গোটা দেশের মতো করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। তাই করনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে লকডাউন এর পথে হেঁটেছে রাজ্য। লকডাউনে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা থেকে শুরু করে লকডাউন যথাযথ পালন হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য নিরন্তর কর্মরত রয়েছে পুলিশকর্মীরা। এদিকে লকডাউন এর পাশাপাশি সম্প্রতি বঙ্গের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। প্রবল বৃষ্টি আর হাওয়ায় তছনছ হয়েছে পশ্চিমবাংলার উপকূলীয় অঞ্চল গুলি। তার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কলকাতাও। মহামারীর সাথে দুর্যোগ কে সঙ্গী করে সাধ্যমত পাশে থাকছেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরা।
ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে কিছু ছেলেরা। পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদের প্রতি ও মানবিক হয়ে তাদের জন্য কিছুটা খাবারের যোগান দিয়েছে ওই একই ছেলেরা। কারা এই ছেলে? তারা হলেন জি বাংলা রান্নাঘরের অভিনেত্রী সুদিপা চ্যাটার্জী পাড়ার ছেলে। আরো ভালোভাবে যদি বলতে হয় তাহলে বালিগঞ্জ ২১পল্লীর পড়ার ছেলেরা।
পাড়ার ছেলেদের উদ্দেশ্যে অভিনেত্রী সুদিপা চ্যাটার্জী (Sudipa Chatterjee) লিখেছেন, ‘ওরা কাজ করে। ওরা আমার পাড়ার ছেলে। কখনো দৌড়ে যায়- ত্রান নিয়ে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামে। কখনো পুলিশকর্মীদের চা-বিস্কুট দিয়ে আনন্দ পায়। আমরা যখন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ‘অলস’, ‘সেলফ সেন্টার্ড’, ‘মোবাইল অ্যাডিক্টেট’ বলে সমালোচনা করি- ঠিক তখনই একা বেড়িয়ে পরে। কাজ করতে, মানুষের জন্য কাজ করতে। সকলকে অবাক করে – এরা মানুষের জন্য কাজ করে। বিনা স্বার্থে, বিনা পারিশ্রমিকে’।
এরপর অভিনেত্রী আরো বলেছেন, ‘এরাই তো দেশের ভবিষ্যত। না আছে কোনো রাজনৈতিক রঙ। না আছে কোনো স্বার্থসিদ্ধির প্রলোভন। সদ্য বাবাকে হারানো বুক্কা কিসের টানে,মায়ের চোখের জল মুছিয়েই- ছুট্টে যায়,আর্ত মানুষের সেবায়? ওরা শুধু দুর্গাপুজা করেনা। সারা বছর মানুষের সেবা করে। এর চেয়ে ভালো পুজো আর কিই বা হতে পারে? তাই ওদের পুজো স্বার্থক। ওরা আমার পাড়ার ছেলে। ওরা বালিগন্জের ২১ পল্লী’।
আসলে লকডাউনের জেরে কলকাতার চারিদিকে দোকানপত্র বন্ধ থাকায় খানিক মুশকিলে পড়েছেন পুলিশেরা। তারপর ইয়াসির কারণে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। তাই ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের পানীয় জল, চা-বিস্কুট ও জল খাবার পৌঁছে দেবার উদ্যোগ নিয়েছে ২১পল্লীর ক্লাব। যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন এই পরিষেবা দেওয়া তবে। পাড়ার ছেলেদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সুদীপা।