বৃহস্পতিবার সকল হতেই টলিপাড়া থেকে মিলল শোক সংবাদ। প্রয়াত হয়েছেন অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee)। বুধবার গভীর রাতে ১.৪০ মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন অভিনেতা। মৃত্যুকালীন বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। অভিনেতার এমন আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হয়ে গিয়েছে টলিপাড়া। এমন একজন অভিনেতা যে সকলকে ছেড়ে এভাবে চলে যেতে পারেন সেটা কেউই মেনে নিতে পারেন নি। অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ও (Subhasish Mukherjee) ভেঙে পড়েছেন অভিষেকের মৃত্যুতে।
ইন্ডাস্ট্রির অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীরাই একপ্রকার বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন অভিনেতার মৃত্যুতে। ১৯৮৬ সালে তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘পথভোলা’ ছবি দিয়েই শুরু হয়েছিল টলিউডে পথচলা। সমসাময়িক বাংলার সুপারস্টারদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিলেন একাধিক সুপারহিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়ে। সেইসময় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ও শুভাশিস মুখোপাধ্যায় এই তিন অভিনেতাকে একত্রে টলিপাড়ার ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ বলা হত।
বহু ছবিতেই একত্রে দেখা মিলত তাদের, আর সেই ছবি সুপারহিট হবেই হবে। অভিনেতার প্রয়ানে গভীরভাবে শোকাহত হয়েছেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, মিঠু তো আমার শুধু সহকর্মী ছিল না, বরং ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। একপ্রকার আত্মীয় হয়ে উঠেছিল। দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক আমাদের মধ্যে। কিছুদিন আগে তপসটা চলে গেলাম আর এবার মিঠু। হ্যাঁ একটু অভিমানী ছিল ঠিকই কিন্তু ভীষণ সোজাসাপ্টা মানুষ ছিল’।
এরপর অভিনেতা বলেন, ‘বিশ্বাস করুন, আমি জানি না কি প্রতিক্রিয়া দেব! আমরাও তো মানুষ, শিল্পী বলে হয়ত আমরা আরও বেশি আবেগপ্রবণ। কত পুরোনো কথা মনে পড়ছে …’ একথা বলতে গিয়েই চোখে জল এসে যায়, কান্নায় স্তব্ধ হয়ে আসে গলা। এরপর কিছুটা বিরতি নিয়ে শুভাশিসবাবু আবারো বলেন, ‘কত দিন কত মুহূর্ত ওর সাথে কাটিয়েছি একসাথে। ওর মেয়ে রজন্মদিন আর আমার বিয়ের দিন একই দিনে, ও খুব খাওয়াতে ভালোবাসত তাই নিমন্ত্রণ করত আমাদের। আর আমি গেলেই সবার সামনে পিছনে লাগত। বলত, কোথায় তুই খাওয়াবি তা নয় আমার মেয়ের জন্মদিনে খেতে চলে এসেছিস, ভালোই আছিস বল!’
আরও পড়ুনঃ প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার জন্যই শেষ হয়েছিল কেরিয়ার! ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক
এখানেই শেষ হয়, অভিনেতা আরও বলেন, ‘কত যে ভালো স্মৃতি আছে আমাদের, সেগুলোই রেখে দিতে চাই। আমি গিয়েছিলাম শেষবারের মত ওকে দেখতে। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারিনি, শুটিংয়ের জন্য যেতে হয়েছে। আচ্ছা, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল এই তিন অভিনেতা তো বাংলা বিনোদনের একটা যুগ একটা ইতিহাস। অভিষেকের মৃত্যু দিনে একদিনের জন্য কাজ বন্ধ রাখতে পারত না ইন্ডাস্ট্রি? এটুকু সন্মান কি মিঠুর প্রাপ্য ছিল না? জানি না কি বলব, আমি আর কিছু বলতে পারছি না। ক্ষমা করবেন আমায়’।