গত ৩১ মে গানের দুনিয়ায় নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। কলকাতায় পারফর্ম করতে এসে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছিল জনপ্রিয় গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে’র (KK)। কলকাতার নজরুল মঞ্চে (Nazrul Mancha) নিজের জীবনের শেষ অনুষ্ঠানটি করেছিলেন ‘পল’, ‘ইয়ারো দোস্তি’-সহ একাধিক সুপারহিট গানের গায়ক।
কেকে’র মৃত্যু শহর কলকাতায় বুকে অনেক বড় আঘাত এনেছিল। শহরের অন্যতম নামি এবং ঐতিহ্যবাহী অডিটোরিয়াম, নজরুল মঞ্চকে নিয়েও একাধিক অব্যবস্থার কথা সামনে এসেছিল। যা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল সামাজিক মাধ্যম। রুপম ইসলামের স্ত্রী পর্যন্ত নজরুল মঞ্চের অব্যবস্থা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তবে কেকে’র মৃত্যুর পর সেখানে সুষ্ঠুভাবে পারফর্ম করে গেলেন বলিউডের আর এক জনপ্রিয় গায়ক সোনু নিগম (Sonu Nigam)। সোনুর অনুষ্ঠানে অব্যবস্থার কোনও স্থানই ছিল না। যেন নিজের প্রাণ দিয়ে নজরুল মঞ্চকে বদলে দিয়ে গেলেন কেকে।
বলিপাড়ার জনপ্রিয় গায়ক কেকে’র মৃত্যুর পর একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। সেদিন যদি অডিটোরিয়ামে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় না হতো, সব এসিগুলি যদি ঠিক করে চলত, অন্ততপক্ষে নজরুল মঞ্চে যদি একটা অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসক থাকতেন, তাহলে হয়তো কেকে’র এই করুন পরিণতি হতো না! কিন্তু গায়কের মৃত্যুর পরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। লালবাজারের তরফ থেকে তৈরি করা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট SOP (কেকে’র মৃত্যুর পর এটি তৈরি করা হয়েছে)। সেটি মেনেই সোনুর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
সোনুর অনুষ্ঠানে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। নির্দিষ্ট টিকিটের একটিও বেশি টিকিট বিক্রি করা হয়নি। ভিড় যাতে না হয়, সেদিকে কড়া নজর ছিল। পাশাপাশি কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তা যাতে এড়ানো যায়, সেই জন্য নজরুল মঞ্চে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স এবং দমকলের গাড়িও উপস্থিত ছিল। এই সুষ্টু আয়োজনের মধ্যে ভালোভাবে গান গেয়ে যান সোনু নিগম। শুধু তাই নয়, বলিপাড়ার এই জনপ্রিয় গায়ক যে কলকাতায় আসছেন, সেই বিষয়েও অনেকের কাছে খবর ছিল না।
গত ৩১ মে নজরুল মঞ্চে পারফর্ম করেছিলেন কেকে। সেদিন অব্যবস্থা একেবারে চরমে উঠেছিল। যেমন ছিল মাত্রাতিরিক্ত ভিড়, তেমনই ছিল গরম। ভিড়ের চাপে এসি ঠিকভাবে কাজ করছিল না। দরদর করে ঘামছিলেন গায়ক। শেষ পর্যন্ত লাইট নিভিয়ে দিতে বলেন কেকে। এসবের মাঝেই পারফর্ম করে ফেরার সময় গাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর হোটেলে গিয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। কেকে’কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।