সদ্য ওটিটিতে রিলিজ করেছে ‘পিপ্পা’ (Pippa) ছবিটি। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বানানো এই ছবি ঘিরে যত না কথা হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে ছবির একটি গান নিয়ে। কাজী নজরুল ইসলামের আইকনিক ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ (Karar Oi Louho Kopat) গানটিকে এই সিনেমায় ব্যবহার করেছেন এ আর রহমান (AR Rahman)। তবে পাল্টে দেওয়া হয়েছে সুর সহ গানের সম্পূর্ণ খোলনলচে।
‘কারার ওই লৌহ কপাট’র এমন পরিবর্তন একেবারেই ভালো চোখে দেখেননি নেটিজেনদের একাংশ। সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই চোখে পড়ছে এই সংক্রান্ত নানান পোস্ট। বিতর্কের আবহেই এবার এ আর রহমানের এই গান প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বাংলার সঙ্গীত দুনিয়ার একাধিক নামী শিল্পীরা।
জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী (Pandit Ajoy Chakraborty) এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘গানটিকে শুধু ধিক্কার জানালে হবে না। সাহিত্য ও সংস্কৃতির ওপর আমাদের কতটা দায়িত্ববোধ… সেটারও প্রমাণ হচ্ছে’। এরপর খানিক আক্ষেপের সুরে পণ্ডিতজি বলেন, ‘সাহিত্য ধরে রাখতে আমরা বিফর। সেই বিষয়ে আমাদের সচেতনতা হারিয়ে যাচ্ছে’।
আরও পড়ুনঃ ‘বাঘা যতীন’র পর মহানায়ক। সত্যজিৎ রায়ের ছবির রিমেকে উত্তম কুমার হচ্ছেন দেব!
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘আজ আমি যদি ‘আরে জাহাঁ সে আচ্চা’র যা ইচ্ছে সুর করে দিই ভালোলাগবে তো?’ একাধিকবার বাংলা গান নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলা দেখে বেজায় রেগে গিয়েছেন এই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। তিনি বলেন, একটা বাংলা গান, যা বাংলা ভাষাতেই রেকর্ড করা হচ্ছে, যা খুশি তাই করা হবে সেটা নিয়ে! এটা নিয়ে তো মামলা হওয়া উচিত! এ আর রহমানের মতো এত নামী একজন লোক, এটা কী করলেন! এটা ওনার থেকে আশা করিনি’।
আরও পড়ুনঃ টলিউডেও রয়েছে স্বজনপোষণ! ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা জানিয়ে বিস্ফোরক ‘কার কাছে কই মনের কথা’র বিপাশা
একই সুর শোনা গেল শিল্পী শ্রাবণী সেনের (Srabani Sen) গলাতেও। তিনি বলেন, ‘রহমান গানটা খুব খারাপভাবে কম্পোজ করেছেন। তাঁর থেকে এটা আশা করিনি। নজরুলের যে গানগুলি শুনলে গায়ে কাঁটা দেয়, রক্ত গরম হয়ে যায়, তেমন একটা গান নিয়ে এ কেমন ছিনিমিনি খেলা‘।
বন্ধু এ আর রহমানের এই গান শুনে আশাহত হয়েছেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী দেবজ্যোতি মিশ্র (Debojyoti Mishra)। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে যেন একটা দুঃস্বপ্ন দেখছি! মনে হল স্বপ্ন ভেঙে উঠব আর দেখবো এসব কিছুই হয়নি’। এরপরেই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি।
দেবজ্যোতি বলেন, ‘এই গানটি তো কবিতা আকারেও রয়েছে। তাহলে কি আমার বন্ধুকে স্রেফ কবিতাটাই দেওয়া হয়েছিল? তারপরেও এটা খুবই নিম্নমানের কাজ’। পাশাপাশি এই সুর আদৌ এ আর রহমান করেছেন কিনা সেই প্রশ্নও উঁকি দিয়েছে তাঁর মনে।