টাকি হল পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। এটি ইছামতি নদীর তীরে অবস্থিত। টাকি ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত এবং নদীর পূর্ব তীরে বাংলাদেশ।
টাকির বর্ণনা:
টাকি ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরের একটি শহর। ১৮৬৯ সালে টাকি পুরসভার প্রতিষ্ঠা হয়। ওই সময়ে টাকির বেশির ভাগ জায়গা ছিল জঙ্গলে ভরা। রাজা প্রতাপাদিত্যের বংশধর কৃষ্ণদাস রায়চৌধুরী টাকিতে বসতি স্থাপন করেন। বর্তমান ইছামতি নদীর সে সময়ে নাম ছিল যমুনা-ইছামতী। কৃষ্ণদাসের চেষ্টায় টাকি সম্ভ্রান্ত এবং ব্রাহ্মণ পরিবারের বাসভূমিতে পরিণত হয়। নন্দদুলালের বিগ্রহ স্থাপনের জন্য টাকিতে জালালপুর গ্রামের বেশ নামডাক ছিল। রাজা মানসিংহ প্রতাপাদিত্যের সাম্রাজ্যে আক্রমণ শানানোর জন্য টাকিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দু’পক্ষের লড়াই হয় বসিরহাটের সংগ্রামপুরে। প্রতাপাদিত্যের সৈন্যদলকে তাড়া করে মানসিংহের বাহিনী। টাকি শ্মশানের পাশ দিয়ে ইছামতী পার হয়ে রক্ষা পায় প্রতাপাদিত্যের দলবল। সেই ইতিহাসকে মনে রেখেই শ্মশান-সংলগ্ন রাস্তার নাম পরে রাখা হয় মানসিংহ রোড। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে টাকি কুলেশ্বরী কালীবাড়ি প্রতিষ্ঠা হয়। টকিতে ইচ্ছামতী নদীতে দুর্গা পূজার বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে ভারত ও বাংলাদেশের বেশ কিছু পূজা কমিটি নৌকায় করে দুর্গা প্রতিমা নিয়ে বিসর্জনে অংশ নেয়। এটি টাকির একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
কীভাবে যাবেন?
টাকি কলকাতার প্রায় ৭০ কিলোমিটার পূর্বে এবং সড়ক ও রেল উভয়ই দ্বারা পৌঁছাতে পারেন। কলকাতার এসপ্ল্যানেড থেকে কলকাতা বাস রুট #২৫২ ধরে হাসনাবাদ যাত্রা। এই যাত্রা পথে বারাসাত এবং বাসিরহাট থেকে টাকি পৌছায় বাসটি। আরেকটি বাস, #৭৯ সি রুটে একটি অনুরূপ পথ অনুসরণ করে কিন্তু এটি এসপ্ল্যানেডের পরিবর্তে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারে যাত্রা শুরু / সমাপ্ত করে। যাত্রায় ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে।
টাকি রেল স্টেশন কলকাতা শহরতলি রেলপথের হাসনাবাদ শাখার অংশ। এটি উত্তর কলকাতায় বারাসত রেল জংশন স্টেশনের মাধ্যমে শিয়ালদহ স্টেশনে যুক্ত রয়েছে। কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেনে টাকি পৌচ্ছাতে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগে এবং প্রতিদিন কয়েকবার লোকাল ট্রেন শিয়ালদহ স্টেশন থেকে টাকি পর্যন্ত যাতায়াত করে। টাকি রোড স্টেশন শহরের স্থানীয় রেল স্টেশনটি টাকি রোড স্টেশন নামে পরিচিত। রিকশা দ্বারা স্টেশন থেকে নদী প্রান্ত পর্যন্ত এবং গেস্ট হাউসে যাওয়ার জন্য ১০-১৫ মিনিট সময় লাগে।
কী কী দেখার রয়েছে?
এই শহরে ঠাঁসা রয়েছে দেখা জিনিস। ইছামতি নদী , গোলপাতার জঙ্গল, মাছরাঙা দ্বীপ, রায় চৌধুরীর জমিদার বাড়ি এসবই ঘুড়ে দেখতে পারেন আপনি। এছাড়াও টাকি শহরের নৌ-ঘাটগুলি থেকে নৌকা ভারা করে ইছামতি নদী ভ্রমণের ব্যবস্থা রয়েছে।