সমাজসেবা এমন একটা জিনিস যার কথা শুনলেই সমাজসেবীদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে সকলের। তবে একথা কিন্তু ঠিক, মুখে সমাজসেবা করার কথা বলা হলেও কাজে করে দেখানো কিন্তু মোটেই সহজ নয়। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে সমাজসেবীরা সমাজসেবা করে প্রকৃত অর্থেই কিন্তু অসাধ্য সাধনের কাজই করে থাকেন।
আমাদের রাজ্যের এমনই একজন প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলেন আলিমুদ্দিনের বাসিন্দা তৌসিফ রহমান (Tausif Rahman)। এপ্রিল মাসেই সূর্য দেবের প্রচন্ড দাবদাহ থেকে শহরের পথচলতি মানুষের তৃষ্ণা মেটাতে রাস্তায় ফ্রিজ (Fridge) রেখে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছিলেন তৌসিফ। সেসময় তৌসিফের এই উদ্যোগ রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল গোটা রাজ্যে।
সংবাদমাধ্যম থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্রই তৌসিফের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন রাজ্যবাসী। অসহ্য গরম থেকে রক্ষা পেয়ে পথচলতি মানুষ যাতে হাতের কাছে ফ্রিজের ঠান্ডা জল পেয়ে যান সেই ভাবনা থেকেই কাঠফাটা গরমে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে (Alimuddin Street) ফ্রিজ রেখে নজর এসেছিলেন তৌসিফ। কিছুদিন আগেই জি বাংলার জনপ্রিয় গেম শো দাদাগিরিতে এসেছিলেন তৌসিফ।
এবার শহরের পথচলতি মানুষদের জন্য ‘স্ট্রিট লাইব্রেরি’ (Street Library), অর্থাৎ রাস্তার ধারে বই পড়ার ব্যবস্থা করে নতুন চমক দিলেন তৌসিফ। আসলে বাসস্টপে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে বাসের অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে পড়েন বাস যাত্রীরা। তাই বাস যাত্রীদের এই সাময়িক বিরক্তি দূর করার ভাবনা থেকেই জোড়া গির্জা বাস স্টপে বাসযাত্রীদের জন্য র্যাক ভর্তি গল্পের বই রাখার ব্যাবস্থা করেছেন তৌসিফ।
১৫ মিনিট বা আধ ঘন্টায় পড়ে শেষ করে ফেলার মতো ছোট ছোট গল্প, কমিকস এবং পুরনো বই রাখার কথা ভেবেছেন তৌসিফ। তবে শুধু বই নয়, রোজকার খবরের কাগজ রাখারও পরিকল্পনা রয়েছে তৌসিফের। এছাড়া বাংলা, ইংরাজির পাশাপাশি হিন্দি এবং উর্দু গল্পের বইও রাখার কথা ভাবছেন তৌসিফ।তবে নিরাপত্তার বিষয়ে তৌসিফ বলেছেন “বইপ্রেমীরা বাস স্টপে বই রাখার গুরুত্ব বুঝবেন। আর এই বইও তো মানুষের জন্যই, তাই কেউ চুরি করবে না।’’