অভিনেতাদের জীবন ভারী অদ্ভুত হয়। কখনো মানুষই তাদের সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দেয়, আবার মানুষই তাদের টেনে নামিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতেও দুবার ভাবেনা৷ যেকোনো কারোর দিকেই আঙুল তোলার আগে নেটিজেনরা একটিবার যাচাই পর্যন্ত করেননা কাকে নিয়ে বলছেন, এবং কী বলছেন তারা। এতে অনেক ক্ষেত্রেই তারকাদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। নিজেদের আক্রোশ মেটাতে অভিনেতা অভিনেত্রীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আক্রমণ করে বসেন নেটিজেনদের একাংশ। কোথাও গিয়ে তারা ভুলেই যান অভিনেতারাও দিনের শেষে একজন মানুষ।
এই তো দিন কয়েক আগের কথা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলোধোনা করা হল টলিউডের (Tollywood) মন্টু পাইলট (Montu Pilot) সৌরভ দাসকে (Sourav Das)। ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেতা। এই খবর প্রকাশ্যে আসার ঠিক পরেই আমূল বদলে যায় অভিনেতার জীবন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেয়ে যায় সৌরভ এবং তার বোনের একটি ভিডিও।
যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় নেটপাড়ায়। অভিযোগ করা হয়, বোনের বুকে হাত দিচ্ছেন সৌরভ। এহেন নোংরা মন্তব্যের জেরে মানসিকভাবে চূড়ান্ত ভেঙে পড়েছিলেন সৌরভ সহ তার গোটা পরিবার। তার জন্মদিনের দিন তোলা কোনো একটি ভিডিওতে দেখা যায় আনন্দে বোনকে জড়িয়ে ধরেছেন অভিনেতা, আর তাই নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। একের পর এক নোংরা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যে ভরে ওঠে অভিনেতার কমেন্ট বক্স, তাকে নিয়ে চলে ট্রোল মিমের বন্যা। এমনকি তার মা,বোনকেও ছেড়ে কথা বলেনি কেউ।
ফের নিজেকে সামলে ধীরে ধীরে সোশ্যাল সক্রিয় হয়েছিলেন অভিনেতা। দিন কয়েক আগেই মা, বাবা বোনের সাথে ছবিও শেয়ার করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবারে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মন্টু পাইলট। সম্প্রতি একটি ইন্সটাগ্রাম ভিডিওতে সেকথাই জানিয়ে দিয়েছেন সৌরভ৷
ঝাড়গ্রামে তিনি বেড়াতে গিয়েছেন একটু সবুজের কাছে মিশবেন বলে। সেখান থেকেই একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি, যেখানে দেখা যাচ্ছে, বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ছে। নেপথ্যে বাজছে গান। এর সাথেই তিনি লিখলেন, ‘সম্ভবত এটা আমার শেষ পোস্ট। কয়েক দিন বাদে আবার ফিরব। তত দিনের জন্য বিদায় বন্ধুরা। সুস্থ থাকবেন, ভাল থাকবেন।’ হ্যাশট্যাগ জুড়লেন, ‘সোশ্যাল ডিটক্স’ লিখে।
View this post on Instagram
সংবাদমাধ্যমের তরফে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় হঠাৎ তার এমন সিদ্ধান্তের কারণ কি? উত্তরে সৌরভ জানান, ‘‘আমার ফেসবুক পেজে আমাকে যখন আক্রমণ করা হয়, মা-বাবা আমার হয়ে মন্তব্য না করে থাকতে পারে না। তখন তাঁদের দিকে জঘন্য ইঙ্গিত করা হয়। আমার ভাল লাগে না। মা-বাবাকে অনেক বার বারণ করেছি মন্তব্য না করতে। আমাদের মতো গণ্ডারের চামড়া নয় তাদের।ছেলের সম্পর্কে এ সব কথা মেনে নিতে পারে না তারা।’’ আর এইবার এই কাদা ছোড়াছুড়ি থেকে রেহাই পেতেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপাতত ভাবে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সৌরভ।
অভিনেতা আরও জানান, যদি দিন সাতেক পর মানসিক ভাবে সুস্থতাবোধ করেন তবেই ফের ফিরবেন তিনি ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রামে। তবে এবার ফিরলেও আর নিজে আর সেগুলো হ্যান্ডেল করবেন না সবটাই জনসংযোগ দলের হাতে ছেড়ে দেবেন।