বলিউডে (Bollywood) একটা সময় ডাবল রোলের প্রচুর চল ছিল। হেমা মালিনীর ‘সীতা অউর গীতা’, সলমন খানের ‘জুড়ওয়া’ ছবিতে তাঁদের দ্বৈত চরিত্রে দেখেছেন দর্শকরা। তবে এমন কি কখনও শুনেছেন, সিনেমার শুরুতে একজন অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন এবং শেষের দিকে তাঁর ডুপ্লিকেট শ্যুটিং করেছেন? আজ আপনাকে এমনই একটি কাহিনী শোনাবো আমরা।
এই ছবির নাম হল ‘উলফত’ (Ulfat)। ১৯৭১ সালে এই ছবির শ্যুটিং শুরু হয়েছিল। পরিচালক ছিলেন কে রাজদান। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছিলেন সেসময়কার নামী অভিনেতা রাজকুমার (Raaj Kumar)। নায়িকা হিসেবে ছিলেন ওয়াহিদা রহমান এবং সাধনা। সিনেমার শ্যুটিং প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। সেই সময় একদিন আচমকাই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন রাজকুমার এবং ছবির পরিচালক।
সেই ঝামেলা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে রাজকুমার মাঝপথে ছবি থেকে সরে দাঁড়ান। ইন্ডাস্ট্রির একাধিক তাবড় তাবড় তারকা দু’জনের মধ্যে মিটমাট করাতে চেয়ে ব্যর্থ হন। এরপর ১৯৮৪ সালে কে রাজদান (K Rajdaan) ‘উলফত’র সত্ত্ব হরি সিংয়ের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর হরি সিং এই বিষয়ে রাজকুমারের সঙ্গে কথা বলেন। কথাবার্তা হওয়ার পর রাজকুমার তাঁর থেকে ‘উলফত’র সত্ত্ব কিনে নেন।
আরও পড়ুনঃ জুটেছিল ‘ফ্লপমাস্টার’ তকমা, ছাড়তে চেয়েছিলেন অভিনয়! এই ৭ ছবিই বদলে দেয় উত্তম কুমারের জীবন
যেহেতু ছবির অধিকাংশ শ্যুটিং সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল, সেই জন্য রাজকুমার ছবিটি রিলিজ করার পরিকল্পনা করেন। প্রায় ১৩ বছর পর ‘উলফত’এ অভিনয়ের জন্য ফের ওয়াহিদা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। কিন্তু সেই সময় নায়িকার রোল ছেড়ে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন ওয়াহিদা। অপরদিকে আর এক নায়িকা সাধনা ততদিনে অভিনয় ছেড়ে দিয়েছেন।
রাজকুমার যখন ‘উলফত’এ অভিনয়ের জন্য সাধনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তখন তিনি প্রচণ্ড রেগে যান। এত বছর পর ফের কলেজ ছাত্রীর চরিত্রে অভিনয় করতে হবে শুনে সাধনা ভাবেন রাজকুমার হয়তো তাকে নিয়ে ঠাট্টাতামাশা করছেন। দুই নায়িকাই খালি হাতে ফেরানোর পর রাজকুমার ঠিক করেন, তিনি ওয়াহিদা এবং সাধনার ডুপ্লিকেট দিয়ে ছবির কাজ সম্পূর্ণ করবেন।
আরও পড়ুনঃ অমিতাভ-ধর্মেন্দ্রর থেকে বেশি ফিস, শেষে চলে যান কৈলাশে! বলিউডের এই বিখ্যাত ভিলেন কে জানেন?
মিডিয়া রিপোর্টস থেকে জানা যায়, রাজকুমারের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল তাঁর নামেই ছবি হিট করবে। এভাবে কোনও রকমে সম্পূর্ণ হয় ‘উলফত’র শ্যুটিং। এরপর দীর্ঘ ১০ বছরের অপেক্ষা শেষে ১৯৯৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে রিলিজ করে এই সিনেমা। নাম বদলে রাখা হয় ‘উলফত কি নয়ি মঞ্জিলে’ (Ulfat Ki Nayee Manzilen)।
তবে রাজকুমারের আশা ভঙ্গ করে এই ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। রিলিজের পরের দিনই এই ছবির সম্প্রচার বন্ধ করে দেন সিনেমাহল নির্মাতারা। শুধু তাই নয়, এই ছবির একজন অভিনেত্রী রাজকুমারকে নোটিশ অবধি পাঠিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, তাঁকে না জানিয়ে ছবি রিলিজ করেছেন অভিনেতা।