• Srabanti Chatterjee Viral Video শ্রাবন্তী
  • অনুরাগের ছোঁয়াঅনুরাগের ছোঁয়া
  • নুসরত জাহান নুসরত
  • ফুলকিফুলকি
  • শুভশ্রীশুভশ্রী
  • ইচ্ছে পুতুলইচ্ছে পুতুল
  • নিম ফুলের মধুনিম ফুলের মধু
  • কার কাছে কইকার কাছে কই

প্রেমিক মানিক! সত্যজিৎ রায়ের প্রেম কাহিনি হার মানাবে যেকোনো বলিউডের প্রেমের ছবিকেও

আজ ২রা মে, আজ ‘রে ডে’। আজ সত্যজিৎ রায়ের ১০০তম জন্মদিন। বাংলার রুপোলি পর্দাকে একের পর এক জনপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন যিনি, সেই মানিকবাবুর ‘রিয়েল-লাইফ’ (Real Life) গল্প যে ‘রিল-লাইফ’ (Reel Life)-এর থেকে কোনো অংশে কম নয়, তা স্বীকার করে নেন যে কেউই! দীর্ঘ আটবছরের প্রেমের পর কিভাবে চুপিসারে বিবাহ সেরে দুই পরিবারের সম্মতি জোগাড় করেন সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) ওরফে মানিক ও বিজয়া রায় (Bijaya Ray), তা জেনে শিহরিত হবেন যেকোনো চলচ্চিত্রপ্রেমী।

প্রত্যহ গান শোনার মধ্য দিয়ে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানো শুরু করেন সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া মানিক ও বিজয়া। ১৯৪০-এর দশকে বাঙালি সমাজে প্রেম করে বিবাহের ব্যাপারটা এতটা জলভাত ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই দুই পরিবারকে মানিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে রীতিমত সমস্যার সম্মুখীন হন এই যুগল। যদিও পরবর্তীতে কিভাবে সকল বাধাবিপত্তি কাটিয়ে সুখের সংসারে পা দেন মানিক-বিজয়া, সে গল্প হার মানাবে যেকোনো বলিউডি প্রেমের ছবিকে!

   

সত্যজিৎ রায়,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন,টলিউড,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনের ১০০ বছর,Satyajit ray,Tollywood,satyajit ray birthday,bijaya ray,বিজয়া রায়

টলিউডের পুরোনো সদস্যদের থেকে বক্তব্য অনুযায়ী, বিজয়ার থেকে বয়সে বেশ ছোটো হওয়ার পাশাপাশি একে-অপরের দূরসম্পর্কের আত্মীয় ছিলেন সত্যজিৎ ও বিজয়া। স্বভাবতই সেইসময়ে বিয়ের তিলমাত্র সম্ভাবনাও ছিল না। এরপরেই তাঁরা কখনও বিবাহ না করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এর মাঝেই ছায়াছবির জগতে পা দেন বিজয়া। মুম্বই চলে যান সত্যজিতের তৎকালীন প্রেমিকা। আর এরপরেই টনক নড়ে মানিকের। জানা যায়, প্রেমপত্র লেখার পাশাপাশি প্রেমিকার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বারেবারেই নাকি মুম্বই যেতেন এই অস্কারজয়ী পরিচালক।

সত্যজিৎ রায়,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন,টলিউড,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনের ১০০ বছর,Satyajit ray,Tollywood,satyajit ray birthday,bijaya ray,বিজয়া রায়

অবশেষে একে-অপরের মায়াজালে আবদ্ধ হন মানিক-বিজয়া। বিবাহ না করার সমস্ত রকম পরিকল্পনা ভেস্তে মুম্বই আদালতে নিজেদের সম্পর্ককে আইনত স্বীকৃতি দান করেন তাঁরা। ১৯৪৯ সালের ২০শে অক্টোবর বিজয়ার বোনের বাড়িতে গাঁটছড়া বাঁধেন মানিক-বিজয়া। বিয়ের ওই ছোট্ট অনুষ্ঠানেও সস্ত্রীক উপস্থিত হন বিখ্যাত অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কাপুর (Prithviraj Kapoor)।

সত্যজিৎ রায়,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন,টলিউড,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনের ১০০ বছর,Satyajit ray,Tollywood,satyajit ray birthday,bijaya ray,বিজয়া রায়

পরবর্তীতে নিজেদের বৈবাহিক জীবনের নানা রহস্যের ব্যাপারে খোলাখুলি জানান বিজয়া। লুকিয়ে বিয়ে করার কারণে লোকসমাজে একসাথে থাকতে না পারার কষ্টের কথা জানান বিজয়া। যদিও অবশেষে সকলের সামনে আসে বিজয়া-মানিকের বিয়ের ঘটনাটি। জানা যায়, ‘অপু ট্রিলজি’ (Apu Trilogy) খ্যাতি পাওয়ার পরই বন্ধুবান্ধব ও পরিবারবর্গের কাছে নিজ বৈবাহিক জীবনের সম্পর্কে খোলসা করেন রে। আর সেক্ষেত্রে তাঁকে কৌশলগত অবস্থান থেকে নানাভাবে সাহায্য করেন পারিবারিক বন্ধু নশো বাবু (Nosho Babu)।

নশো বাবুর বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে পরিবারের সামনে সত্যজিৎবাবু সদর্পে ঘোষণা করেন যে বিজয়া ছাড়া তিনি আর কাউকে বিবাহ করতে পারবেন না। সত্যজিতের মায়ের বোঝানোতেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে ১৯৪৯-এর ৩রা মার্চ পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মানিক-বিজয়া। বাঙালি হিন্দুদের সকলরকমের আচার-আচরণ মেনেই সম্পন্ন হয় বিবাহ।

সত্যজিৎ রায়,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন,টলিউড,সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনের ১০০ বছর,Satyajit ray,Tollywood,satyajit ray birthday,bijaya ray,বিজয়া রায়

সত্যজিৎ ঘনিষ্ঠদের মতে, প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনে যেভাবে একজন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নারী থাকেন, সেভাবেই ‘পথের পাঁচালি’ (Pather Panchali’-র সময় থেকে মানিকের সঙ্গে ছায়ার মত থেকেছেন বিজয়া। এমনকি একজন খ্যাতনামা লেখক হয়ে ওঠার আগে নিজের সকল পাণ্ডুলিপি বিজয়াকে দিয়ে ঠিক করিয়ে নিতেন সত্যজিৎ। ২০১৫-এ মৃত্যুর আগে বিজয়া জানান, “আমার পরামর্শের প্রায় ৯০% মানিক নিজের লেখাতে প্রয়োগ করেছিলেন।”