পঞ্চাশ-ষাটের দশকে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে (Tollywood) রাজত্ব করতেন যে তারকারা তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen)। তিনি যে কত সুপারহিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। নিজের দুর্দান্ত অভিনয় ক্ষমতার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের মন জয় করেছিলেন তিনি। আদায় করেছিলেন ‘মহানায়িকা’ তকমা।
সুচিত্রা সেন আজ আমাদের মধ্যে নেই। তিনি সিনেদুনিয়াকে বিদায় জানিয়েছেন কয়েক দশক হয়ে গিয়েছে। তবুও বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি দ্বিতীয় ‘মহানায়িকা’ পায়নি। ১৯৫২ সালে ‘শেষ কোথায়’ ছবির মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে পথচলা শুরু হয়েছিল সুচিত্রার। খুব কম সময়ের মধ্যেই টলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন হয়ে যান তিনি।
আজও বাংলা সিনেমার আইকনিক জুটির তালিকা তৈরি করা হলে সেখানে স্থান করে নেয় উত্তম-সুচিত্রা জুটি। তাঁরা একসঙ্গে বহু সুপারহিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন। একটা সময় এমনও হয়েছে যে উত্তম-সুচিত্রা আছে শুনেই দর্শকরা সিনেমা হল ভরিয়ে দিয়েছেন।
তবে এ তো নাহয় গেল, সুচিত্রা সেনের অভিনয়ের কথা। তবে অনেকেই জানেন না, ‘মহানায়িকা’ কিন্তু দু’টি গানও (Song) গেয়েছিলেন। ‘চাওয়া পাওয়া’ এবং ‘দ্বীপ জ্বেলে যাই’ তখন সবে রিলিজ করেছে। দু’টি ছবিই বক্স অফিসে দারুণ হিট হয়েছিল। তখন ‘মেগা ফোন’ সংস্থার কমল ঘোষ অভিনেত্রীকে দিয়ে দু’টি গান রেকর্ড করাতে চান।
‘মহানায়িকা’ কোনও কাজের চট করে রাজি না হলেও, এক্ষেত্রে কমলবাবুকে খুব একটা কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। কারণ অভিনেত্রীর স্বামী ছিলেন তাঁর বন্ধু। তাই স্বাভাবিকভাবেই স্বামীর বন্ধুর এই অনুরোধ ফেলতে পারেননি সুচিত্রা। আসলে ‘মেগা ফোন’ সংস্থাটি একবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই দ্বিতীয়বার যখন সেই সংস্থা খোলে কমলবাবু ঠিক করেছিলেন তিনি এমন কিছু করবেন যাতে সংস্থার নাম সারা বাংলায় নাম ছড়িয়ে যায়। সেই ভাবনা থেকেই মহানায়িকাকে রিহার্সাল করিয়ে দু’টি গান রেকর্ড করান তিনি।
‘আমার নতুন গানে নিমন্ত্রনে আসবে কী?’ এবং ‘মন নয় আজ মন হয় আজ’ গান দু’টি গেয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। পুজোয় রিলিজ করার কথা ছিল এই দু’টি গানের। কিন্তু অত্যন্ত কষ্ট করে তৈরি এই গানগুলির রেকর্ড মার্কেট থেকে তুলে নেয় ‘মেগা ফোন’ সংস্থা। জানানো হয়েছিল, গান দু’টি রেকর্ড করার সমত কারিগরি বেশ কিছু ত্রুটি ছিল, সেই জন্য মার্কেট থেকে সরিয়ে নিতে তাঁরা বাধ্য হন। আর সেই কারণেই ‘মহানায়িকা’ সুচিত্রা সেনের গাওয়া গান শোনা থেকেও বঞ্চিত থেকে যায় আপামর বাঙালি।