বাংলা বিনোদন জগতের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী হলেন শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)-কে। শ্রীলেখা মানেই বরারই স্রোতের বিপরীতে হাঁটা একজন মানুষ। ইন্ডাস্ট্রিতে স্পষ্টবাদী হিসাবে যথেষ্ট নাম রয়েছে টলি অভিনেত্রীর (Tolly Actress)। যার ফলে মাঝে মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় অভিনেত্রীকে। কিন্তু সেসব নিয়ে বরাবরই মাথা ঘামাতে নারাজ নায়িকা।
চারপাশে এখন বিয়ের মরশুম। কি সেলিব্রেটি, কি সাধারণ মানুষ একে একে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন সকলেই। সেই বিয়ের নেমতন্ন আসছে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রের কাছেও। এই কিছুদিন আগে সিপিএমের যুব নেতা শতরূপ ঘোষ এবং পেহেলি সাহার বিয়েতে নেমন্তন্ন পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু তখন অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন তিনি নাকি সেই বিয়েতে যাওয়ার জন্য গাড়ির চালক পাননি।
যদিও পরের দিনই বাড়ির মাসির নাতনির বিয়েতে গিয়েছিলেন শ্রীলেখা নিজেও এক সময় ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী। আজ থেকে ১৯ বছর আগে শ্রীলেখার সাথে বিয়ে হয়েছিল শিলাদিত্য সান্যালের (Shiladitya Sannyal)। বিয়ের দু-বছর পরেই অভিনেত্রীর কোল আলো করে আসে তাঁদের একমাত্র মেয়ে ঐশী। কিন্তু সেই বিয়ে টেকেনি। আজ থেকে ৭ বছর আগে ২০১৩ সালে ডিভোর্স হয় শ্রীলেখার। তারপর আর বিয়ে করেননি অভিনেত্রী।
বিয়ের পর শ্রীলেখা ছিলেন বড্ড বৌ বৌ টাইপের। সম্প্রতি টিভি নাইন বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে একথা নিজেই জানিয়েছেন অভিনেত্রী। কিন্তু চারদিকে এখন বিয়ের মরশুম, সানাইয়ের সুর। এই আবহে নিজের বিয়ে, থেকে বিবাদ বিচ্ছেদ সব মিলিয়ে অতীতের ঘটনা মনে পড়লে কি এখনও মন খারাপ হয় অভিনেত্রীর? এই প্রশ্নের উত্তরে শ্রীলেখা বলতে শুরু করেন ‘ভাবতে শুরু করলে কষ্ট হয়। কিন্তু এটাও তো ঠিক, এগুলো সবই আমার গত জন্মের কথা। আমি আর এগুলো নিয়ে সেভাবে ভাবতে চাই না। একটা সময় অনেকটা ভেবে কাটিয়েছি’।
কিন্তু এখন অভিনেত্রীর মনে হয়, ওটা হয়নি বলেই এখন তিনি জীবনে এমন অনেক কিছু পেয়েছেন যা হয়তো তিনি পেতেন না। অভিনেত্রীর কথায় ‘এই শক্তি, নিজের উপর আত্মবিশ্বাস, এগুলো বেড়েছে। আগে কিন্তু আমি ই-মেইলও করতে পারতাম না। সব কিছুর জন্যই শিলাদিত্যর সাহায্য চাইতাম। সেই আমিটা আর এই আমি নই। আমি পাল্টে গিয়েছি’।বিবাহ বিচ্ছেদের এত বছর পর অভিনেত্রীর গলায় খানিক অভিযোগের সুর। এদিন অভিনেত্রী দাবি করেন ‘লোকে আমাকে যেভাবে ফ্যান্টাসাইজ় করে, আমি কিন্তু সেটা নই’।
এরপরেই বিয়ের পরের দিনগুলোর পাতা উল্টে অভিনেত্রী বলতে শুরু করেন ‘কাজ করতাম। কাজের পর বাড়ি চলে আসতাম। আমার স্বামীর বন্ধুরাই ছিল আমার বন্ধু। আমার আলাদা কোনও জগৎ ছিল না। আমার জগতে শিলাদিত্যই ছিল নিউক্লিয়াস। ওকে কেন্দ্র করেই ছিল আমার দুনিয়া’। এছাড়া শ্রীলেখা নিজে দমদম ক্যান্টনমেন্টের মেয়ে আর তার স্বামী দক্ষিণ কলকাতার মতো অভিজাত এলাকার মানুষ। তাই তাদের মতপার্থক্য হওয়া ছিল স্বাভাবিক। যার ছোট্ট একটা উদাহরণ দিয়ে শ্রীলেখা জানান বিয়ের পর অনেকদিন পর্যন্ত তাঁর হাতে শাঁখা-পলা দেখে তার স্বামী বলেছিলেন ‘ভীষণ গাঁইয়া গাঁইয়া লাগে খুলে ফেল’। কিন্তু শ্রীলেখা ছোট থেকে নিজের মাকে ওভাবে দেখেই অভ্যস্ত। তবে বিচ্ছেদ হলেও প্রাক্তন স্বামীর সাথে এখনও বন্ধুত্ব আছে শ্রীলেখা।সদ্য মেয়ের জন্মদিনে একফ্রেমে ধরা দিয়েছিলেন দুজন।