একসময় নতুন সিনেমা রিলিজ মানেই সিনেমা হল হাউসফুল। বলিউডের হিন্দি ছবি তো বটেই বাংলা ছবি দেখতেও উপচে পড়ত ভিড়। কিন্তু সম্প্রতিকালে বয়কট (Boycott) ঝড়ের শিকার হয়েছে বলিউডে। একেরপর এক ছবি রিলিজ হচ্ছে ঠিকই, তবে মুখ ফিরিয়েছেন দর্শকেরা। আর এবার বলিউডের পর টলিউড অর্থাৎ বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও বয়কটের ডাক উঠতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি ‘লক্ষী ছেলে’ (Lokkhi Chele) ছবি বয়কটের ডাকে উত্তাল হয়েছে নেটপাড়া।
অবশ্য এই প্রথম বাংলা ছবি বয়কটের শিকার হল না। সম্প্রতিকালে ‘ধর্মযুদ্ধ’ ছবি নিয়েও ব্যাপক শোরগোল হয়েছে নেটপাড়ায়। তবে এভাবে ছবি বয়কটের ডাক উঠতে একপ্রকার ক্ষুদ্ধ হয়েছেন শিল্পীরাও। লক্ষী ছেলে ছবি বয়কট নিয়েই ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন ‘অপরাজিত’ খ্যাত জিতু কামাল (Jeetu Kamal) ও শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)।
ছবির কাহিনী অনুযায়ী, সমাজকে কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস আর ধর্মীয় গোঁড়ামির মত বিষয় থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছেন তিন পড়ুয়া। আমির, শিবনাথ ও গায়েত্রী তিন জন্যেই ডাক্তারি বিভাগের শিক্ষার্থী, তাদের নিয়েই তৈরী হয়েছে গোটা ছবির গল্প। জানা যায় প্রথমে ছবিটি সেন্সর বোর্ডে আটকে গিয়েছিল কিন্তু পরে ছাড়পত্র মিলেছে।
অভিনেতা জিতু কামালের মতে, ছবি তো সেন্সর বোর্ডের থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরী বোর্ড যেখানে বিশিষ্ঠ ব্যক্তিরা রয়েছেন তারা ছাড়পত্র দিলেন। তাদের সিদ্ধান্তকে অমান্য করার সাহস আসছে কোথা থেকে?
এছাড়া অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও মুখ খুলেছেন ছবির বয়কট প্রসঙ্গ নিয়ে। শ্রীলেখার মতে, এখন সবাই হুজুগে। কেউ একজন কিছু ঠিক করছে, বাকিরা তাঁর কথাতেই চলছে। একজন শিল্পী নিজের মত করে ছবি তৈরী করলেন, সেটা দেখে তবেই বিচার করা উচিত যে ধর্ম নিরপেক্ষ কি না!
এই প্রসঙ্গে অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, বাংলার দর্শকদের মধ্যে বয়কটের ট্রেন্ড সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। ছবি চলার হলে সেটা ঠিকই চলবে। এমনকি অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ বাবু সুপ্রিয়ও অভিনয় করেছেন। জানা যায় ছবি সেন্সর বোর্ডে আটকে যাওয়র সময় নাকি তিনি হস্তক্ষেপ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে ‘ধর্মযুদ্ধ’ ছবির বয়কট ডাকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল টলি পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে। এমনকি ধর্মযুদ্ধের পর বিসমিল্লাহ ছবিও বয়কটের ডাক উঠেছে। পরিচালক জানিয়েছিলেন, ছবি না দেখেই লোকে বয়কটের ডাক তুলছে এটা মোটেই ঠিক নয়। কেউ বা কারা ইচ্ছা করেই এই ধরণের কাজ করছেন।