ঊষসী চক্রবর্তী, অভিনেত্রী ঊষসী বা নিজের জুন আন্টি পরিচয়ের বাইরেও তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি একজন আদ্যপ্রান্ত বামপন্থী পরিবারের মেয়ে, এবং তার বাবা প্রয়াত শ্যামল চক্রবর্তী ছিলেন সিপিআইএমের বর্ষীয়ান নেতা। দু’বছর হল বাবা হারা হয়েছেন অভিনেত্রী। এবছর জন্মদিনটা একেবারে অন্যভাবে কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জুন আন্টি।
জন্মদিন উদযাপনে গোয়ার সমুদ্র সৈকতে হাতে সিগারেট নিয়ে, বিকিনি পরে হট লুকে ছবি দিয়ে নেটজনতাদের কটাক্ষের মুখে পড়েছিলেন ছোট পর্দার দাপুটে খলনায়িকা জুন আন্টি। শহরের কোলাহল থেকে দূরে নিরিবিলিতে জন্মদিন উদযাপনের জন্য এবছর অভিনেত্রীর গন্তব্য ছিল সমুদ্র শহর গোয়া(Goa)। তবে ঊষসীর এই আধুনিকতা অনেকেই ভালো চোখে দেখেননি।
নেটিজেনদের একাংশ আবার অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তীর ( Ushasie Chakraborty)প্রয়াত বাবা তথা কমরেড শ্যামল চক্রবর্তীকে টেনে এনে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। বাবার আদর্শ বরবাদ করছেন ঊষসী এমন কথাও শুনতে হয়েছে তাকে। এমতাবস্থায়, বাবার আদর্শের কথা মাথায় রেখেই নেটিজেনদের মুখতোড় জবাব দিলেন ঊষসী।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের উত্তর দিতে লম্বা পোস্ট লেখেন ঊষসী। মাথা উঁচু করে বাবার পাশে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি থেকে, সাদা কালো বেশ কিছু ছবি শেয়ার করে ঊষসী জানান, ‘বামপন্থী পরিবারে বড় হওয়ার সুবাদে এবং প্রায় সাত বছর বামপন্থী রাজনীতি ও লিঙ্গরাজনীতি নিয়ে গবেষণা করার সুবাদে ( এম ফিল ও পি এইচডি করার সূত্রে) আমি এটাই বুঝেছি ও শিখেছি যে মেয়েদের পোষাক নিয়ে অযথা খাপ পঞ্চায়েত খোলা আর যাই হোক বাম রাজনৈতিক ঘরানার সংস্কৃতির মধ্যে পড়েনা।’
বাবার প্রসঙ্গে ঊষসীর বক্তব্য, ‘আমার বাবা কে যাঁরা ঘনিষ্ট ভাবে চিনতেন তাঁরা অবশ্যই জানেন যে উনি কতটা উদার মনের মানুষ ছিলেন আর এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের সাথে কতটা সহজ ভাবে মিশতে পারতেন। সে কারণেই বোধহয় ওঁর বন্ধু তালিকা ছিল দীর্ঘ এবং তাঁদের মধ্যে অনেকের বয়স এমনকি আমার চেয়েও কম ছিল ।আমার বাবা কোনোদিন আমার জীবনকে কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন নি এবং আমি কি পোষাক পরব এই নিয়ে কোনো মতামত ও দেন নি। তাই বামপন্থী পরিবারের মেয়েরা হাফপ্যান্ট পরতে পারবেন না বা সমুদ্র স্নানে গিয়ে সাঁতারেব পোষাক পরতে পারবেন না এ-হেন হাসির কথা আমার বাবা তো দূরস্থান কোন আন্তর্জাতিক বা জাতীয় বামপন্থার বইতেও আমি কস্মিনকালে শুনিনি বা পড়িনি।’
তাই তার সাফ জবাব, ‘শিখেছি স্বাধীনভাবে পোশাক নির্বাচন করতে এবং রবীন্দ্রজয়ন্তীতে, শিক্ষাঙ্গনে, আইন সভায় বা সমুদ্র তটে পরিবশের সাথে মানানসই ভাবে সাজতে। আর হ্যাঁ, সেই সঙ্গে ঘৃণা করতে শিখেছি সেই সব সিউডো বামপন্থার ধবজাধারীদের যাঁরা নিজেদের ভিতরে পিতৃতন্ত্রের বীজ বহন করে মেয়েদের চালচলন পোষাক আষাক নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করে যেখানে সেখানে খাপ পঞ্চায়েত খোলেন। এই জাতীয় চিন্তাভাবনা দক্ষিণপন্থীদের শোভা পায়, বামপন্থীদের নয়।’