বাংলা টেলিভিশনের সিরিয়ালপ্রেমি দর্শকদের অত্যন্ত পছন্দের একজন অভিনেতা হলেন দেবোত্তম মজুমদার (Debottam Majumder)। বর্তমানে তাঁকে দেখা যাচ্ছে দু’দুটি সিরিয়ালে। একদিকে তিনি অভিনয় করছেন ‘সোহাগ চাঁদ’ (Sohag Chand) সিরিয়ালে নায়ক চাঁদের দাদা সূর্যের (Surjo)চরিত্রে অন্যদিকে লীনা গাঙ্গুলীর লেখা স্টার জলসার অন্যতম জনপ্রিয় বলা ভালো চর্চিত ধারাবাহিক ‘গুড্ডি’ (Guddi)-তে নতুন নায়ক যুধাজিৎ (Judhajit)-এর চরিত্রে দেখা যাচ্ছে এই অভিনেতাকে।
প্রসঙ্গত দেবোত্তম বরাবরই একজন ভালো মানের অভিনেতা। থিয়েটার থেকে উঠে আসা এই অভিনেতার অভিনয় জীবনের বয়স দেখতে দেখতে পেরিয়েছে প্রায় ১৪ বছর। ছোটপর্দায় প্রথম অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর হাত ধরে ইটিভি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ দিয়ে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক কাজ এসেছে হাতে। তবে আজ পর্যন্ত দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবনে দেবোত্তমের নিজের কথায় তাঁর অভিনীত সবচেয়ে প্রিয় ধারাবাহিক হল ‘কেয়া পাতার নৌকা’ (Keya Patar Nouka)।
লীনা গাঙ্গুলির লেখা এই ধারাবাহিকে অভিনয় করার পর রাতারাতি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি।তাছাড়া দেশভাগের মত একটা সংবেদনশীল বিষয় আর চরিত্রের অনেকগুলি শেড থাকায় অভিনয় করতে নিজেও খুবই উপভোগ করেছিলেন অভিনেতা। সম্প্রতি টলিটাইম নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে ধরা দিয়েছিলেন অভিনেতা। সেখানে তিনি নিজের স্ট্রাগল (Struggle) লাইফের অজানা কথা (Unknown Facts) কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছেন একটা সময় তিনি টানা ৩ বছর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিভের কাজ করতেন।
কিন্তু যেহেতু থিয়েটার করার অভ্যাসটা তার ছিলই তাই একটা সময় তার মনে হয়েছিল কোন চাকরি নয় তিনি শুধু অভিনয় করতে চান। একদিন সকালে হঠাৎ করেই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। প্রথম দিকে বাড়িতে বাবা-মা দুশ্চিন্তা করলেও সেই সময় অভিনয় জীবনের শুরুতে স্ট্রাগল লাইফে দেবোত্তম পাশে পেয়েছিলেন তার তৎকালীন প্রেমিকা আর বর্তমানের স্ত্রী। প্রসঙ্গত দেবোত্তম নিজে আদ্যোপান্ত ভীষণ ফ্যামিলি ম্যান। ইন্ডাস্ট্রিতে তার বন্ধুবান্ধব সংখ্যাও খুবই কম।
মেয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়েই বেশিরভাগ সময়টা কাটাতে ভালোবাসেন তিনি। তবে পুরনো দিনের স্ট্রাগলের কথা বলতে গিয়ে এদিন অভিনেতা জানান সে সময় একবার এনটিওয়ানন স্টুডিওতে কোন একজন অভিনেতার সাথে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন।
কিন্তু সেসময় তাকে সেখানকার অফিসের একজন তাকে ঢুকতে তো দেয়নি বরং চরম অপমান করেছিল। অভিনেতার কথায় শুধু ধাক্কা দিতেই বাকি রেখেছিলেন। সেদিন ওই ব্যক্তির ব্যবহারে চোখে জল এসে গিয়েছিল অভিনেতার। আর এতদিন পর অন ক্যামেরায় এদিন তাকেই ধন্যবাদ জানিয়ে দেবোত্তম বলেছেন সেদিনের ওই ব্যবহারটার জন্যই নাকি আজ তিনি জীবনে অনেক কিছু পেয়েছেন। দেবোত্তম জানান যে কোন শিল্পীর জন্যই সাফল্য লাভের আগে জীবনে ধাক্কা খাওয়া অপমানিত হওয়া ভীষণ জরুরী।