হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে আজ পর্যন্ত অনেক গুণী শিল্পী এসেছেন আবার কালের নিয়মে অনেকেই হারিয়ে গিয়েছেন। তবে এমন অভিনেতার সংখ্যা খুবই কম যারা দর্শকদের হৃদয়ে পাকাপাকিভাবে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন। হিন্দি সিনেমা জগতের এমনই একজন দিগ্গজ অভিনেতা হলেন প্রাণ। আজ এই কিংবদন্তি অভিনেতা আর জীবিত না থাকলেও তাঁর কাজই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে দর্শকদের হৃদয়ে।
হিন্দি সিনেমা জগতের এই কিংবদন্তি অভিনেতা ১৯২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দিল্লির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই হিসাব মত আজ যদি এই বর্ষীয়ান অভিনেতা জীবিত থাকতেন তাহলে তাঁর বয়স হত ১০২ বছর। জানা যায় নিজের দীর্ঘ অভিনয় জীবনের দুর্দান্ত সফরে ৩৫০ টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন প্রাণ। রূপোলি পর্দার বেশীরভাগ সিনেমাতেই প্রাণ সাহেবকে নেতিবাচক চরিত্রে দেখা গিয়েছে।
তাই আজ পর্যন্ত হিন্দি সিনেমা জগতের সেরা খলনায়কের প্রসঙ্গ উঠতেই প্রথমেই আসে প্রাণ সাহেবের নাম। খলনায়কের চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজও মন ছুঁয়ে যায় দর্শকদের।সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০০১ সালে পদ্ম পুরস্কার পেয়েছিলেন অভিনেতা। পাশাপাশি হিন্দি সিনেমার সবচেয়ে বড় সম্মান দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড ও পেয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় প্রাণ সাহেবকে ‘ভিলেন অফ দ্য মিলেনিয়াম’ (Villain of the Milanium)-এর টাইটেল দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য অনেকেই হয়তো জানেন না প্রাণ সাহেবের সম্পূর্ণ নাম হল প্রাণ কৃষ্ণ সিকন্দ। হিন্দি সিনেমা জগতে পা রাখার আগে প্রাণ পাঞ্জাবি সিনেমাতেও কাজ করেছেন। জানা যায় সিনেমা জগতে আসার আগে প্রাণ মুম্বইয়ের মরিন ড্রাইভের একটি হোটেলে কাজ করতেন। সেখানে দিন বেশ কয়েক মাস কাজ করেছিলেন।এমন সময একদিন তিনি যখন একটি পানের দোকানে বসেছিলেন তখন সেখানে পাঞ্জাবি ছবির লেখক মোহাম্মদ তাকে দেখে নিজের সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ দেন।
সেসময় অর্থাৎ ১৯৪২ সালে নিজের ফিল্মি কেরিয়ারে প্রথম পাঞ্জাবি সিনেমা ‘ইয়ামলা যট’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। এরপর বলিউডে ডেবিউ করার আগে পর্যন্ত অর্থিৎ ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত মোট ২২ টি সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে ফেলেন প্রাণ সাহেব।এরপর দেশ ভাগের পরের বছর অর্থাৎ ১৯৪৮ সালে দেব আনন্দের সিনেমা ‘জিদ্দী’তে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।