ভারতীয় সঙ্গীত জগতীর দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন আর ডি বর্মণ (R D Burman) এবং কুমার শানু (Kumar Sanu)। দু’জনেই বাংলার গর্ব। দু’জনেই নিজেদের প্রতিভার মাধ্যমে বলিউডে কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পীদের নামের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। কুমার শানুর নামে তো আবার একটি বিশ্বরেকর্ডও রয়েছে। একই দিনে ২৮টি গান গেয়ে একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। সেই রেকর্ড আজও অক্ষত রয়েছে।
নিজের সুবিশাল কেরিয়ারে প্রায় ২১ হাজারের কাছাকাছি গান গেয়েছেন শানু। প্রায় প্রত্যেকটি গানের রেকর্ডিংয়ের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে নানান অজানা কাহিনী। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অতীতের সেই অজানা কাহিনীগুলি থেকেই পর্দা সরিয়েছেন শানু। সেই সঙ্গেই শেয়ার করেছেন কিংবদন্তি আর ডি বর্মণের সঙ্গে জড়িত একটি কাহিনী।
শানু বলেন, অনেক সময় অত্যন্ত ব্যস্ত দিনেই গানের রেকর্ডিং করতে হতো। তবে তখন কিন্তু তাঁরা জানতেন না গানটি আদৌ হিট হবে নাকি ফ্লপ! তবে হিট-ফ্লপ মিশিয়ে প্রায় সকল গানের সঙ্গেই যে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে তা স্বীকার করে নেন গায়ক। অনেকেই জানেন, ‘আশিকী’ ছবির ‘নজর কে সামনে জিগর কে পাস’ গানটি শানুর প্রথম প্লেব্যাক গান।
শানু জানান, এই গানটি তিনি যখন রেকর্ড করছিলেন, তখন সঙ্গীত পরিচালক নাদিম-শ্রবণ চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘ইউ আর এ টাইগার’। এরপর থেকেই নাকি গায়কের নামের সঙ্গে ‘টাইগার’ উপাধিটি জুড়ে যায়। এখানেই শেষ নয়, রেকর্ডিং হয়ে যাওয়ার পর নাকি নাদিম-শ্রবণ প্রচুর নোটও উড়িয়েছিলেন।
একই সাক্ষাৎকারে আরও একটি ঘটনা শেয়ার করেন শানু। সেটি আবার কিংবদন্তি আর ডি বর্মণের সঙ্গে জড়িত। সেই ঘটনাটি ঘটেছিল, ‘এক লড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লগা’র রেকর্ডিংয়ের সময়। শানুর কথায়, ‘পঞ্চম দা (আর ডি বর্মণ) রেকর্ডিং রুমে এসে আমায় বলেছিলেন, ‘এই গানে অনেকগুলো ‘জ্যায়সে’ শব্দ রয়েছে। যেমন ‘জ্যায়সে খিলতা গুলাব, জ্যায়সে শায়ের কা খোয়াব, জ্যায়সে উজলি কিরণ, জ্যায়সে বন মে হিরণ…’। এই প্রতিটি ‘জ্যায়সে’ আমার একে অপরের থেকে আলাদা চাই। এটা করা গেলেই গানটা হিট হবে’।
আর ডি বর্মণের কথা শুনে তেমনভাবেই গেয়েছিলেন শানু। এরপর তিনি রেকর্ডিং রুম থেকে বেরিয়ে আসা মাত্র আর ডি বর্মণ তাঁকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুম্বন দেন। আর এরপরই শুরু হয় তাঁর গালাগাল দেওয়া! প্রথমে খানিক থতমত খেয়ে যান গায়ক। গান ভালো গাইলে এমন গালাগাল কেন দিচ্ছেন? আসলে কিংবদন্তি আর ডি বর্মণের স্বভাব এমনই ছিল। গান পছন্দ হলে মনের আনন্দে গালাগাল দিতেন। তাও একেবারে বাবা-মা তুলে! প্রথম শানুও নাকি বিষয়টায় বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে পুরো ব্যাপারটা জানার পর আশ্বস্ত হন তিনি।