আমাদের দেশের ভার্সাটাইল গায়কদের মধ্যে অন্যতম হলেন সোনু নিগম। তাঁর গানের জাদুতে মুগ্ধ গোটা দুনিয়া। আসলে গান তাঁর রক্তে ছিল ছোট থেকেই। কারণ সোনুর বাবা অগম কুমার নিগম এবং প্রয়াত মা শোভা নিগম দুজনেই ছিলেন গায়ক। তাই শৈশব থেকেই তাঁর মধ্যে গান গাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছিল। এছাড়া তিনি ছোটো থেকেই তাঁর বাবা-মাকে বিভিন্ন বিয়ে এবং আনন্য অনুষ্ঠানে গান গাইতে দেখে বড়ো হয়েছেন।
জানা যায় সোনু কোনো ধনী পরিবারের সন্তান ছিলেন না। তাই এমন একটা সময় ছিল যখন তাঁর বাবা-মায়ের তাঁকে গিটার বা তবলা কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিলনা। তাই সেইসময় তিনি বেঞ্চ বাজিয়ে অনুশীলন করতেন। পড়াশোনা, গানের রেওয়াজ , মঞ্চে গান গাওয়া এবং হারমোনিয়াম চর্চার মধ্যেই দিয়ে সোনুর শৈশব কেটেছে বলে জানা যায়। শৈশবে, সোনু নিগম ভারতীয় শাস্ত্রীয় গায়ক, ওস্তাদ গোলাম মুস্তফা খানের কাছে গানের তালিম নিয়েছিলেন।
মাত্র ৩ বছর বয়সে, সোনু নিগম মঞ্চে প্রথম পারফরম্যান্স করেন। সেবার একটি লাইভ শোতে তিনি তাঁর বাবার সাথে জনপ্রিয় গান, কেয়া হুয়া তেরা ওয়াদা গেয়েছিলেন বলে জানা যায়।জীবনে অনেক স্ট্রাগল করে আজ এই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন সোনু। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি মুম্বাই পাড়ি দিয়েছিলেন। কেরিয়ারের শুরুতেই তাঁকে কুমার সানু, উদিত নারায়ণ এবং অভিজিতের মতো কিংবদন্তি গায়কদের সাথে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এছাড়া সেসময় মিউজিক কম্পোজাররাও নতুনদের সহজে সুযোগ দিতে চাইতেন না।
পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে প্রথম একটি সিনেমায় গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সোনু। যদিও সিনেমাটি কখনো মুক্তি পায়নি। তবে, টি-সিরিজের মালিক, গুলশান কুমারের চোখে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। সোনুর গানের প্রতিভা দেখে তিনি এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি সোনুকে ‘বেওয়াফা সনম’ প্রজেক্টে গান গাওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। এরপর সেসময় সোনুর গলায় ‘আচ্ছা সিলা দিয়া’ গানটা ব্যাপক হিট হয়েছিল। মানুষের কাছে ধীরে ধীরে তিনি পরিচিতি পেতে শুরু করেছিলেন।
১৯৯৫ সালে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সোনুর সাথে পরিচয় হয় ১৫ বছরের ছোট বাঙালি কন্যা মধুরিমার। সেখানে প্রথম দেখাতেই মধুরিমাকে সোনুর ভালো লেগেছিল বলে জানা যায়। এরপর বন্ধুত্ব থেকে তাঁদের মধ্যে শুরু হয় প্রেমের সম্পর্ক। ২০০২ সালে ভ্যালেন্টাইনস ডে-র দিনই সোনু আর মধুরিমার বাগদান হয়।২০০৭ সালে সোনু ও মধুরিমার জীবনে আসে তাঁদের প্রথম সন্তান নিভান। কিন্তু একসময় সোনুর বিবাহিত জীবনে সমস্যা দেখা দিয়ছিল। যার অন্যতম কারণ ছিল সোনুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। শোনা যায়, গায়িকা সুনিধি চৌহান এবং স্মিতা ঠাকরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সোনু। তবে ছেলে নিভানের কথা ভেবে মধুরিমার সঙ্গে দাম্পত্য জীবনে ফিরে যান সোনু।