বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) তো বটেই, গোটা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন উত্তম কুমার (Uttam Kumar)। তিনি যে কত আইকনিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। এই কিংবদন্তি শিল্পীর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক সুপারহিট ছবি। নিজের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে জয় করেছেন কোটি কোটি দর্শকের মন।
উত্তম কুমার নামটি শুনলেই দর্শকদের মনে প্রথম যে কথাটি মাথায় আসে তা হল ‘মহানায়ক’। টলিপাড়ার এই কিংবদন্তি অভিনেতার নামের পাশে জুড়ে গিয়েছে এই তকমা। তাঁর মৃত্যুর পর এত বছর কেটে গেলেও সেই তকমা তাঁর নামের পাশ থেকে মুছে যায়নি। এর থেকেই বুঝে নেওয়া যায়, ঠিক কোন মাপের শিল্পী ছিলেন তিনি।
টলিউডের এই কিংবদন্তি অভিনেতার কেরিয়ার শুরু হয়েছিল শিশুশিল্পী হিসেবে। ১৯৪৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দৃষ্টিদান’ ছবিতে শিশুশিল্পীর চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তখন অবশ্য উত্তম কুমার নয়, অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায় নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। অনেকেই জানেন না, ’মহানায়ক’এর প্রথম ছবি কিন্তু বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখেনি।
এর পরের বছর অর্থাৎ ১৯৪৯ সালে ‘কামনা’ ছবির হাত ধরে নায়ক হিসেবে টলিউডে পা রাখেন উত্তম কুমার। এই ছবিটিও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ১৯৫১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সহযাত্রী’ ছবির সময় নিজের নাম বদলে উত্তম কুমার রেখেছিলেন তিনি। অনেকেই জানেন না, টলিপাড়ার ‘মহানায়ক’ কেরিয়ারের শুরুতে ব্যাক টু ব্যাক ৭টি ফ্লপ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
উত্তম কুমারের ভাগ্য ঘুরেছিল ‘বসু পরিবার’ ছবির হাত ধরে। নির্মল দে পরিচালিত এই সিনেমা ছিল ‘মহানায়ক’এর কেরিয়ারের প্রথম হিট ছবি। পরের বছর একই পরিচালকের সঙ্গে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এই ছবিটি হিট হওয়ার পর থেকে আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে। এরপর ‘নায়ক’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘ঝিন্দের বন্দি’, ‘মৌচাক’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ সহ একাধিক ব্লকবাস্টার ছবিতে অভিনয় করে ‘মহানায়ক’ তকমা আদায় করে নেন তিনি।
বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের অভিনেতা ছিলেন উত্তম কুমার। আকাশছোঁয়া সাফল্যের কারণে নির্মাতাদের মধ্যে তাঁর চাহিদাও ছিল তুঙ্গে। এক একটি ছবির জন্য বিপুল অঙ্কের পারিশ্রমিকও (Fees) নিতেন তিনি। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তম কুমার সেই সময় ২.৫ থেকে ৩ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন। যদিও শেষের দিকে সেই অঙ্কটা বদলে যায়। তবে শোনা যায়, সেই সময় ‘মহানায়ক’ ছাড়া এত বিপুল টাকা পারিশ্রমিক আর কোনও তারকা পেতেন না।