বাংলার গানের দুনিয়ার অত্যন্ত পরিচিত এক ব্যক্তিত্ব হলেন শুভমিতা ব্যানার্জি (Subhamita Banerjee)। তাঁর গলায় ‘দেখেছো কি তারে, ওই নীল নদীর ধারে’ – এখনও মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। প্রতিভাবান এই বাঙালি গায়িকার গলায় যেন সত্যি সত্যিই মা সরস্বতী বাস করেন।
একসময় রিয়্যালিটি শোয়ের (Reality Show) হাত ধরে হাজার হাজার মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন শুভমিতা। দেখতে দেখতে গানের দুনিয়ায় কাটিয়ে ফেলেছেন বেশ অনেকগুলি বছর। তবে সেই গায়িকাই এখনকার রিয়্যালিটি শো নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট নন। সম্প্রতি নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শুভমিতা।
জনপ্রিয় এই গায়িকার মতে, এখনকার রিয়্যালিটি শোয়ের সঙ্গে আগেকার শোয়ের অনেক তফাৎ রয়েছে। আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল গান। কিন্তু এখন গানের চেয়ে বেশি প্রতিযোগীদের সাজগোজ এবং গ্রুমিংয়ের ওপর বেশি ফোকাস করা হয়। আর তার জন্য কোথাও গিয়ে গানের প্রতিযোগিতায় গানের গুরুত্বটাই কমে যায়।
শুভমিতা বেশ অনেকগুলি রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারক হিসেবে কাজ করেছেন। সেই জন্যই আগেকার রিয়্যালিটি শোয়ের সঙ্গে এখনকার শোয়ের তফাৎটা বেশ বুঝতে পারেন তিনি। গায়িকা দেখেছেন, প্রতিযোগী গান গাইতে এসেছে, সামনে বিচারক বসে রয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে মেক আপ আর্টিস্ট এসে প্রতিযোগীর চুল ঠিক করে দিলেন। শুভমিতা প্রশ্ন করেন, সেই মুহূর্তে একজন প্রতিযোগীর ফোকাস গানের ওপর থাকা উচিত নাকি মেক আপের ওপর?
গায়িকার কথায়, এখনকার রিয়্যালিটি শো মানেই সাজগোজ আর গ্রুমিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাঁরা ফোকাস করতেন শুধুমাত্র গানের দিকেই। অন্য কোনও দিকে নজর দেওয়ার মানসিকতাটাই ছিল না তাঁদের। আর সেই জন্যই যখন নিজের পুরনো ভিডিও দেখেন, তখন তার চোখে পড়ে যে কোনও ধরণের একটা শাড়ি পরে স্রেফ গান গাওয়ায় মগ্ন তিনি।
শুভমিতা অবশ্য এও বলেন, সময়ের চাহিদা মেনে গ্রুমিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে, একথা ঠিক। কিন্তু সেগুলির গানকে ছাপিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। সেই সঙ্গেই এখনকার প্রজন্মের সঙ্গীতশিল্পীদের থেকে নতুনত্ব খোঁজেন। কারণ গায়িকার মতে, এখনকার রিয়্যালিটি শোয়ের প্রতিযোগীরা পুরনো গান গেয়েই চালাচ্ছেন। হালফিলের রিয়্যালিটি শো মানেই মিউজিক, ভালো ভালো পোশাক, সাজগোজ আর আলোর ঝলকানি। এর মধ্যে নতুন গান কোথায় দিচ্ছেন প্রতিযোগীরা?
রেওয়াজ না করলে, সঙ্গীতের কাছে মাথা নত না করতে কিছু শেখা যায় না। সেই জনই গানের দুনিয়ায় এত বছর কাটিয়ে ফেললেও শুভমিতা মনে করেন তিনি কিছুই শিখে উঠতে পারেননি। সেই কারণেই নতুন প্রজন্মকে এই বার্তাই দিতে চাইছেন এই জনপ্রিয় গায়িকা।