বলিউডের (Bollywood) অন্যতম সফল অভিনেতাদের মধ্যে একজন হলেন শক্তি কাপুর (Shakti Kapoor)। প্রায় পাঁচ দশক দীর্ঘ ফিল্মি কেরিয়ারে ৭০০’র কাছাকাছি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। জিতেছেন একটি বড় পুরস্কার। সঙ্গেই জয় করেছেন কোটি কোটি অনুরাগীর মন। কমেডি চরিত্র থেকে শুরু করে ভিলেনের চরিত্র, সবেতেই নজরকাড়া অভিনয় করেন শক্তি কাপুর।
১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে প্রায় ১০০টি ছবিতে কাজ করেছেন বলিউডের এই নামী অভিনেতা (Bollywood actor)। তবে আপনি কি জানেন, বলিউডের ‘ক্রাইম মাস্টার গোগো’ই কিন্তু অভিনেতা হতে চাইতেন না। বরং স্বপ্ন দেখতেন ট্রাভেল এজেন্ট হওয়ার? আজকের প্রতিবেদনে শক্তি কাপুরের জীবনের নানান অজানা কাহিনী তুলে ধরা হল।
১৯৫২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দিল্লির এক পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম সুনীল সিকন্দর কাপুর তথা শক্তি কাপুরের। অভিনেতার পিতা দিল্লির কনোট প্লেসে দর্জির দোকান চালাতেন। তিনি চাইতেন, তাঁর ছেলেও পড়াশোনা শিখে দর্জিই হোক। কিন্তু শক্তি স্বপ্ন দেখতেন ট্রাভেল এজেন্ট হওয়ার। দিল্লির কিরোরীমাল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর ৬ মাসের জন্য ট্রাভেল এজেন্ট হওয়ার কোর্স করেছিলেন তিনি।
অভিনেতা হওয়ার কোনও স্বপ্নই শক্তির ছিল না। তবে ওনার বন্ধুরা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই কারণে উনিও বন্ধুদের সঙ্গে FTII’এর ফর্ম ফিল আপ করেন। তবে ভাগ্যচক্রে শক্তির থিয়েটারের কোনও বন্ধু সুযোগ না পেলেও, শক্তি সুযোগ পেয়ে যান। এরপর উনি সেখান থেকে ডিপ্লোমা করেন। সেখান থেকেই শুরু অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা।
এরপর বলিউডে পা রাখার আগে নিজের নামও পরিবর্তন করেন সুনীল সিকন্দর তথা শক্তি। শোনা যায়, সুনীল দত্তের পরামর্শ অনুযায়ীই নিজের নাম বদলেছিলেন শক্তি। ‘রকি’ সিনেমার ভিলেন হিসেবে শক্তিকে পছন্দ হলেও তাঁর নাম একেবারেই বলিউডের যোগ্য মনে হয়নি সুনীল দত্তের। সেই কারণে উনি নাম পরিবর্তন করার কথা বলেন। এরপরই সুনীল সিকন্দর হয়ে যান শক্তি কাপুর।
বলিউডের শক্তির যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘রঞ্জিত খালাল’এর মাধ্যমে। এরপর ‘রাজা বাবু’, ‘কুলি নম্বর ১’, ‘চুপ চুপ কে’, ‘অন্দাজ আপনা আপনা’-সহ একাধিক সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছেন শক্তি কাপুর। দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘ক্রাইম মাস্টার গোগো’, ‘নন্দু’, ‘জিমি’র মতো বহু স্মরণীয় চরিত্র।
তবে শুধুমাত্র কাজের দিক থেকেই নয়, শক্তি কাপুরের ব্যক্তিগত জীবনও বেশ ফিল্মি। অভিনেত্রী শিবাঙ্গীর সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা। শিবাঙ্গী তাঁর বাড়ির লোকের অমতে গিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় শক্তি কাপুরের বয়স ছিল ৩০। অপরদিকে শিবাঙ্গী তখন ১৮ বছরের কিশোরী। উল্লেখ্য, শিবাঙ্গী নামী অভিনেত্রী পদ্মিনী কোলাপুরের বোন।
একবার আবার শক্তি কাপুরের বিরুদ্ধেই উঠেছিল ‘কাস্টিং কাউচ’এর অভিযোগও। স্টিং অপারেশনে দেখা গিয়েছিল, একটি মেয়ের থেকে প্রকাশ্যেই ‘ফেভার’ চাইছেন অভিনেতা। যা নিয়ে চরম বিতর্ক হয়েছিল। প্রোডিউসর গিল্ডের তরফ থেকে শক্তিকে সিনেমা এবং টেলিভিশন থেকে ব্যানও করে দেওয়া হয়। যদিও এক সপ্তাহ পর সেই ব্যান সরিয়ে দেওয়া হয়। বলিউডের ‘ক্রাইম মাস্টার গোগো’কে ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মালায়ালম সিনেমা ‘লুসিফার’এ শেষবারের মতো অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত আর কোনও ছবিতে দেখা যায়নি শক্তি কাপুরকে।