পশ্চিমবঙ্গে রোগীপক্ষ ও চিকিৎসকদের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের ঘটনা মাঝেমধ্যেই উঠে আসে সংবাদের শিরোনামে। যদিও পূর্ব-বর্ধমানের (East Burdwan) কালনায় (Kalna) সম্প্রতি যে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে চমকে উঠেছেন নাগরিকরা। রোগীর থেকে ডাক্তারি-ফি না পাওয়ার কথা জানতে পেরে প্রেসক্রিপশন (Prescription) থেকে ওষুধের নামটাই কেটে দিলেন চিকিৎসক! স্বাভাবিকভাবে জরুরি ওষুধ না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই বৃদ্ধা।
বর্ধমান সূত্রের খবর অনুযায়ী, স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভে রীতিমত বেপাত্তা অভিযুক্ত চিকিৎসক। সোশ্যাল মিডিয়ায় এহেন ঘটনার কথা চাউর হতেই এহেন অমানবিক চিকিৎসকের শাস্তির দাবি তুলেছেন নেটাগরিকরা। জানা গেছে, এমন ঘটনার অভিযোগ জানান হয়েছে জেলা পরিষদে। এই ঘটনায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা খতিয়ে দেখছের আধিকারিকরা।
কালনার ওই এলাকার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম জ্যোর্তিময় দাস। সূত্রের খবর, এক সময়ে কালনা মহকুমা হাসপাতালের ওই চিকিৎসক বর্তমানে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। বুধবার ব্রেন স্ট্রোক ও ঘাড়ে মারাত্মক যন্ত্রণার সমস্যা নিয়ে ওই চিকিৎসকের কাছে যান এক বৃদ্ধা। ওই বৃদ্ধা জানান, তাঁকে দেখে প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম লিখলেও ওই বৃদ্ধা যখন পারিশ্রমিক দিতে না পারার কথা জানান, তখনই ওষুধের নাম কেটে দেন জ্যোতির্ময়বাবু। জানা গেছে, সময়মত ওষুধ না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কালনার ওই বৃদ্ধা।
সূত্রের খবর, বৃদ্ধার নাম মালতি দেবনাথ। কালনার নান্দাই গ্রামের বাসিন্দা মালতিদেবী গত ক’মাস ধরেই ভুগছিলেন মাথার সমস্যা ও ঘাড়ের যন্ত্রণায়। কর্মসূত্রে বৃদ্ধার ছেলে থাকেন মুম্বইয়েজ বৌমা ও নাতিকে নিয়ে থাকেন অসুস্থ মালতি দেবী। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৪ ফেব্রুয়ারি জ্যোর্তিময় দাসের কাছে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সে দিন চিকিৎসককে যথাযথ পারিশ্রমিক দিয়েছিলেন মালতী। কিন্তু গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি কিছু মেডিকেল পরীক্ষা করিয়ে সেই রিপোর্ট চিকিৎসককে দেখাতে গেলে তিনি সাফ পারিশ্রমিক দিতে ‘না’ করে দেন। আর এতেই চটে যান ওই চিকিৎসক!
চিকিৎসকের এহেন আচরণে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ কালনাবাসী। বৃদ্ধার আত্মীয় রুনু দেবনাথের বক্তব্য, “এমন ঘটনা মানা যায় না।” পাশাপাশি ওই চিকিৎসকের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ ভৌমিক। এই ঘটনায় জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, “খোঁজ নিয়ে দেখছি কি ঘটেছে। অভিযুক্ত চিকিৎসক বেপাত্তা হলেও অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওনার শাস্তি অবশ্যম্ভাবী!”