বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) অত্যন্ত নামী এবং জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী (Actress) হলেন ডলি বসু (Dolly Basu)। প্রচুর সিনেমা, সিরিয়ালে তাঁকে দেখেছেন দর্শকরা। নিজের তুখোড় অভিনয়ের মাধ্যমেই স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করেছেন তিনি। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, ডলি পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) জ্যোতি বসুর (Jyoti Basu) পুত্রবধূ। তিনি চাইলেই বড় রাজনীতিবিদ হতে পারতেন, কিন্তু অভিনয়কে ভালোবেসে আপন করে নেন ডলি।
১৯৫৬ সালে দক্ষিণ কলকাতার একটি অবাঙালি পরিবারে জন্ম ডলির। তবে ছোটবেলা থেকেই বাঙালি সংস্কৃতি, নাট্যচরচার প্রতি অগাধ টান ছিল তাঁর। শোনা যায়, এই বিষয়ে ডলিকে উৎসাহ যোগান দিতেন তাঁর বাবা। বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনে পড়াশোনা করার সময় থেকেই পাড়ার অনুষ্ঠান কিংবা স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন ডলি। নাটকের প্রতি ছিল তাঁর প্রবল টান। কিন্তু হঠাৎ প্রয়াত হন তাঁর বাবা। তাঁর পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে!
বাবার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে জাহাজে কাজ নেন ডলির দাদা। শুরু হয় মা-মেয়ের একা থাকার লড়াই। এরপর কলেজে পড়াশোনা করার সময় জ্যোতি বসুর পুত্র চন্দনের সঙ্গে আলাপ হয় ডলির। খুব কম বয়সেই সাত পাকে বাঁধা পড়েন তাঁরা।
একসঙ্গে প্রায় দু’দশক সংসার করার পর ছিন্ন হয় ডলি এবং চন্দনের বিবাহবন্ধন। যদিও সংসার ভাঙার আগেই পুরোদমে নাটকের কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। ‘চুপকথা’ নামের একটি নাটকের দলও গঠন করেছিলেন জ্যোতি বসুর পুত্রবধূ। যদিও শুধুমাত্র নাটকেই সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি। টেলিভিশন সিরিয়াল এবং সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন ডলি।
জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘রাশি’তে অপলা রায়ের চরিত্রে ডলিকে দেখেছেন দর্শকরা। এছাড়াও ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘অনুরণন’, ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মন্দবাসার গল্প’য় অভিনয় করেছেন তিনি। যদিও বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল পর্দা থেকে দূরে রয়েছেন এই নামী অভিনেত্রী।
মাস খানেক আগে এক নামী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় অবশ্য ডলি বলেছিলেন, মনের মতো গল্প পেলে ফের পর্দায় ফিরবেন তিনি। অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের দিক থেকে বলা হলে, তাঁর তিন মেয়ে বিয়ে এবং কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। গত প্রায় এক দশক ধরে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। অভিনয়, বাগান, গল্পের বই এবং বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের নিয়েই সময় কাটছে ডলি বসুর।