতেন। তিনি অভিনেতাকে দেখা মাত্রই জিজ্ঞেস করেন, ‘বলো তো টিটো, বাবুর ছেলে হবে নাকি মেয়ে?’ উত্তরে দীপঙ্কর বলেছিলেন, ‘মেয়ে’। এরপর ললিতাদেবী পুত্র সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর সত্যজিৎ-পত্নী বলেছিলেন, ‘তোমায় একটা চড় দেব। আমার ছেলের মেয়ে হয়নি। বাবুর ছেলে হয়েছে’।
জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে একথা ফাঁস করেছিলেন দীপঙ্কর-পত্নী দোলন রায়। তবে ‘পথের পাঁচালী’ পরিচালকের পরিবারের ক্ষেত্রে দীপঙ্করের গণনা না মিললেও, তাঁর হাত দেখার ওপর ভরসা করতেন বহু মানুষ। এমনকি দোলন কোথাও গেলে, তাঁকে ঘিরে ধরতেন চেনা-পরিচিতিরা। টিটোদার কাছে হাত দেখিয়ে ভাগ্য জানতে চাইতেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ কচি বয়সে বাবার চরিত্রে অভিনয়! বাংলা সিরিয়ালের এই ৫ নায়কের আসল বয়স কত জানেন?
তবে এখন অবশ্য আর হাত দেখেন না দীপঙ্কর। বহু বছর হল সেই জগৎকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু কেন আচমকা এমন সিদ্ধান্ত নিলেন অভিনেতা? জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে দোলন বলেন, ‘১৯৯৭ সালে যখন আপনাদের টিটোদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, সেই সময়ও দীপঙ্কর জ্যোতিষচর্চা করতেন। হঠাৎই ছেড়ে দেন। এর একটা কারণ আছে। কিন্তু সময়ে-সময়ে পাল্টে যান। তখন মনে হয়েছিল জ্যোতিষচর্চার মধ্যে আকর্ষণ রয়েছে। পরবর্তীকালে নিজের পছন্দকে প্রশ্ন করে বিজ্ঞানকে আপন করে নিয়েছিলেন’।