একদিকে করোনার (Covid 19) ভয়, অন্যদিকে লকডাউনের (Lockdown) জেরে নেই কাজ। সবমিলিয়ে মহামারিকালে কার্যত ধুঁকছে গোটা বিনোদন জগত। চারপাশের এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে মানুষের নিজেকে ব্যস্ত রাখার একমাত্র উপায় হল কাজে ব্যস্ত থাকা। শিল্পীরাও তার ব্যাতিক্রম নন। আর এই কর্মহীনতার জেরে রীতিমতো দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়েই দিন কাটাচ্ছেন অনেক শিল্পীই।
বাংলা সিনেমা জগতের এমনই একজন পরিচিত মুখ হলেন সুমিত সমাদ্দার (Sumit Samaddar)। ‘ভূতের ভবিষ্যত’ সিনেমার ভূতনাথ ভাণ্ডারিকে হোক কিংবা ‘বাইশে শ্রাবণ’ সিনেমার কানাই হোক দাপুটে এই অভিনেতার অভিনয় দক্ষতার কথা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কমেডি হোক বা ভিলেন, যে কোনো চরিত্রকেই নিজের ১০০ শতাংশ দিয়ে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে সিদ্ধহস্ত এই দক্ষ অভিনেতা।
তবে পেশাগতভাবে তিনি হলেন চরিত্রাভিনেতা। তাই খুব বেশিদিনের কাজ তাঁর হাতে থাকে না। তবে বাকি সময়টা ধারাবাহিকে চুটিয়ে অভিনয় করেই কাটিয়ে দেন তিনি। কিন্তু করোনার কোপে কাজ হারিয়েছেন তিনিও। গতবছর পুজোয় শেষ কাজ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত তাঁর কাছে কোনও কাজের অফার আসে নি। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিকল্প পেশা বেছে নেওয়ার কথা ভাবছেন অভিনেতা
জানা গেছে বিকল্প কাজের সন্ধানে তিনি এখন একটি অ্যাপে ছোটদের জন্য গল্প পড়ে শোনাচ্ছেন। তবে এই কাজে বেতন যেমন কম তেমনি দিন শেষ হচ্ছে তাঁর সঞ্চয়। এপ্রসঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন ‘আমার মত অনেক শিল্পীরই একই অবস্থা। সমবণ্টন বলে একটা কথা ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে যা এখন আর নেই। ফোরাম অনেকের পাশে রয়েছেন, তবে কর্ম বণ্টনও জরুরি। সবাইকে কাজ দেওয়া সম্ভব নয়, তবে কিছু অভিনেতার বসে থাকাটা সত্যিই দূর্ভাগ্যজমক। সব পেশাতেই এখন একইরকম অবস্থা।’
উল্লেখ্য সুমিত সমাদ্দার শুধুমাত্র একজন তুখোড় অভিনেতাই নয় একটা সময় দীর্ঘদিন মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। ‘অভিলাসা’ নামে একটি ব্যান্ডও ছিল তাঁর। রাঘব চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় গান ‘চাঁদ কেন আসেনা আমার ঘরে’ গানটিও তাঁর লেখা। রূপঙ্কর, শুভমিতার মত শিল্পীরাও তাঁর লেখা গান গেয়েছেন একটা সময়।এছাড়া দীর্ঘদিন গীতিকার হিসাবেও কাজ করার পাশাপাশি দেবজ্যোতি মিশ্রর সঙ্গে সহযোগী হিসাবে ৮ বছর কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় এত গুণী শিল্পী হয়েও আজ ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মহীন তিনি।