আর কটা দিন পেরোলেই মহালয়া (mahalaya), তারপরেই পুজো। বছরের এই কয়েকটা দিনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন প্রতিটা বাঙালি। তবে পুজোর আগে মহালয়াও কিন্তু আলাদাই একটা আকর্ষণ। একসময় মহালয়ার দিন ভোর বেলায় চারিদিকে বেজে উঠত রেডিও। একত্রে প্রতিটা বাড়ি থেকে শোনা যেত ‘আশ্বিনের শারদ প্রাতে…’। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ সেটা অনেকটাই অতীত! এখন মহালয়া মানে টিভির পর্দায় নানা ভাবে তুলে ধার হয় মহিষাসুরমর্দিনীকে (Mahisasurmardini)।
মহালয়া মানেই বর্তমানে আর পুরাণের কাহিনী শোনা নয় বরং চোখের সামনে দেখাও যায়। বিভিন্ন চ্যানেলে পছন্দের নায়ক নায়িকাদের দেখা যায় বিভিন্ন দেব দেবীর রূপে। সর্বোপরি মহিষাসুরমর্দিনী ও মহিষাসুর (Mahisasur) রূপে। কিন্তু আজকের এই রংচঙে ভিএফএক্সে মোড়া দুনিয়ায় টেলিভিশনের প্রথম মহালয়ার শিল্পীরা কেমন রয়েছেন? আজ সেই কথাই তুলে ধরব আমাদের প্রতিবেদনে।
আজ প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই টেলিভিশন হাজির, ছোট থেকে বড় সকলেই একপ্রকার আসক্ত হয়ে পড়েছেন টিভি নামের বোকাবাক্সের প্রতি। তবে যখন প্রথম মহালয়া টিভিতে সম্প্রচার শুরু হয় তখন ঘরে ঘরে টিভি ছিল না। ভোর বেলা পাড়ার কোনো এক ঘরে টিভির সামনে রুদ্ধ শ্বাস নিয়ে হাজির হতেন সকলে।
টেলিভিশনের পর্দায় প্রথমবার মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দূর্গা রূপে দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রী সংযুক্ত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর তাঁর বিপরীতে মহিষাসুর রূপে ছিলেন অমল চৌধুরী (Amal Chowdhury)। এক মাথা ঝাঁকড়া চুল, ইয়া বড় বড় চোখ, মোটা একখান গোঁফ আর যুদ্ধের পোশাক পরিহিত ভয়ংকর রূপ। হ্যাঁ এমনটাই ছিল টেলিভিশনের প্রথমদিকের মহিষাসুর, যাকে পর্দায় দেখেই একপ্রকার ভয়ে কুঁকড়ে যেত বাড়ির কচি কাঁচারা।
নিজের শরীরিক গঠন থেকে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য মহিষাসুরের চরিত্রে প্রতিবারেই সুযোগ পেতেন অমল চৌধুরী। এমনকি জানা যায় বাস্তবেও নাকি তাকে দেখে ভয় পেত ছোটরা। অসুর চরিত্রে অভিনয়ের দৌলতে ‘অমল অসুর’ নামেও খ্যাত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর একসময় যমরাজ থেকে শুরু করে রুপোলি পর্দায় বাকি তারকাদের সাথেও অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু আজ তিনি একপ্রকার হারিয়ে গিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে।
সময়ের সাথে সাথে বয়স হয়েছে অমলবাবুর, তবে আজও তাঁর বড় বড় চোখের চাহনি আর মোটা গোঁফ কিন্তু রয়েছে। নতুন তারকাদের ভিড়ে আজ তাকে খুঁজেই পাওয়া যায় না। এমনকি এই বয়সে কোনো সরকারি সাহায্যও অমিল। অন্যদিকে মহালয়ার নাম হওয়া বিচিত্রানুষ্ঠানের ভিড়ে আজও কিছু বাঙালি এমন রয়েছেন যারা পড়ার হাড় হিম করে দেওয়া অমল অসুর থুড়ি মহিষাসুরকে খুঁজে বেড়ান।