ইস্টবেঙ্গল নাকি মোহনবাগান, সেরা কে? যুগ যুগ ধরে এই নিয়ে বাঙালিদের মধ্যে তর্কবিতর্ক চলেই আসছে। তবে একসময় ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতোই বাঙালির ডিবেটের একটি বিষয়বস্তু ছিলেন উত্তম কুমার (Uttam Kumar) এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee)। দু’জনেই যে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) কিংবদন্তি অভিনেতা তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। কিন্তু দু’জনের মধ্যে সেরা কে? তা নিয়ে অনুরাগীদের মধ্যে চর্চা চলতই।
প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্রর মতে অবশ্য সম্পূর্ণ বিষয়টি ছিল নিছকই ‘কম্পিটিটিভনেস’। তবে অনুরাগীদের মধ্যে এত তর্কবিতর্ক হলেও দুই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর মধ্যেকার সম্পর্ক কেমন ছিল? শোনা যায়, সেই সম্পর্ক ছিল কখনও রোদের মতো উজ্জ্বল, আবার কখনও ঢেকেছে মেঘের কালো ছায়ায়। তবে যাই হোক না কেন, টলিউডের এই দুই কিংবদন্তি কিন্তু চিরকাল নিজেদের দাদা-ভাই বলেই মেনেছেন।
যদি সৌমিত্রর কথা বলা হয়, তাহলে শুধুমাত্র ‘মহানায়ক’এর সঙ্গেই নয়, ‘টুনটুনি বৌদি’ অর্থাৎ উত্তম কুমারের স্ত্রী গৌরী দেবীর (Gauri Devi) সঙ্গেও তাঁর দারুণ সম্পর্ক ছিল। পুরনো প্রতিবেদন ঘাঁটলে জানা যায়, একবার নাকি তাস খেলতে বসে দেওরের ‘চুরি’ ধরে ফেলেছিলেন গৌরী দেবী। আর ব্যস, এরপরই অভিনেতাকে তাড়া করেন তিনি।
সেই সময় নাকি ‘চারুলতা’ অভিনেতা চিৎকার করে বলেই ফেলেন, ‘আরে ইয়ে পাগলি হ্যায়, বাঁচাও!’। উল্লেখ্য, অনেকেই হয়তো জানেন না কিংবদন্তি উত্তম কুমারের উচ্চারণের সামান্য সমস্যা ছিল। সেই কারণে মাঝেমধ্যে তিনি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীনও হয়েছেন। শোনা যায়, ‘দেবদাস’ ছবির সংলাপ রেকর্ড করার সময় নাকি বেশ ঝামেলায় পড়েছিলেন তিনি।
একে তো বড় সংলাপ, তার ওপর কিছুতেই তা নিখুঁত হচ্ছে না। এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত তাঁর রাগ নাকি গিয়ে পড়েছিল সৌমিত্রর ওপর। রাগের বশে নাকি তাঁকেই রেকর্ডিং রুম থেকে বের করে দিয়েছিলেন। শোনা যায়, আর একবার প্রকাশ্যেই তিনি সৌমিত্রকে বলেন, ছোট ভাইয়ের মতো দাদার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা উচিত। তবে পর্দার ‘ফেলুদা’র কথায়, এসবের মধ্যে কোনও কথাই তিনি আর মনে রাখেননি।