বলিউড (Bollywood) ইন্ডাস্ট্রির একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন বিনোদ খান্না (Vinod Khanna)। সত্তর-আশির দশকে প্রচুর সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তাঁর হ্যান্ডসাম লুকে পাগল ছিলেন বহু অভিনেত্রী। কিন্তু সেই অভিনেতারই শেষ জীবনে ভীষণ মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল। একজন সুপারস্টারের সঙ্গে যে এমনটাও হতে পারে তা কেউ স্বপ্নতেও কল্পনা করতে পারে না।
১৯৪৬ সালে পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিনোদ। দেশ ভাগ হওয়ার পর মুম্বইয়ে চলে আসে অভিনেতার পরিবার। এরপর সেখান থেকে দিল্লি চলে যান তাঁরা। সেখানেই অভিনেতার ছোটবেলা কেটেছিল। দিল্লি থেকে স্কুল স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পর মুম্বইয়ের কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন বিনোদ। মায়ানগরীতে পা রাখার পরেই থিয়েটারের প্রতি ঝোঁক হয় তাঁর। সেই সূত্রেই আলাপ হয় প্রথম স্ত্রী গীতাঞ্জলির সঙ্গে।
কলেজে পড়াকালীন থিয়েটারে অভিনয় করতে করতে সুনীল দত্তের নজরে পড়ে যান বিনোদ। এরপর ‘মন কা মিত’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পা রাখেন তিনি। এরপরেই ঘুরে যায় অভিনেতার ভাগ্যের চাকা। ‘রোটি কাপড়া অউর মকান’, ‘পূরব অউর পশ্চিম’,’ মেরা গাঁও মেরা দেশ’ সহ একাধিক সুপারহিট ছবিতে কাজের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু কেরিয়ারের শীর্ষে থাকতে থাকতেই আচমকাই সবকিছু ছেড়ে আধ্যাত্মিকতার পথ বেছে নেন বিনোদ।
১৯৮২ সালে সংসারের মায়া ত্যাগ করে আমেরিকায় চলে যান জনপ্রিয় এই অভিনেতা। স্বামীর এমন মতিগতি দেখে তাঁকে ডিভোর্স দেন স্ত্রী গীতাঞ্জলি। পরবর্তীকালে অবশ্য নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমেরিকা থেকে ভারতে ফিরে এসেছিলেন অভিনেতা। একদম শূন্য থেকে সবকিছু ফের শুরু করতে হয়েছিল তাঁকে। কেরিয়ারের এই দ্বিতীয় ইনিংসেই রাজনীতির ময়দানেও পা রেখেছিলেন তিনি।
শোনা যায়, এই সময়ই অভিনেত্রী অমৃতা সিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বিনোদের। তবে তাঁদের সেই সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। এরপর কবিতা দত্তানি নামের এক মহিলাকে বিয়ে করে নতুন করে সংসার পাতেন অভিনেতা। বাবার দ্বিতীয় বিয়ের পর রাহুল-অক্ষয়রা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ একপ্রকার ছিন্ন করে দেন। অপরদিকে দ্বিতীয়পক্ষে দুই কন্যা সন্তানের বাবা হন অভিনেতা।
সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। এরপর ২০১৭ সালে হঠাৎই অভিনেতার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। শোনা যায়, অভিনেতার জীবনের অন্তিম সময় বেশ অবহেলায় কেটেছিল। তাঁর শরীর একেবারে ভেঙে পড়েছিল। অথচ সেই সময়ও তাঁর ধারেকাছে যেতেন না সন্তানরা। এমনকি বাবার মৃত্যুর পর তাঁর মুখাগ্নিটুকুও করেনি ছেলেরা। বলিউড কাঁপানো এক সুপারস্টারের অন্তিম পরিণতি যে এতখানি কষ্টের হবে তা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেনি কেউ।