• Srabanti Chatterjee Viral Video শ্রাবন্তী
  • অনুরাগের ছোঁয়াঅনুরাগের ছোঁয়া
  • নুসরত জাহান নুসরত
  • ফুলকিফুলকি
  • শুভশ্রীশুভশ্রী
  • ইচ্ছে পুতুলইচ্ছে পুতুল
  • নিম ফুলের মধুনিম ফুলের মধু
  • কার কাছে কইকার কাছে কই

পর্দায় কুচুটে শাশুড়ি হলেও, বাস্তবে ছিলেন পুরো আলাদা! গীতা দের করুণ কাহিনী চোখে জল আনতে বাধ্য

বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে (Tollywood) এমন অনেক অভিনেত্রী রয়েছেন যাদের অনস্ক্রিন চরিত্র দিয়েই মনে রেখেছেন দর্শকরা। এমনই একজন অভিনেত্রী হলেন গীতা দে (Geeta Dey)। একাধিক হিট ছবিতে দজ্জাল, কুচুটে শাশুড়ির চরিত্রে তাঁকে দেখেছেন দর্শকরা। পর্দায় যতখানি নেতিবাচক রোলে দেখা যেত তাঁকে, বাস্তব জীবনে ঠিক ততখানি খোলামনের মানুষ ছিলেন তিনি।

টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়ায় গীতা দের পরিচিতি ছিল ‘গীতা মা’ নামে। ১৯৩১ সালের ৫ আগস্ট জন্ম অভিনেত্রীর। তাঁর বাপের বাড়ি ছিল কলকাতার দর্জিপাড়ায়। ছোটবেলাতেই মেয়ের অভিনয় এবং গানের প্রতি ঝোঁক দেখে প্রতিবেশী গায়িকার কাছে তালিম নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন গীতা দেবীর বাবা। ১৯৩৭ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে ‘আহুতি’ নামের একটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। এরপর ‘দম্পতি’ এবং ‘নন্দিতা’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।

   

Geeta Dey, Geeta Dey unknown facts

অল্প বয়সে ছেড়ে চলে যায় স্বামী

অসামান্য প্রতিভার অধিকারী গীতা ছোটবেলায় বেশ কিছু ছবি এবং মঞ্চে অভিনয় করেছিলেন। এরপর তাঁর যখন মাত্র ১৫ বছর বয়স, তখন কলকাতার তালতলা নিবাসী ব্যবসায়ী অসীমকুমার দের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তিনি। বিত্তশালী পরিবারের বৌ হয়ে যান গীতা। কিন্তু সেই সুখ সইল না অভিনেত্রীর কপালে।

ভাইবোন-সন্তানদের পেট চালানোর জন্য অভিনয়ে নামেন

গীতা দের মা মারা যাওয়ার সময় নাবালক ভাই-বোনদের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন। গীতাও ভাইবোনদের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। কিন্তু তাঁর স্বামী এই কাজ মেনে নিতে পারেননি। শুরু হয় অশান্তি। সেই সময় কিন্তু গীতা অভিনয় করেন না। এরপর একদিন অভিনেত্রীকে ছেড়ে দেন তাঁর স্বামী। ভাইবোন, সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হল অভিনেত্রীকে।

Geeta Dey, Geeta Dey unknown facts

অল্প সময়ের মধ্যেই পান আকাশছোঁয়া সাফল্য

এই সময়ই রোজগারের উপায় হিসেবে আবার অভিনয়কে বেছে নেন গীতা। কিংবদন্তি শিশির কুমার ভাদুড়ী ছিলেন তাঁর গুরু। একের পর এক নাটকে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন তিনি। এরপর তাঁর সামনে খুলে যায় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি দরজা। ১৯৫১ সালে নতুন করে ফের বাংলা সিনেমায় ডাক পান গীতা। ‘শিল্পী’, ‘লালু ভুলু’, ‘বিয়ের খাতা’ থেকে শুরু করে ‘সাত পাকে বাঁধা’ একাধিক সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থাকেন তিনি।

কাজ করেছেন ঋত্বিক ঘটক-সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে

এরপর ১৯৫৬ সালে কিংবদন্তি ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে আলাপ হয় গীতার। কালী বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত কালজয়ী সিনেমা ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘সুবর্ণরেখা’য় অভিনয়ের সুযোগ পান অভিনেত্রী। কাজ করেছেন কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গেও।

Gita Dey Life Struggle Bengali Cinema Villain

কাজ করিয়েও টাকা দেননি অনেকে

অসম্ভব প্রতিভাময়ী এক অভিনেত্রী ছিলেন গীতা দে। তবু আজও তাঁর নাম শুনলেই ‘কুচুটে’, ‘দজ্জাল’ শাশুড়ি হিসেবেই তাঁকে মনে করেন দর্শকরা। যদিও বাস্তব জীবনে তিনি ছিলেন একেবারেই আলাদা। প্রত্যেককে ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নিতেন। শুনলে অবাক হবেন, এমন এক অভিনেত্রীকে দিয়ে কাজ করিয়ে টাকা দেননি বহু পরিচালক-প্রযোজক। এমনকি কিংবদন্তি ঋতুপর্ণ ঘোষও একাজ করেছিলেন!

শেষ জীবন কেটেছে অভাব-একাকীত্বে

বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এত প্রতিভাময়ী এক অভিনেত্রী হওয়া সত্ত্বেও গীতা দের শেষ জীবন কেটেছিল প্রচণ্ড অভাব এবং একাকীত্বে। সবার দুঃখে যে মানুষটা পাশে থেকেছেন, সেই মানুষের শেষ সময়েই কেউ তাঁর পাশে ছিলেন না। এত ভালো মনের একজন মানুষের এমন পরিণতি হওয়া যে সত্যিই অভাবনীয়!