বাংলা সিনেমার (Tollywood) স্বর্ণযুগের অভিনেত্রীদের (Actress) নামের তালিকায় ওপরের দিকেই থাকবে ‘মহানায়িকা’ (Mahanayika) সুচিত্রা সেনের (Suchitra Sen) নাম। টলিউডের ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। তাঁর প্রয়াণের এতগুলো বছর পরেও তাই আর একটি সুচিত্রা সেন ইন্ডাস্ট্রি পায়নি। আর পাবেই বা কীভাবে, সুচিত্রা সেন যে এক এবং অদ্বিতীয়!
সুচিত্রা সেন মানে বাঙালির গর্ব, সুচিত্রা সেন মানে সিনেপ্রেমী মানুষদের গর্ব। অভিনেত্রীর সুন্দর মুখশ্রী, ভুবন ভোলানো হাসি দেখলে মনে হতো ঈশ্বর তাঁকে একটু বেশি সময় এবং ধৈর্য নিয়ে বানিয়েছেন। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ‘রানী’ ছিলেন তিনি। অবশ্য শুধুমাত্র টলিউডেই সীমাবদ্ধ থাকেননি অভিনেত্রী। তিনি কাজ করেছেন বলিউডেও, সেখানেও নিজের কাজের মাধ্যমে মুগ্ধ করেছেন প্রত্যেককে।
শোনা যায়, ‘মহানায়িকা’ বাস্তব জীবনেও বেশি দাপুটে ছিলেন। কেরিয়ারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পেয়েছেন অগাধ সাফল্য। তবুও সফলতার শীর্ষে থাকাকালীনই অভিনয় দুনিয়া থেকে সরে যান সুচিত্রা। চলে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। হঠাৎ কেন সিনে (Cinema) দুনিয়াকে বিদায় জানিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি অভিনেত্রী? এই প্রশ্ন এখনও ঘোরে অনুরাগীদের মনে।
‘মহানায়ক’ উত্তম কুমার প্রয়াত হওয়ার পর থেকে সিনে জগৎ থেকে নিজেকে আস্তে আস্তে দূরে সরিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন সুচিত্রা। আইকনিক উত্তম-সুচিত্রা জুটির কোনও বিকল্প হতে পারে না। শোনা যায়, উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর অভিনেত্রী বলেছিলেন, আর কার সঙ্গে অভিনয় করব?
‘মহানায়িকা’র কন্যা মুনমুন সেন একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সত্তরের দশকে যে বাংলা ছবি তৈরি হচ্ছিল তা সুচিত্রার মনমতো ছিল না। তাছাড়া কিংবদন্তি অভিনেত্রী যে পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতেন তাঁরা প্রত্যেকে একে একে পরলোক গমন করছিলেন। সেই জন্য আস্তে আস্তে নিজেকে সিনে দুনিয়া থেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেন ‘মহানায়িকা’।
মুনমুন আরও বলেছিলেন, সুচিত্রা যখন সিনেমা জগতে সক্রিয় ছিলেন, তখন তাঁদের বাড়িতে এই প্রসঙ্গে কথা হতো না। তিনি অবসর নেওয়ার পরেও সিনে দুনিয়া নিয়ে তাঁদের বাড়িতে কোনও কথাবার্তা হতো না। কেরিয়ারের শীর্ষে থাকাকালীন হঠাৎই অভিনয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন সুচিত্রা। রহস্যের চাদরে মুড়ে জীবনের শেষ বছরগুলি অন্তরালেই কাটিয়েছেন ‘মহানায়িকা’।