• Srabanti Chatterjee Viral Video শ্রাবন্তী
  • অনুরাগের ছোঁয়াঅনুরাগের ছোঁয়া
  • নুসরত জাহান নুসরত
  • ফুলকিফুলকি
  • শুভশ্রীশুভশ্রী
  • ইচ্ছে পুতুলইচ্ছে পুতুল
  • নিম ফুলের মধুনিম ফুলের মধু
  • কার কাছে কইকার কাছে কই

পেটে থাকতে গর্ভপাত করতে চেয়েছিল মা! শশী কাপুরের বাস্তব জীবন যেন আস্ত সিনেমা

বলিউডের (Bollywood) ইতিহাসে প্রচুর অভিনেতা এসেছে, প্রচুর অভিনেতা (Actor) গিয়েছেন। কিন্তু দর্শকদের মনে রাজত্ব করতে পেরেছেন হাতে গোন কয়েকজন নায়কই। এমনই একজন শিল্পী হলেন শশী কাপুর (Shashi Kapoor)। রাজপুত্রের মতো দেখতে, ছিপছিপে চেহারা- শশী যে কত মহিলার হার্টথ্রব ছিলেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। আজ সেই অভিনেতারই ৮৫তম জন্মদিন। আজকের প্রতিবেদনে এই অভিনেতার জীবনেরই এমন কিছু অজানা কাহিনী তুলে ধরা হল যা এত বছর পর্দার আড়ালেই থেকেছে।

১৯৩৮ সালে ১৮ মার্চ পৃথ্বীরাজ কাপুরের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শশী। শোনা যায়, অভিনেতার মা রামসরণি কাপুর তাঁকে জন্ম দিতে চাননি। বহুবছর আগে একটি নামী সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় অভিনেতা বলেছিলেন, তাঁর মা যখন নিজের গর্ভাবস্থার কথা জানতে পেরেছিলেন প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কারণ দুই ছেলের মা হয়ে যাওয়ার পর আর কোনও সন্তানের দিতে চাননি রামসরণিদেবী। সেই কারণে গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

   

Shashi Kapoor, Shashi Kapoor mother

শশীর কথায়, সন্তানকে গর্ভেই শেষ করার জন্য সাইকেল থেকে, সিঁড়ি থেকে পড়ে যেতেন রামসরণিদেবী। মাঝেমধ্যে আবার গর্ভবতী অবস্থাতেই দড়ি ধরে লাফ দিতেন। কিন্তু মায়ের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে জন্ম নেন শশী। ছোটবেলায় অবশ্য তাঁর ঠাকুমা নাম দিয়েছিলেন, বলবীর রাজ কাপুর। তবে রামসরণিদেবীর সেই নাম পছন্দ না হওয়ায় ছেলেকে শশী নামটি দেন।

শশীর আগমনের খবরে খুশি না হলেও, জন্মের পর বাকি সকল মায়ের মতো ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন রামসরণিদেবী। ছেলেকে আদর করে ‘ফ্লুকি’ (কাকতালীয়) বলে ডাকতেন তিনি। কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই শশীর জন্ম হয়েছিল বলে এই নাম দিয়েছিলেন তাঁর মা।

Shashi Kapoor, Shashi Kapoor life story

শোনা যায়, অভিনয়ের পরিবেশে বড় হওয়ায় ছোট থেকেই অভিনয়ের দিকে আগ্রহ ছিল শশীর। কেরিয়ারের শুরুতে দাদা রাজ কাপুরের সিনেমা শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর বাবা পৃথ্বীরাজ কাপুরের থিয়েটারে অভিনয় শুরু করেন। থিয়েটারে কাজ করতে গিয়েই ১৯৫৫ সালে, মাত্র ১৮ বছর বয়সে জেনিফার কেন্ডেলের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। প্রথম দেখাতেই তাঁকে মন দিয়ে ফেলেছিলেন সুদর্শন এই অভিনেতা। পরবর্তীকালে তাঁকেই বিয়ে করেছিলেন তিনি। যদিও বিদেশি বৌকে প্রথম মেনে নিতে পারেননি পৃথ্বীরাজ কাপুর। তবে পরে জেনিফারকে মেনে নেন তিনি।

বিয়ের এক বছরের মধ্যে শশীর পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। তখনও নায়ক হিসেবে কেরিয়ার শুরু হয়নি তাঁর। ছেলের জন্মের পর বলিউডে কাজ খুঁজতে শুরু করেন শশী। অনেক লড়াই করে ‘গেস্ট হাউসে’ ছবিতে সহকারী পরিচালকের কাজ জোগাড় করেছিলেন। এরপর আরও বেশ কিছু ছবিতে সহকারী পরিচালকের কাজ করার পর ১৯৬১ সালে ‘ধর্মপুত্র’এর হাত ধরে নায়ক হিসেবে ডেবিউ হয় শশীর। কিন্তু রোম্যান্টিক নায়ক হিসেবে তাঁকে টাইপকাস্ট করে দেওয়ার জন্য শশী সিনেমায় কাজ করা বন্ধ করে দেন। কোনও নায়িকাও নাকি তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চাইতেন না।

Shashi Kapoor, Shashi Kapoor and Jennifer Kendal, Shashi Kapoor wife

সেই সময় প্রচণ্ড অর্থাভাবে ভুগতে শুরু করেছিলেন শশী-জেনিফাররা। অভিনেতার পুত্র কুণাল একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, অভাবের জন্য অভিনেতা শখের স্পোর্টস কার বিক্রি করে দিয়েছিলেন। জেনিফারও নিজের দামি দামি নানান জিনিস বিক্রি করতে শুরু করে দেন। সেই সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব অভিনেতা নন্দা। ‘জব ফুল খিলে’ ছবিতে শশীর সঙ্গে কাজ করেন তিনি। ছবিটি বক্স অফিসে হিট হওয়ার পর থেকে আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি অভিনেতাকে।

Shashi Kapoor, Shashi Kapoor life story

শশী এই দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক তারকা। ‘হিট অ্যান্ড ডাস্ট’এর মাধ্যমে হলিউডে পা রেখেছিলেন তিনি। কান চলচ্চিত্র উৎসবে মনোনীতও হয়েছিল সেই ছবি। কেরিয়ারে প্রচুর সাফল্য পেলেও শোনা যায়, স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পর প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলেন শশী। ২৮ বছর একসঙ্গে সংসার করার পর জেনিফার যখন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তখন শশী নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিয়ের কথাও কোনও দিন ভাবেননি। জীবনের শেষ ৩১টি বছর স্ত্রীয়ের স্মৃতি আগলেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন বলিউড সুপারস্টার।