বাংলা বিনোদন জগতের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেন রুপা ভট্টাচার্য (Rupa Bhattacharya)। বাংলা টেলিভিশনের পাশাপাশি সিনেমাতেও একসময় কাজ করেছেন চুটিয়ে। তার দুর্দান্ত অভিনয় দক্ষতার তারিফ করেন বিশেষজ্ঞরাও। একটা সময় রাজনীতির মঞ্চেও দাপট দেখিয়েছেন তিনি। তবে লোক চক্ষুর আড়ালে সমস্ত শিল্পীর জীবনেই কোনো না কোনো অজানা লড়াই থাকে।
ব্যতিক্রম নন অভিনেত্রী রুপা ভট্টাচার্যও। দীর্ঘদিনের কঠোর পরিশ্রমের (Struggle) ফলে আজ ইন্ডাস্ট্রিতে তার নিজস্ব একটা পরিচিতি তৈরী হয়েছে। তবে তার জন্য একটা সময় তাকে যেতে হয়েছে চরম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে। তবে একথা সত্যি মানুষ সমস্ত লড়াই হাসিমুখে লড়ে নিতে পারে কিন্তু সেই লড়াইটা যখন নিজের কাছের মানুষদের সাথে হয় তখন যে কেউ ভিতর থেকেই একেবারে দুমড়ে মুচড়ে যায়।
ঠিক এমনটাই ঘটেছিল অভিনেত্রী রুপা ভট্টাচার্যের সাথে। একবার রচনা বন্দোপাধ্যায়ের (Rachna Banerjee) দিদি নাম্বার ওয়ান (Didi No 1)-এর মঞ্চে এসে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের (Personal Life) এই কষ্টের কাহিনী নিজের মুখে জানিয়েছিলেন রুপা। তার কথায় জানা যায় ছোট থেকেই তিনি নাকি এমন একটা পরিবেশের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছিলেন যেখানে দিনরাত তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হতো মেয়ে হওয়া এক প্রকার অভিশাপের মতো।
যার জন্য দিন রাত তাকে খোঁটা শুনতে হয়েছে নিজের পরিবারের কাছ থেকে। পেয়েছেন শুধু অবহেলা। ছোট থেকেই তার পরিবারের সবাই তাকে বোঝাতেন তিনি তার পরিবারের জন্য শুধু বোঝা ছাড়া কিছুই নয়। এমনকি দুবেলা দুমুঠো খাবারও পেতেন না ঠিক করে। খাবার হিসেবে যে টুকু জুটতো তা ছিল তার নিজের দাদার খেয়ে যাওয়া পাতের উচ্ছিষ্ট।
এমনকি এই কঠিন সময়ে নিজের মাকেও পর্যন্ত পাশে পাননি অভিনেত্রী। রুপা ভট্টাচার্যের কথায় তার যখন দশ বছর বয়স তখন থেকেই ঘাড় বোঝা নামাতে তার জন্য নাকি বিয়ের সম্বন্ধে দেখা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাই একটা সময় যখন অভিনেত্রীর সহ্যের সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যায়। তখন তিনি মনে জোড় আনেন এবং সিদ্ধান্ত নেন বাড়ি ছাড়ার।
সেই সময় মাত্র দেড় হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। তারপর শুরু হয় এক অন্য লড়াই। প্রথমে কলকাতার বুকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন অভিনেত্রী। পরবর্তীতে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা তার সাথে কোনো রকম যোগাযোগ রাখতে চাননি। দিদি নাম্বার ওয়ান এর মঞ্চে অভিনেত্রী এই কষ্টের কাহিনী শুনে চোখে জল এসে গিয়েছিল উপস্থিত অন্যান্য প্রতিযোগীদের। তাই এতকিছুর পরেও মনের মধ্যে অসম্ভব জোর নিয়ে অভিনেত্রী বলেন ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে দুহাত ভোরে অনেক কিছু দিয়েছে। তাই এই ইন্ডাস্ট্রিই তাঁর কাছে পরিবার। আর সিনেমাই তার দ্বিতীয় মা।