সাধারণত আমরা টাকা (Money) দিয়েই জিনিসপত্র কিনে অভ্যস্ত। খাবার জিনিস থেকে শুরু করে দৈনন্দিন চাহিদার ভিত্তিতে মাছের বাজার, শাক-সবজি, পোশাকের ইত্যাদি সবই টাকার বিনিময়ে কিনতে পাওয়া যায়। শুধু আমাদের দেশ বলে নয় পৃথিবীর যে কোনো দেশেই এইভাবে চলে বেচা কেনা। কিন্তু যদি বলি টাকা দিয়েই কেজি দরে পাওয়া যায় টাকা। কি অবাক হলেন নাকি! শুনতে অবাক হলেও এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে রাস্তার পাশে লাইন দেখতে পাওয়া যাবে টাকার দোকান (Money Shop)।
হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, রাস্তার ধারে লাইন দিয়ে বস্তা-বস্তা টাকা নিয়ে লোক বসে আছে! আপনার কাছে হয়তো ব্যাপারটা হয়তো আজগুবি গল্প মনে হতে পারে। কিন্তু ব্যাপারটা কিন্তু একেবারেই মিথ্যা নয় বরং সত্যি। টাকার বিনিময়ে যেমন জিনিসপত্র কেনা যায় ঠিক তেমনি এমন একটি জায়গা আছে, যেখানে রাস্তার পাশের বাজারে বস্তা-বস্তা টাকা কিনতে পাওয়া যায়। আর মানুষও সেই টাকা লাইন দিয়ে কেনে।
অবিশ্বাস্য এই টাকার বাজার রয়েছে আফ্রিকার ছোট্ট একটি দেশ সোমালিল্যান্ডে (Somaliland) রয়েছে। সেখানে কেজি দরে বিক্রি হয় টাকা। এবার আপনি ভাবছেন তাহলে নিশ্চই জাল টাকা, কিন্তু সেই টাকা জাল নয়। একেবারে আসলই টাকাই কেজি দরে বিক্রি হয় সেই বাজারে। সেই টাকা দিয়েই মানুষ নিজের চাহিদা মত জিনিসপত্র কেনে। বস্তা বস্তা নোট খোলা রাস্তায় দিন-দুপুরে ক্রেতারা কিনে নিয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল কেন এমনটা হয়?
এর জন্য দায়ী হল সোমালিয়ার আর্থিক পরিকাঠামো বা বলা যেতে পারে দেশের কিছু হটকারীভাবে নেওয়া অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত। সোমালিয়ার মুদ্রাকে ‘শিলিং (Somali Shiling)’ বলা হয়। এই শিলিংয়ের দাম একসময় হু হু করে কমে যায় যার ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ২০০০ সালে এক ডলারের দাম ছিল ১০ হাজার শিলিং তাহলেই ভেবে দেখুন কি অবস্থা সেখানকার টাকার। বর্তমানে সেখানে ১ ডলারের দাম ৫৮৪ শিলিং।
বর্তমানে সোমালিল্যান্ডে টাকার দাম এতই কম যে সেখানে টাকা জলের দরেই বিক্রি হয়। এমনকি আমাদের দেশের মত সেখানে চোর ডাকাতেরা টাকা চুরি করে না। সেখানে হয়তো এক কেজি সবজি কিনতে গেলে গুনতে হয় বেশ কয়েক হাজার টাকা। তাই রাস্তার পাশে বস্তা বস্তা টাকা বিক্রি করতে বসলেও কোনো অসুবিধাই হয় না। সোমালিয়াতে যখন পর্যটকেরা যায় সেখানে এই অদ্ভুত জিনিস দেখে তারা নিছক মজার চলেই কিনে আনে সোমালিয়ার টাকা শিলিং।