করোনা ভাইরাসের জেরে চারিদিকে হাহাকার বেড়েই চলেছে। কোথাও হাসপাতালে বেড নেই তো কোথাও অক্সিজেন নেই। মানুষ অসহায়ের মত চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে সামান্য সাহায্যের আশায়। মহামারী তো রয়েছেই তার সাথে রয়েছে লকডাউন। লকডাউনের জেরে বাবু মানুষের রুজি রুটি বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই অসহায় হয়ে পড়েছেন। এমনি এক অসহায়তার ছবি ধরা পড়ল খাস কলকাতায়। তাও কোনো সাধারণ ব্যক্তি নয় এক শিল্পীর অসহায়তার চিত্র ধরা পড়ল।
৮০ বছর বয়সী এক শিল্পীকে এই লকডাউন আর করোনা পরিস্থিতির মাঝেই রাস্তায় নামতে হয়েছে। কলকাতার গোলপার্কের Axis Bank এর সামনে নিজের হাতে আঁকা ছবি বিক্রির জন্য বসে আছেন তিনি। কে তিনি? তিনি হলেই চিত্র শিল্পী সুনীল পাল। নিজের হাত আর তুলির ছোঁয়ায় তৈরী করা অসাধারণ চিত্রকলা অসহায় হয়ে মাত্র ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁর ছবি শেয়ার করা হলে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হল কেন এমন অবস্থা এক ৮০ উর্ধ চিত্র শিল্পীর? মহামারীর পরিস্থিতিতেও কেন এই বয়সে রাস্তায় বেরোতে হচ্ছে তাকে?প্রশ্নের উত্তর বললে চমকে উঠবেন আপনিও। বয়স বেড়েছে বাবার অথচ বৃদ্ধ বাবার দায়িত্ব নিতে নারাজ তার ছেলেরা। সন্তানেরা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন প্রবীণ চিত্র শিল্পী সুনীল পালকে। সম্বল বলতে নিজের হাতের ছোয়ায় ফুটিয়ে তোলা কিছু ছবি। কিন্তু হার মেনে নিতে নারাজ তিনি। বয়স হলেও রয়েছে অদম্য ইচ্ছাশক্তি।
তাই তো এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও ভিক্ষা না করে নিজের হাতে আঁকা ছবি বিক্রি করছেন পেট চালানোর জন্য। সুনীল পালের এই অবস্থার কথা সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হলে নজরে পড়েছে হাজারো মানুষের। অনেকেই শিল্পীকে সাহায্য করতে ভালো দাম দিয়ে কিনতে চেয়েছেন তাঁর হাতের ছোঁয়ায় তৈরী ছবিগুলি। কিন্তু যার খাবার টাকা মাথার ছাদ টুকু নেই সে সোশ্যাল মিডিয়াতে আসবেই বা কি করে? এমন সময় সৃজিত মুখার্জী এগিয়ে এসেছেন।
সৃজিত জানিয়েছেন তিনি সুনীল বাবুর ফোন নাম্বার জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। ফোন নাম্বার পেলে সাধ্যমত সাহায্য অবশই করবেন। এখানেই শেষ নয়, তার এলাকার মানুষকে ওনার ছবি কিনতে অনুরোধ করেছেন। পাশে থাকার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, করোনাকালে একাধিক টলিউড সেলেব্রিটি এগিয়ে এসেছেন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। এবার সেই মতই এক অসহায় শিল্পীর পাশে দাঁড়ালেন সৃজিত মুখার্জী।