দেখতে দেখতে 900 কোটি পেরিয়েছে এস এস রাজামৌলি (S S Rajamouli) পরিচালিত ‘আরআরআর’ (RRR) ছবির বক্স অফিস কালেকশন। জুনিয়ার এনটিআর, রাম চরণ এর অভিনয় থেকে শুরু করে ছবির দুর্দান্ত কাহিনী ও ভিএফএক্স মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। সকলেই দক্ষিণী এই ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। দেশে তো বটেই বিদেশের মাটিতেও দারুন সাফল্য পেয়েছে ছবিটি। বিদেশী দর্শকেরাও ভারতীয় এই ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন।
ছবিতে জুনিয়ার এনটিআর (Jr NTR) ও রাম চরণের (Ram Charan) যে দুই চরিত্র দেখানো হয়েছিল তা ঐতিহাসিক ব্রিটিশ রাজ্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ওপর তৈরী এক কাল্পনিক কাহিনী। আর ছবিটি আসলে ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা আল্লুররী সীতারাম রাজু ও কোমরাম ভীম এর কাহিনী নিয়ে তৈরী। যেখানে রাজুর চরিত্রে দেখা গিয়েছে রাম চরণকে আর অন্যদিকে ভীম চরিত্রে দেখা মিলেছে জুনিয়ার এনটিআরকে।
ছবিতে ১৯২০ সালের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে দুটি ভিন্ন চরিত্রকে একসূত্রে বাঁধা হয়েছে। গল্পে দুই চরিত্রকে একসূত্রে গাঁথতে বহুবার হোঁচট খেতে হয়েছে তাকে। অনেক ভাবনা চিন্তা করিয়ে তাদের বন্ধুত্ব তৈরী করেছেন। আর তাদের বন্ধুত্বের কাহিনীকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। দুই সংগ্রামীর জীবনের অলিখিত ও অজানা মুহূর্তকে দেখিয়ে তাদের বন্ধুত্ব তৈরী করেছেন সাথে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামকে তুলে ধরেছেন। চলুন এবার এই দুই স্বাধীনতা সংগ্রামীর সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
আল্লুরী সীতারাম রাজু (Alluri Sitarama Raju) : ইনি হলেই সেই ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী যিনি ১৯২২সালে মাত্র ১৮ বছর বা বয়সে রাম্পা বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৮২২ সালের মাদ্রাজ জঙ্গল আইনের বিরোধিতায়। কারণ এই আইনের মাধ্যমে জঙ্গলের অধিবাসীদের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাদেরই জঙ্গলের মধ্যে। যার ফলে আদিবাসীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোডু চাষ পদ্ধতিকে পালন করতে পারছিল না। কারণ সেটা পালন করতে গেলে অন্যান্য ফসলের চাষ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করা হত।
বিদ্রোহে সামিল থাকার জন্য রাজুকে দোষী হিসাবে আটক করা হয়। ১৯২৪ সালে তাঁকে ধরার পর একটা গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। আর প্রকাশ্যে সকলের সামনেই মৃত্যু ডোন্ট দেওয়া হয়েছি। যার ফলে সশস্ত্র রাম্পা বিদ্রোহের অবসান ঘটেছিল। নিজের অসীম সাহসের জন্য তাঁকে তাকে “মান্যম ভিরুডু” বা “বন বীর” উপাধি দেওয়া হয়।
কোমরম ভীম (Komaram Bheem statue) : আরও এক স্বাধীনতা সংগ্রামী কোমরাম ভীম। ভীম ব্রিটিশ কারাগার থেকে পালিয়ে আসামের একটি চা বাগানে আশ্রয়ে নিয়েছিলেন। সেখানেই আল্লুরীর বিদ্রোহ সম্পর্কে জানতে পারেন ও গোন্ড উপজাতিকে রক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ হহন।
১৯০০ শতাব্দীর গোড়ার দিকে শেষ নিজাম হায়দ্রাবাদের শেষ নিজামের বিরুদ্ধে ও স্থানীয় জমির মালিকদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে শামিল হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কারণ হায়দ্রাবাদের শেষ নিজাম অত্যাধিক কর আরোপ করত দরিদ্র কৃষকদের ওপর যেটা দিয়ে বেঁচে থাকা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল।
অতীতের এই কাহিনীকে একত্রিত করে সুন্দরভাবে একটা ছবির মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছেন পরিচালক। পাশাপাশি ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য প্রতিটা অভিনেতা অভিনেত্রী থেকে শুরু করে টেকনিশিয়ান টিমের কৃতিত্বও অনস্বীকার্য