“জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার রয়েছ দাঁড়ায়ে”! আজও ফেলুদা পড়তে বসলেই আমরা চেতনায় দেখতে পাই সৌমিত্র বাবুকেই।জীবন সংগ্রামে লড়ে চলা সেই অক্লান্ত অপু আজও বল জোগায় বেকার যুবকদের বুকে। হীরক রাজাদের গদি একাই টলিয়ে দিতে পারে উদয়ন পন্ডিতেরা। কিন্তু আজ পথের খোঁজ না পেয়ে ‘তিন ভুবনের পারেই’ চলে গেলেন অভিনেতা।
আজ সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই কেবল ভেসে উঠছে কয়েকটাই মুখ অপু, উদয়ন পন্ডিত, ফেলুদা কিংবা ‘প্রাক্তন’ বা ‘বেলাশেষে’ ছবির কিছু দৃশ্য।
১৯৩৫ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন কলকাতার মির্জাপুর স্ট্রীটে৷ এরপর তার শৈশব কাটে নদীয়ার কৃষ্ণনগরে। এরপর ১৯৫৬ সালে তাঁর আলাপ হয় স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে। সত্যজিতের মানসপুত্র সৌমিত্র অভিনয় জগতে পা রাখেন ১৯৫৯ সালে ‘অপুর সংসার’ ছবিতে অপুর ভূমিকায় অভিনয় করে। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় মোট ১৪ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। আর সেই সব ছবি আজও বাংলা এবং বাঙালির গর্ব হয়ে চিরকালীন হয়ে থেকেছে।
আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে অপুর সংসার ছবির একটি দৃশ্য যেখানে অভিনেতা বলছেন, “কিন্তু সেইটেই শেষ কথা নয়, সেটি ট্র্যাজেডিও নয়। সে মহৎ কিছু করছেনা, তার দারিদ্র যাচ্ছেনা, তার অভাব মিটছেনা কিন্তু তা সত্ত্বেও সে জীবন বিমুখ হচ্ছেনা। সে পালাচ্ছেনা, এস্কেপ করছেনা। সে বাঁচতে চাইছে, সে বলছে বাঁচার মধ্যেই সার্থকতা। বাঁচার মধ্যেই আনন্দ”।
কিন্তু অভিনেতার বাঁচার আনন্দে আজ চিরদিনের মত ভাটা পড়ল। প্রসঙ্গত, আজ বেলা ১২ টা ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনয় জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। স্ত্রী দীপা এবং দুই সন্তান সৌগত ও পৌলমীকে একা ফেলেই চলে গেলেন অভিনেতা। দীপাবলির এত আলো উচ্ছ্বাসের মাঝেও যেন নিমেষে ফিকে হয়ে গেল চারিদিক। উত্তমের পর বাঙালির গর্ব ছিলেন অভিনেতা, আজ ‘বেলাশেষে’ ছেড়ে গেলেন তিনিও।