বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) এবং যীশু সেনগুপ্ত (Jisshu Sengupta)। দু’জনেই অভিনয় করেছেন একাধিক সুপারহিট ছবিতে, নিজেদের দক্ষতার মাধ্যমে তৈরি করেছেন পরিচিতি। যীশু তো এখন টলিউডের গণ্ডি পেরিয়ে বলিউড, দক্ষিণ ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করছেন। তবে একসময় বাংলার এই প্রতিভাবান অভিনেতার কেরিয়ার (Career) নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছিল প্রসেনজিতের বিরুদ্ধে।
বুম্বাদা টলিউডের চর্চিত তারকাদের মধ্যে একজন। তাঁর বাবা তথা অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলিউডে রাজত্ব করলেও, ছেলে রাজ্যপাট বিস্তার করেছেন টলিউডেই। অনেক সময় আবার তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগও। বুম্বাদার ষড়যন্ত্রের জন্য নাকি অনেক অভিনেতা কেরিয়ারে এগোতে পারেননি। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়।
যদিও অভিষেক একা নন, প্রসেনজিতের বিরুদ্ধে ‘অবিচার’ করার অভিযোগ এনেছেন অনেকেই। এমনকি এও শোনা গিয়েছিল, যীশুর কেরিয়ারও নষ্ট করতে চেয়েছিলেন তিনি। চিরকাল তাঁকে নিজের ভাই বানিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন ‘ইন্ডাস্ট্রি’ বুম্বাদা, কখনও হিরো হতে দেননি। এই অভিযোগ যীশু নিজে করেননি, বরং তাঁর কানে একথা এসেছিল।
এরপর বনি সেনগুপ্তের শোয়ে এসে এই বিষয়ে মুখ খোলেন যীশু। অভিনেতা সাফ বলেন, ‘অ্যান্টি বুম্বাদা’ অনেকেই তাঁর কান ভাঙানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে বলেছিলেন, বুম্বাদা তাঁকে ভাই বানিয়েই রেখে দিচ্ছেন, নায়ক হতে দিচ্ছেন না। তবে এসব কথাকে পাত্তা দেননি যীশু। বরং প্রসেনজিৎকে চিরকাল নিজের বড় দাদার মতোই দেখেছেন তিনি। শুধুমাত্র কাজের ক্ষেত্রেই নয়, জীবনের অন্যান্য সময়েও বুম্বাদাকে পাশে পেয়েছেন অভিনেতা।
যীশু সাফ বলেছিলেন, প্রসেনজিৎ কখনও তাঁর কেরিয়ার নষ্ট করতে পারেন না। বরং সমসময় তাঁকে গাইড করেছেন। কথার প্রসঙ্গেই একটি ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন অভিনেতা। সেবার যীশুর দু’টি ছবির শ্যুটিং শিডিউল ক্ল্যাশ করেছিল। একইদিনে কলকাতা এবং মাইসোরে শ্যুটিং পড়েছিল তাঁর।
আসলে হরনাথ চক্রবর্তী এবং অনুপ সেনগুপ্তের দু’টি ছবির শিডিউল পরপর রেখেছিলেন যীশু। কিন্তু কলকাতায় হরনাথের ছবি শ্যুটিং শেষ হতে একদিন বেশি লেগে যায়। এদিকে মাইসোরের শ্যুটিংয়ে যেতেই হবে অভিনেতা। সেখানে আবা মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে শ্যুটিং ছিল তাঁর। দুই পরিচালককেই এই সমস্যার কথা বলেছিলেন, কিন্তু কেউ কোনও কথা শুনতে রাজি ছিলেন না।
এমতাবস্থায় যীশু ভাবেন তাঁর কেরিয়ারে বুঝি ইতি পড়ে গেল! সাত পাঁচ না ভেবে প্রসেনজিতের পায়ে পড়ে যান তিনি। কাঁদতে কাঁদতে বুম্বাদাকে বলেন। ‘বুম্বাদা আমার কেরিয়ার শেষ। আর কিচ্ছু হবে না’। তাঁর কান্না থামিয়ে সমস্ত কথা শুনে অনুপবাবুকে ফোন করেন তিনি। এরপর দু’দিকের শ্যুটিং ম্যানেজ করে দেন প্রসেনজিৎইই। ‘ইন্ডাস্ট্রি’র কথা শুনে রাজি হয়ে যান বনির বাবাও। এরপর তিনি যখন অনুপবাবুর মুখোমুখি হয়েছিলেন, তখন পরিচালক তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুই বুম্বাদার কাছে কাঁদছিলি কেন?’ এই ঘটনা শুনে হেসে লুটোপুটি খেয়েছিলেন বনি। সেই সঙ্গেই এও প্রমাণিত হয়েছিল, প্রসেনজিৎকে নিয়ে কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার যে গুঞ্জন শোনা যায় তা একেবারেই সত্যি নয়।