আজ একবছর হয়ে গেল সুশান্ত সিং রাজপুত (Sushant Singh Rajput) আমাদের সাথে নেই। গতবছর ১৪ই জুন অর্থাৎ আজকের দিনেই মুম্বাইয়ের বান্দ্রার ফ্লাট থেকে মিলেছিল অভিনেতা প্রাণহীন দেহ। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে গোটা দেশের দর্শকমহলে শোকের ছায়া নেবে আসে। এরপর শুরু হয় তদন্ত, তবে গোটা একটা বছর কেটে গেলেও তদন্তের কোনো সুরাহা হয়নি।
সুশান্ত চলে যাবার পর তার পরিবার ব্যাপকভাবে ভেঙে পড়েছিল। অভিনেতার মা মারা গিয়েছিলেন অনেক আগেই, দিদি শ্বেতা সিং ও বাবা কেকে সিং ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন সুশান্তের মৃত্যুর খবর পেয়ে। সুশান্ত যে এমনটা করতে পারে এটা বিশ্বাসই করতে পারছিল না অভিনেতার পরিবার। এদিকে প্রাথমিক তদন্তের পর সুশান্তের মৃত্যুকে আত্মহত্যা আখ্যা দেওয়া হয়।
অবশ্য শুধু অভিনেতার পরিবারই নয় দর্শকরাও অবাক হয়ে গিয়েছিল। যে অভিনেতা ‘ছিঁছোড়ে (Chichore)’ ছবিতে বাঁচার মন্ত্র দিয়েছিলেন সেই অভিনেতা কি করে আত্মহত্যা করতে পারে! তাই সুশান্তের চলে যাবার পর তার মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে #justiceforssr সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে পরে। শুধু এদেশেই নয় বিদেশেরও বহু মানুষ এই মুভমেন্টে সামিল হয়েছিলেন।
আপনারা হয়তো জানেন অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও খুব ভালো ছিলেন সুশান্ত। দিল্লি টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন সুশান্ত। সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং করছিলেন। এছাড়াও রাতের আকাশে তাঁরা দেখতে পছন্দ করতেন অভিনেতা। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট হবার। ২০০৬ সালে যখন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফাইনাল ইয়ার চলছে তখন নিজের স্বপ্নের ব্যাপারে বাড়িতে জানান সুশান্ত।
সুশান্তের ইচ্ছা শুনে তাঁর অভিভাবকেরা অবাক হয়ে পড়েন। কিন্তু ছেলেকে বায়ুসেনায় যাবার অনুমতি দেননি কেউই। পরিবারের কাছে বারবার একই কথা শোনার পর নিজের ‘টপ গান’ পোস্টের ছিঁড়ে ফেলে দেন সুশান্ত। এরপর অভিনেতা হবার ইচ্ছা জাগে মনে। অভিনেতা হবার স্বপ্ন নিয়েই ফাইনাল ইয়ারে ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে চলে আসেন মুম্বাইতে। মুম্বাই এসে তার প্রথম ঠিকানা ছিল একটি ছোট্ট ঘুপচি ঘর যেখানে তারই সাথে থাকত আরো ৬ জন।
এভাবেই শুরু হয়েচিল অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের কাহিনী। এরপর ২০০৮ সালে প্রথম ছোটপর্দায় অভিনয়ের সুযোগ মেলে। ‘কিস দেশ মে হ্যায় মেরা দিল’ সিরিয়ালে প্রথম দেখা গিয়েছিল অভিনেতাকে। এরপর ‘পবিত্র রিস্তা’ সিরিয়ালে সুশান্তের অভিনয় মন কেড়ে নেয় দর্শকদের। পবিত্র রিস্তার সেট থেকেই অভিনেত্রী অঙ্কিতা লোখান্ডের সাথে প্রেমে পড়েন অভিনেতা। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে প্রেম করেন, তবে শেষমেশ তাদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল।
এরপর বড়পর্দায় ২০১৩ সালে ‘কাই পো চে’ ছবি দিয়ে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন সুশান্ত। এরপর ‘শুদ্ধ দেশী রোমান্স’, ‘ব্যোমকেশ বক্সী’, ‘ এম.এস. ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’, ‘কেদারনাথ’, ‘ছিছোড়ে’ ছবিতে দেখা গিয়েছে সুশান্তকে। সুশান্তের অভিনীত শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’ ছবিটি রিলিজ হবার আগেই প্রয়াত হন অভিনেতা।