খাদ্যরসিক বাঙালি খেতে বড় ভালোবাসে। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সর্বদাই ভালো খাবারের সন্ধানে থাকে সকলেই। গরমকালের সবজি বলতে সাধারণত আলু.পটল.কুমড়ো ইত্যাদিকেই বোঝায়। এবার অনেকেই ভাবেন যে আলু, পটল, কুমড়ো দিয়ে কি আর তেমন রান্না হবে! তবে আপনাকে জানিয়ে রাখি আলু পটল দিয়েই এমন কিছু দারুন রান্না হতে পারে যা আপনি আঙ্গুল চেটে খাবেন। আজ আপনাদের জন্য এমনই একটি রান্না পটল চিংড়ির রেসিপি (potol chingri recipe) নিয়ে হাজির হয়েছি।
বাঙালিদের বাড়িতে গরমকাল থেকে শুরু করে বর্ষাকাল পর্যন্ত পটল তো থাকেই। আর বাজারে যে কোনো সময়েই সহজে ছোট ছোট চিংড়ি মাছ পাওয়ায় যায়। এই দুইয়ে মিলেই তৈরী করতে পারে দুর্দান্ত স্বাদের পটল চিংড়ি। যার গন্ধ শুঁকেই জিভে জল আসতে বাধ্য। তাছাড়া পটলের অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা অনেকেই জানেন না। এই সবজিটি একটি পুষ্টিকর খাদ্য। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২ ও ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আয়ুর্বেদে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানেও ব্যবহার করা হয়।
পটল চিংড়ি তৈরির উপকরণঃ
- পটল ৫০০ গ্রাম
- চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম
- আলু (প্রয়োজনমত)
- পেঁয়াজকুচি
- আদা, রসুন বাটা, জিরে বাটা
- কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো (আপনি চাইলে সাধারণ লঙ্কার গুঁড়ো ব্যবহার করতেই পারেন ) হলুদ গুঁড়ো
- ঘি
- তেজপাতা, পাঁচফোঁড়ন, গরম মশলা
- জায়ফল গুঁড়ো আর সর্ষের তেল
পটল চিংড়ি তৈরির পদ্ধতিঃ
- প্রথমে চিংড়ি মাছ পরিষ্কার করে কেটে ধুয়ে নিয়ে, নুন – হলুদ মাখিয়ে নিতে হবে।
- এরপর পটলের দু’ধার কেটে, মাঝে মাঝে খোসা ফেলে দিয়ে দু’ভাগ করে নিতে হবে। সাথে কাটতে হবে আলু। আলু গুলো ৬ ভাগ করে কাটতে হবে, একটু বড়ো করেই কাটতে হবে।
- এবার সব্জি ভাজবার জন্য কড়া গরম করে তেল দিতে হবে। প্রথমে আলু ভাজতে হবে। আলু ভাজা হলে সামান্য হলুদ দিতে হবে। এতে রং টা ভালো আসে।
- আলু ভাজা হলে তুলে নিতে হবে, তারপর ওই তেলেই দিয়ে দিতে হবে পটল। পটল ভাজা হলে ওতে সামান্য হলুদ দিয়ে অল্প একটু নাড়াচাড়া করে নামিয়ে নিতে হবে।
- এরপর চিংড়ি মাছটা ভেজে নিতে হবে। ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে চিংড়ি আলাদা করে তুলে রেখে দিতে হবে।
- এবার কড়ায় আবার তেল দিয়ে তাতে তেজপাতা আর পাঁচ ফোড়ন দিয়ে দিতে হবে। সামান্য নাড়াচাড়া করলেই ফোড়নের গন্ধটা বেরোতে শুরু করবে তখন পেঁয়াজ কুঁচি দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে।
- পেঁয়াজ ভাজা হলে একে একে জিরে বাটা, আদা- রুসুন বাটা, হলুদ -লঙ্কা গুঁড়ো আর কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো।
তেলে সব দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। কষা হয়ে গেলে তাতে প্রয়োজনমত জল দিয়ে দিতে হবে।
- এবার কড়ায় ভেজে রাখা আলু দিয়ে দিতে হবে সাথে প্রয়োজন মত নুন দিয়ে দিতে হবে। আর কড়ায় ঢাকা দিয়ে দিতে হবে।
- ১০ মিনিট রান্না হবার পর কড়ার ঢাকা খুলে দিয়ে দিতে হবে ভেজে রাখা পটল আর চিংড়ি মাছ।
- এরপর ১০ মিনিট রান্না হতে দিতে হবে। আর মাঝে একবার ঢাকা খুলে নাড়াচাড়া করে আবার ঢাকা দিয়ে হতে দিতে হবে।
- ১০ মিনিট পর ঢাকা খুলে নামানোর আগে গরম মশলা গুঁড়ো, ঘি আর জায়ফল গুঁড়োদিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে। (জায়ফল গুঁড়ো কিন্তু খুবই সামান্য পরিমাণ দিতে হবে)
- ব্যাস পটল চিংড়ি একেবারে রেডি, এবার শুধু পাতে পড়ার অপেক্ষা।