বাংলা সিরিয়ালপ্রেমী দর্শকদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত মুখ অভিনেত্রী রূপসা চক্রবর্তী (Rupsha Chakraborty)। ছোটপর্দার দর্শক তাঁকে বৌমণি (Boumoni) হিসাবেই বেশি চেনেন। সুন্দরী হওয়ার পাশাপাশি তাঁর সাবলীল অভিনয় দক্ষতা মুগধ করে রেখেছে বাংলা সিরিয়ালের দর্শকদের। বেশিরভাগ সিরিয়ালেই কখনও ননদ, কখনও বৌদি আবার কখনও বা জায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে।
তবে টেলিদুনিয়ার এই অভিনেত্রীর রয়েছে আরও একটি বিশেষ পরিচয়। তিনি হলেন বাংলা বিনোদন জগতের জনপ্রিয় পরিচালক প্রযোজক স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর (Snehashish Chakraborty) স্ত্রী। প্রসঙ্গত বিনোদন জগতে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সংস্থা ‘ব্লুজ প্রোডাকশন হাউস’-সম্পর্কে নতুন করে কিছুই বলার নেই।‘রাখিবন্ধন’, ‘বেনে বউ’, ‘খোকাবাবু’, ‘জড়োয়ার ঝুমকো’, ‘তুমি রবে নীরবে’, ‘তা বলে কি প্রেম দেব না’, ‘ভালবাসা ডট কম’, ‘টাপুর টুপুর’-সহ একধিক প্রথম সারির ধারাবাহিক উপহার দিয়েছে তাঁর সংস্থা ৷
দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবনে বেশিরভাগ ধারাবাহিক এই পজেটিভ চরিত্রে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রী রূপসা চক্রবর্তীকে। তবে ইদানিং তাকে দেখা যাচ্ছে জি বাংলার ‘জগদ্ধাত্রী’ সিরিয়ালে ভীষণ গুরুগম্ভীর, বদমেজাজি এক মহিলা কৌশিকী চরিত্রে। এই চরিত্রটিতে সারাক্ষণ রাগারাগি আর চিৎকার চেঁচামেচি করতে দেখা যায় তাকে। এমনিতে সবসময়ই নেগেটিভ চরিত্রে নানা ধরনের শেড থাকে। আর তাই এমন একটি নেগেটিভ রোল পেয়ে বেশ খাটতে হচ্ছে রুপসাকেও।
সম্প্রতি টলি টাইমের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন জীবনের নানান অজানা কাহিনী (Unknown fact)। অভিনেত্রী জানিয়েছেন পর্দার কৌশিকী আর বাস্তব জীবনের রূপসার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। আসলে রূপসা চক্রবর্তী খোকাবাবু সিরিয়ালের বৌমনি চরিত্রের মত। অভিনেত্রীর কথায় ওই সিরিয়ালে নাকি তাকে অভিনয়ই করতে হয়নি। কারণ তিনি আসলেই ঐরকম। কিন্তু এই ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে যখনই তিনি সেটে আসেন তখনই তাকে বেশ খানিকটা এনার্জি নিয়ে আসতে হয়।প্রসঙ্গত অনেকেই হয়তো জানেন না অভিনয়,রান্নার অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার পাশাপাশি দারুন গানের গলাও রয়েছে রূপসা চক্রবর্তীর। একসময় তিনি নিয়মিত গান শিখতেন। এমনকি স্বামী স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর কাছে একসময় গানের তালিমও নিয়েছিলেন।
একসময় গান শিখতে শিখতেই বিয়ে হয়ে যায় সেই গানের মাস্টারমশাইয়ের সাথে। অভিনেত্রী জানিয়েছে ৬ থেকে ৭ মাস গান শেখার পেরি বিয়ে গিয়েছিল তাঁদের।বরাবরই গান বাজনা নিয়েই থাকতে ভালোবাসতেন তিনি। তাই মাস্টার্স পড়তে পড়তেই বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তিনি হাউস ওয়াইফই ছিলেন। যদিও তার পরিবারের ব্যাকগ্রউন্ড ছিল অভিনয়। বাবা অলোক চট্টোপাধ্যায়নামি অভিনেতা, দাদু জেঠু এরা সকলেই নাটক করতেন। তবে তিনি নিজে কোনোদিন ভাবেননি অভিনয়ে আসবেন। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে অভিনয়ে তাঁর আশা তা হঠাৎই ছিল।
স্নেহাশিস চক্রবর্তীর প্রোডাকশনেই ‘কাছে আয় সই’ বলে একটা সিরিয়ালের হাত ধরে প্রথম অভিনয়ে হাতেওখোরি হয়েছিল তার। এটাও বেশ নেগেটিভ একটা চরিত্র ছিল। কিন্তু প্রথমে অভিনয়টাকে মজার ছলে নিলেও পরে স্বামী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে তাকে ঘরভর্তি লোকের সামনে বলেছিলেন খারাপ অভিনয় করলে ব্যাড দিয়ে দেবেন ,তখন তিনি চ্যালেঞ্জ করেই বলেছিলেন ‘দেখি তুমি আমাকে কেমন বাদ দিতে পারো’? তবে অভিনয়ের ক্ষেত্রে যেহেতু তিনি স্বামী স্নেহাশী চক্রবর্তীকে নিজের গুরু মানেনা তাই কোন নতুন অফার পেলে সব সময় তিনি সেটা স্বামী সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেন। তবে ভুল হলে বৌ বলে কিন্তু ছাড় পান না বরের কাছে। বকা খান তিনিও।
প্রসঙ্গত সোশ্যাল মিডিয়ায় ইদানিং প্রচলিত একটা শব্দ ট্রোলিং। এপ্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেছেন যাদের সম্পর্কে দর্শকরা খারাপ কথা খারাপ বলছেন তারা কিন্তু তাদের মনের অবস্থাটা একেবারেই বোঝে না। তাই হাসিমুখেই ট্রোলারদের অভিনেত্রী বলেছেন একটু সংযত হতে। সেইসাথে অভিনেত্রী জানিয়েছেন একটা সময় ছিল যখন তিনি নিজেও খারাপ মন্ত্যব্য শুনে কষ্ট পেতেন। কিন্তু এখন তিনি লোকের কথা জাস্ট ইগনোর করে এগিয়ে যান সামনের দিকে।