আর মাত্র হাতেগোনা কয়েক দিনের অপেক্ষা। এরপরেই শুরু হয়ে যাবে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো (Durga Puja)। এখন থেকেই অবশ্য আকাশে-বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকে পুজোর প্ল্যানিং করতে শুরু করে দিয়েছেন। কেউ প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে পুজো কাটাবেন, কেউ আবার চলে যাবে বনেদি বাড়ির পুজো দেখতে। আপনিও যদি বনেদি বাড়ির পুজো দেখতে ইচ্ছুক হন, তাহলে একদম ঠিক প্রতিবেদন পড়ছেন।
সময়ের সঙ্গে এখন বহু বনেদি বাড়ির পুজো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হাতেগোনা যে কটি বাড়িতে পুজো হয় সেগুলির জৌলুস আগের মতো আর নেই। তবে এখনও শহর কলকাতায় (Kolkata) এমন বেশ কিছু বনেদি বাড়ি রয়েছে যেখানে এখনও আগের মতো ধুমধাম করে দেবীর আরাধনা করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে শোভাবাজার রাজবাড়ির (Sovabazar Rajbari) নাম। আজকের প্রতিবেদনে যে বনেদি বাড়ির হদিশ নিয়ে এসেছি তার নাম হল ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়ি (Chhatu Babu Latu Babu Thakurbari)।
অনেকেই হয়তো জানেন না, একসময় পুজোর জৌলুসের নিরিখে এই বনেদি বাড়ি কড়া টেক্কা দিতো শোভাবাজার রাজবাড়িকে। ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়ির ২০০ বছর পুরনো পুজোয় মানা হয় একাধিক বিচিত্র নিয়ম। যা শুনলে হয়তো অবাক লাগতে পারে আপনার। এখানে দশ মহবিদ্যা রূপে দেবীর পুজো করা হয়। সেই জন্য মহালয়া থেকেই দেবীর আরাধনা শুরু হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ ভিড়ে গাদাগাদি নয়, যতদূর চোখ যায় ফাঁকা সমুদ্র! রইল কলকাতার কাছেই এক অফবিট সি-বিচের হদিশ
ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়িতে প্রতিপদ থেকে ষষ্ঠীর দিন অবধি বিশেষ শালগ্রাম শিলায় পুজো করা হয়। এরপর ষষ্ঠী থেকেই শুরু হয় দেবী মূর্তির পুজো । শান্ত, বৈষ্ণব এবং শৈব- তিন রীতি মেনেই এখানে দেবী পূজিত হন।
এখানকার মায়ের মূর্তিরও বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। দেবীর বাহন সিংহের মুখ ঘোড়ার মতো হয়। মা লক্ষ্মী-সরস্বতীর পুজো এখানে জয়া এবং বিজয়া নামে করা হয়। সেই কারণে তাঁদের হাতে ঝাঁপি ও বীণা দেখা যায় না।
দেবীর মূর্তি ছাড়াও ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়ির পুজোর নিয়মকানুনেও একাধিক বিশেষত্ব রয়েছে। এখানে অষ্টমীর দিন কুমারী পুজো করা হয় এবং সেই দিনই সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন বাড়ির মহিলারা। শুনলে হয়তো অবাক হবেন, কলকাতার এই বনেদি বাড়িতে পুজোয় মায়ের ভোগ লবণ ছাড়া রান্না হয়। তাই এবারের পুজোয় যদি একটু অন্যরকম অভিজ্ঞতা লাভ করতে চান তাহলে চলে আসতেই পারেন ৬৭ই বিডন স্ট্রিটের রাম দুলাল নিবাসী এই বাড়িতে।