নেপোটিজম (Nepotism) যে বলিউডের একটা জ্বলন্ত বৈশিষ্ট্য তা সুশান্ত সিং রাজপুতের (Sushant Singh Rajput) মৃত্যুর পরেই আমাদের কাছে একেবারে জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তাই অনেকেই বলেন ‘গডফাদার’ (God father) না থাকলে বলিউডে টিকে থাকা কার্যত অসম্ভব। তবে কারোর সাহায্য ছাড়া বলিউডে রাজ করেছেন এমন নজিরও রয়েছে অবশ্য।
অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান এর জলজ্যান্ত উদাহরণ। তবে তাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ না থাকলেও তাদের ভাঙিয়ে আজ অনেকেই বলিউডে করে খাচ্ছেন। তবে এইসবের মধ্যে এক্কেবারে আলাদা একটা নাম না নিলেই নয়। তিনি গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী, কি চিনতে পারলেন না তো? তবে তাঁর আরেকটা নাম বলি, মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) । কলকাতা থেকে পুণে উড়ে গিয়ে দিনের পর দিন অভাব অনটন সহ্য করেই সেদিনের গৌরাঙ্গ আজকের মিঠুন হয়েছেন।
জার্নিটা লম্বা, এবং বেশ কঠিন। আসলে তারকা তৈরি করে মানুষই আর তাদের এক টানে নীচে নামিয়ে দিতেও বেশি সময় নেয় না জনতা। রাজনীতির সঙ্গে নাম জড়ানোর পর থেকেই খোদ মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়েও ট্রোল, মিম, বিতর্কের শেষ নেই। তবে ইতিহাস বলছে মিঠুন দমে যাওয়ার পাত্র নন, কোনো কালেই ছিলেন না।
মিঠুনের ডেবিউ ফিল্মই সুপারহিট হয়েছিল। ১৯৭৬ সালে মৃণাল সেনের ফিল্ম ‘মৃগয়া’। দারুণ সাফল্য পেয়েছিল ছবিটা। এর জন্য মিঠুন জাতীয় পুরস্কারও পান। কিন্তু তার পরেও মিঠুনের ভাগ্যের শিকে ছেঁড়েনি। অভিনয়ের স্বপ্ন দুচোখ জোরা অথচ প্রকট হয়ে উঠছিল অর্থাভাব। তাই পেট চালানোর জন্য সেই সময় যা অফার পেতেন, সবেতেই রাজি হয়ে যেতেন মিঠুন।
একসময় রেখা অমিতাভের ব্যাগ ও বয়েছেন তিনি, আর তারপর অভিনয়ের দক্ষতাতেই তাদের সঙ্গে একই পর্দায় নিজের জায়গা করে নিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। না আর সব বলি তারকাদের মতো ‘সোকল্ড’ নায়কোচিত লুক কোনোকালেই তার ছিলনা। তবু ছিমছাম সাধারণ ছেলেটার চোখের জেদ, খিদে, অভিনয়, নাচ সবই সেসময় কয়েক গোল দিয়েছিল সুদর্শন নায়কদের।
তাই সফলতা যা আমরা দেখি, আর ব্যর্থতা যা আমরা দেখতে পাইনা। সম্প্রতি সিনেমা সাংবাদিক রাম কমল মুখোপাধ্যায়ের লেখা মিঠুনের বায়োগ্রাফিতে ফুটে উঠবে মহাগুরুর সাফল্যের পাশাপাশি, ব্যর্থতা এবং হতাশার কাহিনিও। বায়োগ্রাফির নামকরণ করা হয়েছে ‘Mithun Chakraborty, The Dada of Bollywood’। আসলে সফলতা শব্দটি আপেক্ষিক তাই তিনবার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এই অভিনেতা এখনও অবলীলায় বলতে পারেন,’কিছুই অ্যাচিভ করতে পারিনি’।