বাংলা ছবি ইন্ডাস্ট্রির হাল ধরে আবারো জাতীয় স্তরে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছে অনীক দত্ত (Anik Dutta) পরিচালিত ‘অপরাজিত’ (Aparajito) ছবিটি। ছবিতে অবিকল সত্যজিৎ রায়কে (Satyajit Roy) তুলে ধরেছেন পরিচালক। সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন অভিনেতা জিতু কমল (Jeetu Kamal)। হিন্দি ও দক্ষিণী ছবির ভিড়ে হাউস ফুল হয়েছে একেরপর এক সিনেমা হল, মুক্তি পাওয়ার ২ সপ্তাহেই বক্স অফিস কালেকশন হয়েছে ৪ কোটি। কিন্তু এতটা সাফল্য পাওয়ার পরেও বিতর্কে ‘অপরাজিত’।
টলিউডের বড়মাপের কোনো তারকা ছাড়াই এমন সাফল্য পেয়েছে ছবিটি। ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শকেরা। সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালি ছবি কিভাবে তৈরী হয়েছিল সেই কাহিনীকেই তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। কিন্তু এবার ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সরব হলেন সত্যজিত রায়ের ‘পথের পাঁচালি’ ছবির দুর্গার চরিত্রের অভিনেত্রী উমা দাশগুপ্তর মেয়ে শ্রীময়ী সেন রাম (Uma Dasgupta Daughter Sreemoyee Sen Ram)।
সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট করে নিজের অভিযোগের কথা প্রকাশ্যে এনেছেন উমা দাশগুপ্ত কন্যা শ্রীময়ী। মূলত ছবির একটি দৃশ্যকে নিয়েই তাঁর অভিযোগ। দূর্গা চরিত্রে কিভাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল উমাকে সেটাই ভুল ভাবে দেখানো হয়েছে ছবিতে। সেই নিয়েই একটি বিস্তৃত পোস্ট লিখেছেন তিনি।
শ্রীময়ী লিখেছেন, ‘আজ অপরাজিত দেখলাম। অনেক আসল পথের পাঁচালির স্মৃতি এল মনে। আমি পরিচালকের চেষ্টার প্রশংসা করি সাথে জিতু কমলের অসাধারণ অভিনয় ও লুকেরও প্রশংসা করি। তবে আমি একটা জিনিস তুলে ধরতে চাই। আমার মা (উমা দাশগুপ্ত) বরাবরই স্কুলের থিয়েটারে অভিনয় করতেন। আর মায়ের স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের পরিচিত। তাঁকে সত্যজিৎ রায় অনুরোধ করেছিলেন এমন একটি অভিনেত্রী খুঁজে দেওয়ার জন্য যে দুর্গার চরিত্রে অভিনয় করতে পারবে’।
এরপর তিনি আরও লেখেন, ‘ পরিবারের আরও অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে এক বৈঠকে সত্যজিৎ রায় সর্বজয়ার চরিত্রের অভিনেত্রী করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে আমার মায়ের মিল খুঁজে পান। এ নিয়ে সেই সময় অনেক পত্রিকায় লেখালিখিও হয়েছিল। কিন্তু দাদু বেশ রক্ষণশীল ধারার মানুষ হওয়ায় প্রথমে রাজি হননি। পরে মাকে অভিনয়ের জন্য অনুমতি দেন, তবে কোনো পারিশ্রমিক তিনি নেননি’।
অতীতের আসল তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, ‘কিন্তু এই ছবিতে দেখানো হয়েছে যে অপরাজিত রায়ের বাড়িতে একটি মেয়েকে নিয়ে জেওয়া হয়েছে। জেক প্রথম পছন্দ হয়নি তাঁর। এরপর স্ত্রী বিমলা তাকে একটি শাড়ি পরিয়ে সামনে নিয়ে এলে অপরাজিত দূর্গা চরিত্রের জন্য বেছে নেন তাকে’।
উমা দাশগুপ্ত কন্যা শ্রীময়ীর মতে, ‘এই সামান্য তথ্য হয়তো সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয় সকলের কাছে। এমন একটা বড় সফল সিনেমার ক্ষেত্রে সেটা হয় না। তবে আমার মনে হল যে পরিচালকের হয়তো এটা নিয়ে আরও একটু গবেষণা করা উচিত ছিল’। শ্রীময়ীর মন্তব্যে প্রকাশ্যে আসার পর অবশ্য নেটিজেনদের একাংশ তাঁর পক্ষে গেলেও কিছুজনের মতে পরিচালক এটুকু স্বাধীনতা পেতেই পারেন।